রাজধানীর মুরাদপুরের একটি বাসা থেকে মা-বাবা ও মেয়ের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই পরিবারের বড় মেয়েকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করেছে কদমতলী থানা পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের কারণ হিসেবে মাহজাবিন পুলিশকে জানান, তাদের দুই বোনকে দিয়ে অনৈতিক কাজ করাতেন তার মা মৌসুমী ইসলাম। সেই রাগ থেকেই তাদের হত্যা করা হয়।
পুলিশের প্রথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাহজাবিন আরো বলেন, তার বাবা মাসুদ রানা ১২ বছর ধরে বিদেশে ছিলেন। সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন। কিন্তু বাবা বিদেশে থাকাকালীন তার মা মৌসুমী তাকে ও তার ছোট বোনকে দিয়ে অনৈতিক কাজ করাতেন। এরই মধ্যে মাহজাবিনের বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু তার মায়ের কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়নি। ছোট বোনকে দিয়েও চালাচ্ছিলেন সেই অনৈতিক কাজ। বাধ্য হয়ে মাহজাবিন তার ছোট বোনকে তার বাসায় নিয়ে যান। সম্প্রতি তার মা ছোট বোনকে নিয়ে আসেন এবং আবারো একই কাজ করতে বাধ্য করছিলেন। বিষয়টি জানতে পেরে মাহজাবিন তার মাকে নিষেধ করেন এবং সেটি বন্ধেরও অনুরোধ করেন; কিন্তু মা শুনছিলেন না তার কথা।
তিনি পুলিশকে আরো জানান, তার মা মৌসুমী ইসলাম দুই বোনকে অনৈতিক কাজে বাধ্য করার বিষয়টি বাবা জানলেও কোনো ব্যবস্থা নেননি তিনি।
মাহজাবিনের বরাত দিয়ে পুলিশ জনায়, শুক্রবার রাতে তিনি স্বামী ও তার মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়িতে আসেন। এরপর রাতে খাবারের সাথে বাসার বৃদ্ধা দাদী ছাড়া সবাইকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেন। একপর্যায়ে তারা অচেতন হয়ে পড়লে তিনি বাবা, মা ও বোনের হাত-পা বেঁধে তাদের হত্যা করেন। এরপর সকালে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করেন।
এ ঘটনায় নিহতরা হলেন বাবা মাসুদ রানা (৫০), মা মৌসুমী ইসলাম (৪০) ও ছোট মেয়ে জান্নাতুল (২০)।
এ ছাড়া ওই বাসা থেকে মাহজাবিনের স্বামী শফিকুল ইসলাম অরণ্য ও তার চার বছরের মেয়ে মারজান তাবাসসুম তৃপ্তিকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে শিশুটিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং অরণ্যকে মিডফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
কদমতলী থানার পরিদর্শক (অপারেশন) বলেন, এ ছাড়াও হত্যার পেছনে আর কোনো কারণ রয়েছে কি-না তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি।
এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে নিশ্চিত করেছেন কদমতলী থানার সাব ইন্সপেক্টর এস এম আবু কালাম।
কদমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর জামাল উদ্দিন বলেন, মাহজাবিনের স্বামী ও সন্তান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।