ব্রেকিং নিউজ
Home / ধর্ম / সিলেটের দক্ষিণ সুরমাসহ ৫০ মডেল মসজিদ আজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

সিলেটের দক্ষিণ সুরমাসহ ৫০ মডেল মসজিদ আজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

 

দেশের ৫০ উপজেলায় দৃষ্টিনন্দন ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুন) উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবন থেকে একযোগে আধুনিক ও সুসজ্জিত এই মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করবেন। এই প্রকল্পের আওতায় সারাদেশের ৫৬০ মসজিদ নির্মান করার প্রজেক্ট হাতে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথম দফার ৬০ টি মডেল মসজিদ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রংপুর, সিলেট ও খুলনায় ভার্চুয়ালী সংযুক্ত থাকবেন এই প্রকল্পের অন্যতম পরিকল্পক সরকার প্রধান শেখ হাসিনা। এই মসজিদগুলোতে ১৩টি বিশেষ সুবিধার মধ্যে মসজিদে হজ্জ যাত্রীদের প্রশিক্ষণসহ পবিত্র হজ্ব পালনের জন্য ডিজিটাল নিবন্ধনের ব্যবস্থা বিশেষ উল্লেখযোগ্য।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই উদ্যোগকে বিশ্বে দৃষ্টান্ত বলে দাবি করে প্রজেক্ট ডিরেক্টর নজিবুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ ও যত্নশীল নির্দেশনায় মসজিদগুলোতে এসব সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় হজ্জ যাত্রীদের দূর্ভোগ দূর করতে হজ্জ নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে মডেল মসজিদগুলোতে।

সুবিধাগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে, নারী ও পুরুষদের পৃথক ওজু ও নামাজ আদায়ের সুবিধা, প্রতিবন্ধি মুসল্লীদের টয়লেটসহ নামাজের পৃথক ব্যবস্থা, ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, ইসলামিক লাইব্রেরী, অটিজম কর্ণার, ইমাম ট্রেণিং সেন্টার, ইসলামিক গবেষণা ও দীনি দাওয়া কার্যক্রম, পবিত্র কুরআন হেফজখানা, শিশু ও গণশিক্ষায় ব্যবস্থা, দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আবাসন ও অতিথিশালা, মরদেহ গোসল ও কফিন বহনের ব্যবস্থা, ইমামের প্রশিক্ষণ, ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসনসহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে কর্মকর্তা কর্মচারীদের অফিসের ব্যবস্থা।

এসব মসজিদ থেকে আরও যেসব সুবিধা পাওয়া যাবে: ইসলামি নানা বিষয়সহ প্রতি বছর ১ লাখ ৬৮ হাজার, শিশুর প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা। ২ হাজার ২৪০ জন দেশি-বিদেশি অতিথির আবাসন ব্যবস্থাও গড়ে তোলা হবে প্রকল্পের আওতায়। উপকূলীয় এলাকায় মসজিদগুলোতে আশ্রয়কেন্দ্র হিসাবে নীচতলা ফাঁকা থাকবে। অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত দৃষ্টিনন্দন এ সকল মসজিদগুলো নির্মাণে জেলা সদর ও সিটি করপোরেশন এলাকায় নির্মানাধীন প্রতিটি মসজিদে একসাথে ১২০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবে। উপজেলা ও উপকূলীয় এলাকার মডেল মসজিদে একত্রে ৯০০ মুসল্লির নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা থাকবে। এসব মসজিদে সারাদেশে মসজিদে প্রতিদিন ৪ লাখ, ৯৪ হাজার ২০০ জন পুরুষ, ও ৩১ হাজার ৪০০ জন নারী একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবে।

লাইব্রেরি সুবিধার আওতায় প্রতিদিন ৩৪ হাজার পাঠক একসঙ্গে কোরআন ও ইসলামিক বই পড়তে পারবেন। ইসলামিক বিষয়ে গবেষণার সুযোগ থাকবে ৬ হাজার, ৮ শ জনের। ৫৬ হাজার মুসল্লি সবসময় দোয়া মোনাজাতসহ তাসবিহ পড়তে পারবেন।

সাভার মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ইমাম হাফেজ মাওলানা মারুফ বিল্লাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এটি সাভারবাসীর জন্য আশির্বাদ। ইসলামের মূল মেসেজ এখন থেকে প্রচার করা যাবে। বিভিন্ন যায়গা মসজিদ মাদ্রাসা আছে, কিন্তু এ ধরনের মডেল মসজিদ থাকার দরকার ছিল। এই মসজিদ উপজেলার সেন্ট্রাল হিসেবে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।

ইসলামিক ফাউণ্ডেশন সাভার উপজেলার তত্ত্বাবধায়ক মাওলানা আবু সাইদ বলেন, সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে এই দৃষ্টিনন্দন মসজিদের মাধ্যমে মানুষ নামাজে আকৃষ্ট হবে৷ পাশাপাশি সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ বাল্যবিবাহ রোধে এই সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

যে ৫০টি উপজেলায় মডেল মসজিদ উদ্বোধন করা হবে সেগুলো হলো— ঢাকার সাভার, ফরিদপুরে মধুখালী, সালথায়, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া ও কুলিয়ারচর, মানিকগঞ্জের শিবালয়, রাজবাড়ী সদর, শরীয়তপুর সদর ও গোসাইরহাট, বগুড়ার সারিয়াকান্দি, শেরপুর ও কাহালু, নওগাঁর সাপাহার ও পোরশা, সিরাজগঞ্জ জেলা সদর ও উপজেলা সদর, পাবনার চাটমোহর, রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও পবা, দিনাজপুরের খানসামা ও বিরল, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ ও উপজেলা সদর, রংপুর জেলা সদর, মিঠাপুকুর, উপজেলা সদর, পীরগঞ্জ, বদরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর, নোয়াখালীর সুবর্ণচর, ময়মনসিংহের গফরগাঁও ও তারাকান্দা, চট্টগ্রাম জেলা সদর, লোহাগড়া, মিরসরাই ও সন্দ্বীপ, জামালপুরের ইসলামপুর ও উপজেলা সদর উপজেলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর ও বিজয়নগরে, ভোলা সদর, সিলেটের দক্ষিণ সুরমা, কুমিল্লার দাউদকান্দি, খাগড়াছড়ির পানছড়ি, কুষ্টিয়া সদর, খুলনার জেলা সদর, চাঁদপুরের কচুয়া, ঝালকাঠির রাজাপুর এবং চুয়াডাঙ্গা সদর।