সিলেট-৩ আসনে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন প্রয়াত সাংসদ মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর স্ত্রী ফারজানা সামাদ চৌধুরী। মনোনয়ন না পেয়ে বেশ কিছুদিন চুপ থাকার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে থাকার কথা জানিয়েছেন। তবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রার্থীদের সমর্থন নিয়ে ‘বিতর্ক’ উঠলেও এ নিয়ে তিনি কোনো কথা বলেননি।
আগামী ২৮ জুলাই ইভিএম পদ্ধতিতে দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জের একাংশ নিয়ে গঠিত সিলেট–৩ আসনে ভোট গ্রহণ হবে। এখানে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাবিবুর রহমান। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য (সদ্য বহিষ্কৃত) শফি আহমদ চৌধুরী।
দলীয় মনোনয়ন ঠিক হওয়ার পর শফি আহমদ চৌধুরী দাবি করেছিলেন, মুঠোফোনে কল করে তাঁর প্রতি শুভকামনা জানিয়েছেন ফারজানা সামাদ চৌধুরী। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান বলেন, শফি চৌধুরী সঠিক দাবি করেননি। মূলত ফারজানা সামাদ চৌধুরী আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষেই আছেন।
সমর্থন নিয়ে দুই প্রার্থীর পাল্টাপাল্টি দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এত দিন প্রকাশ্যে কোনো কথাই বলেননি ফারজানা সামাদ চৌধুরী। আজ সোমবার বেলা একটার দিকে তিনি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। তবে সেখানে দলীয় প্রার্থীর ব্যাপারে কোনো কথাই উল্লেখ করেননি।
স্ট্যাটাসের ফারজানা সামাদ লিখেছেন, ‘আমার স্বামী জনাব মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী এমপির মৃত্যুতে সিলেট-৩ (ফেঞ্চুগঞ্জ-দক্ষিণ সুরমা-বালাগঞ্জ)–সহ দেশ-বিদেশের সর্বস্তরের জনগণ উনার প্রতি যে অফুরন্ত ভালোবাসার প্রকাশ দেখিয়েছেন, তাতে আমি সত্যিই অভিভূত। এলাকার সমস্ত জনগণের সহমর্মিতা আমাকে আপ্লুত করেছে। কী ভাষায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করব, আমি জানি না।’
স্বামীর অসমাপ্ত উন্নয়নকাজ সমাপ্ত করতে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচন করার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন উল্লেখ করে ফারজানা আরও লিখেছেন, ‘আপনারা জানেন এ ক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। মনোনয়ন না পেলেও অতীতে আমার মরহুম স্বামী যেভাবে আপনাদের সঙ্গে ছিলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আগামীতেও আমি আপনাদের সঙ্গে থাকব ইনশা আল্লাহ।’
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ফারজানা সামাদ চৌধুরী তাঁর স্ট্যাটাস দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। দলীয় প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘স্বামীর মৃত্যুর কারণে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী ৪ মাস ১০ দিন বাসার বাইরে বেরোনোর কোনো নিয়ম নেই। এই সময়ের মধ্যে আমার নিজের বাড়ি আর স্বামীর বাড়ি ছাড়া কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই।’
গত ১১ মার্চ করোনায় সংক্রমিত হয়ে সিলেট-৩ আসনের আওয়ামী লীগের সাংসদ মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী মারা যান। ১৫ মার্চ আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনে ছয়জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিলেও চারজনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহা. ইসরাইল হোসেন।