জল্লাদ শাহজাহানের হাতেই সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে (১ম) প্রথমবারের মতো স্ত্রী হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সিরাজুল ইসলাম সিরাজের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) রাত ১১টায় তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ফাঁসি কার্যকরের আগে সিরাজের ইচ্ছা অনুযায়ী পরিবারের সঙ্গে দেখা করার ব্যবস্থা করে কারা কর্তৃপক্ষ। ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার আগে সিরাজ শান্ত ছিলেন বলে কারা সূত্র জানায়।
সিরাজ হবিগঞ্জের রাজনগর কবরস্থান এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে। রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষার আবেদন করলেও তা মঞ্জুর হয়নি। কারাগারের নিয়ম অনুযায়ী ফাঁসির মঞ্চে তোলার আগে সিরাজকে গোসল করানো হয়। রাত ১০টা ১৫ মিনিটে তাকে তওবা পড়ানো হয়। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিকাল থেকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারসহ আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিলট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মঞ্জুর আলম। তিনি বলেন, স্ত্রীকে হত্যার দায়ে সিরাজুল ইসলাম সিরাজের ফাঁসির আদেশ দেন আদালত। রাত ১১টায় সিরাজের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
কারা সূত্র জানায়, পারিবারিক বিরোধের জেরে স্ত্রী সাহিদা আক্তারকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন সিরাজ। এ ঘটনায় হবিগঞ্জ থানায় ২০০৪ সালের ৭ মার্চ মামলা করেন সাহিদার বড় ভাই।
২০০৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ সিরাজের ফাঁসির আদেশ দেন। সেই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
রায়ের বিরুদ্ধে সিরাজ হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০১২ সালের ১ আগস্ট আপিলে আগের রায় বহাল রাখেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে পিটিশন দেওয়া হয়। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ ২০২০ সালের ১৪ অক্টোবর সিরাজের আপিল বাতিল করে ফাঁসি বহাল রাখেন। এরপর সিরাজ প্রাণভিক্ষা চেয়ে আবেদন করলে গত ২৫ মে রাষ্ট্রপতি তার আবেদন নামঞ্জুর করেন।
কারা সূত্র জানায়, সিরাজের ফাঁসি কার্যকরের জন্য ১৪ জুন কাশিমপুর কারাগার থেকে জল্লাদ শাহজাহানকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়। বিএনপি নেতা সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরী, জামায়াত নেতা আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, কাদের মোল্লাসহ কয়েকজনের ফাঁসি কার্যকর শাহজাহানের হাতেই হয়।