দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে লাঙ্গল প্রতীকে জাল ভোট দেওয়ায় আওয়ামী লীগের নেত্রী উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম ওরফে শিউলি আজাদসহ পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। জেলা যুগ্ম জজ মো. কামাল হোসেন শিকদার এ সাজা দেন।
সাজাপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ উদ্দিন, তিন নারী সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা কোহিনুর বেগম, জোবেদা বেগম ও নাছিমা বেগম।
নির্বাচন-সংক্রান্ত বিশেষ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. কামাল হোসেন শিকদার গতকাল রোববার জেলা সার্কিট হাউসে শিউলি আজাদ ও আশরাফ উদ্দিনকে পাঁচ বছর করে এবং তিন নারী সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে তিন বছর করে সাজা দেন।
শিউলি আজাদ ২০১২ সালের ২১ অক্টোবর দলীয় কোন্দলে নিহত উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এ কে এম ইকবাল আজাদের স্ত্রী। শিউলি আজাদ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। পরে তিনি দলের নির্দেশে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধাকে সমর্থন দেন। কোহিনুর ও জোবেদা বেগম উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের পরিদর্শিকা। আর নাছিমা বেগম অরুয়াইল বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক।
পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, জেলা যুগ্ম জজ কামাল হোসেন শিকদার গতকাল রোববার বেলা সোয়া একটার দিকে উপজেলা সদরের উচালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দেওয়ার সময় হাতেনাতে তিন নারী সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে আটক করেন। ওই সময় তাঁদের কাছ থেকে ৫০টি জাল ভোটও জব্দ করেন। পরে তাঁদের সরাইল থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। ওই তিন নারী পুলিশকে লিখিতভাবে জানান, শিউলি আজাদ ও আশরাফ উদ্দিনের নির্দেশে ও চাপে তাঁরা জাল ভোটে সহায়তা করেছেন।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী আরশাদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আটক তিন নারীকে গতকাল রাতেই জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্য সাজাপ্রাপ্ত দুজনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যোগাযোগ করা হলে শিউলি আজাদ বলেন, ‘এ সবই আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।’
নির্বাচন-সংক্রান্ত বিশেষ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. কামাল হোসেন শিকদার এ ব্যাপারে বলেন, ‘নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করে জাল ভোট প্রদানের সঙ্গে জড়িত থাকায় ওই পাঁচজনকে সাজা দেওয়া হয়েছে।’
উৎসঃ প্রথম আলো