ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে স্বামী মারুফকে হত্যার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যায় জড়িত সন্দেহে স্ত্রী রিনা আক্তার উর্মি (২৭) ও তার প্রেমিক ইমরানকে (২৬) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কেরানীগঞ্জ সার্কেল) শাহাবুদ্দিন কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, পরকীয়ার জেরে স্বামীকে তার স্ত্রী উর্মি ও প্রেমিক ইমরান মিলে পরিকল্পনা করে হত্যা করেছে।
শাহাবুদ্দিন কবির আরও জানান, উর্মির সঙ্গে ইমরানের দীর্ঘ দিনের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। তারা একে অপরেকে বিয়ের জন্য চেষ্টা করে। এতে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় স্বামী মারুফ। আর এই বাঁধাকে সড়িয়ে ফেলার জন্য উর্মি ও ইমরান স্বামী মারুফকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেন।
সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২১ মে রাতে মারুফকে কৌশলে বাইরে নিয়ে গিয়ে মদপান করান ইমরান। মারুফ রাত ২টার দিকে ঘরে ফেরে। এ সময় ঘরে আসা মারুফকে তার স্ত্রী উর্মি ট্যাংয়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে পান করান। এতে মারুফ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। এরপর মারুফকে মারার জন্য স্ত্রী উর্মি তার প্রেমিক ইমরানকে খবর দেন। গতকাল শনিবার ভোর ৬টার দিকে ইমরান এসে মারুফের ঘরে প্রবেশ করেন।
পূর্ব পরিকল্পনা মতো উর্মি ও ইমরান দুজনে মিলে শক্ত হাতুড়ি দিয়ে মারুফের মাথায় আঘাত করেন। আঘাত পেয়ে মারুফ সঙ্গে সঙ্গে মারা যান। এরপর ব্যবহৃত হাতুড়ি ও রক্তমাখা জামাকাপড় পাশের ডোবার পানিতে ফেলে দিয়ে ইমরান ঘটনাস্থল ত্যাগ করে তার নিজ বাসা ডাকপাড়া চলে যান। আজ সকাল ৮টার দিকে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ সময় পুলিশের সন্দেহ হলে স্ত্রী রিনা আক্তার ওরফে উর্মিসহ ৯ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রী উর্মি স্বীকার করেন, তার প্রেমিক ইমরান মিলে স্বামী মারুফকে হত্যা করেছেন। এমন তথ্যের ভিত্তিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ ও ডিবি দক্ষিণের যৌথ টিম অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানকালে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা ডাকপাড়া জোড়া পুকুরপাড় এলাকা থেকে আমানুল্লার ছেলে ইমরানকে (২৬) গ্রেপ্তার করা হয়।
ইমরানের দেওয়া তথ্যমতে, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হাতুড়ি ও রক্তমাখা পোশাক ডোবা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।