রাজধানীর দক্ষিণখানে মসজিদের সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে নিখোঁজ হওয়া যুবকের ছয় টুকরা মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যাকাণ্ডে নিহত আজহারের স্ত্রী আসমা আক্তারকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। ইমামের সঙ্গে আসমার পরকীয়ার সম্পর্কের জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে দাবি করছে র্যাব।
র্যাবের দাবি, আজহারের স্ত্রী আসমা আক্তারই ছিলেন এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী। তার নির্দেশেই স্বামী আজহারকে কুপিয়ে হত্যা করেন দক্ষিণখানের সরদার বাড়ি জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুর রহমান। ইমামের সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্কের জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।
আজ বুধবার র্যাব সদরদপ্তরে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, ‘নিহত আজহারের স্ত্রী আসমাকে রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর থেকে মঙ্গলবার রাতে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য আমরা পেয়েছি। আজহারের স্ত্রী এ হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী। মসজিদের ইমাম আব্দুর রহিমের সঙ্গে আসমার প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়।’
র্যাব কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আজহারকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য মসজিদের ইমামকে ভাড়াটে কাউকে দিয়ে হত্যা করার জন্য বলেন আসমা। কিন্তু মসজিদের ইমাম ভাড়াটে কাউকে দিয়ে হত্যা না করিয়ে নিজেই হত্যা করেন।’
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন,’নিহত আজাহারের সঙ্গে দক্ষিণখানের সরদার বাড়ি জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুর রহমানের পারিবারিক সম্পর্কের মতো ছিল। আজহার-আসমা দম্পতির চার বছরের শিশু সন্তানকে আরবি পড়াতেন ইমাম আব্দুর রহমান। নিহত আজহারকেও আরবি পড়াতেন তিনি। সেই সুবাদে গত ৫-৬ মাস ধরে তাদের বাসায় আসা যাওয়া ছিল ইমামের। বাসায় আসা-যাওয়ার এক পর্যায়ে আজহারের স্ত্রী আসমার সঙ্গে মসজিদের ইমামের অবৈধ সম্পর্ক তৈরি হয়। অবৈধ সম্পর্ক বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে আসমা আক্তারই আজহারকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে।’
র্যাব জানায়, গত ১৯ মে রাতে আজহারকে মসজিদে ডেকে নেন ইমাম রহিম। সেখানেই ছুরি দিয়ে হত্যা করা হয় আজহারকে। এরপর ইমাম আব্দুর রহিমের শয়নকক্ষে আজহারের মরদেহ ছয় খণ্ড করে সেপটিক ট্যাংকের লুকিয়ে রাখা হয়।
এর আগে, রাজধানীর দক্ষিণখানে মসজিদের সেপটিক ট্যাংক হতে নিখোঁজ যুবকের খন্ডিত লাশ উদ্ধারসহ হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা মসজিদের ইমাম মো. আব্দুর রহমানকে (৫৪) গ্রেপ্তার করে র্যাব-১।
গত ২৪ মে আনুমানিক রাত ৯টায় র্যাব-১ এর গোয়েন্দা দল গোপন সূত্রে জানতে পারে সরদার বাড়ি জামে মসজিদের সিড়িতে রক্তের দাগ এবং সেপটিক ট্যাংক হতে তীব্র দুর্গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১ এর গোয়েন্দা দল ছায়া তদন্ত শুরু করলে এলাকাবাসীর নিকট জানতে পারে, নিহত আজহার (৩০) বিগত ১৯ মে ২০২১ তারিখ থেকে নিখোঁজ ছিলেন।