ব্রেকিং নিউজ
Home / বাংলাদেশ / ​জীবিত ব্যক্তি পত্রিকায় পড়লেন তিনি মৃত

​জীবিত ব্যক্তি পত্রিকায় পড়লেন তিনি মৃত

 

চুয়াডাঙ্গায় জীবিত এক ব্যক্তি স্থানীয় পত্রিকায় পড়লেন যে তিনি মৃত। খবরটি পড়ে তিনি ও তার ছেলে পুরোপুরি চমকে উঠেন। পরে ওই পত্রিকা অফিসে খবর নিয়ে তারা জানতে পারেন, স্বাস্থ্য বিভাগের ত্রুটিপুর্ণ তথ্যের কারণেই এই বিভ্রান্তি। এ নিয়ে সমালোচনা মুখে পড়তে হয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে। তবে ঘটনার এক দিন পর স্বাস্থ্য বিভাগ ত্রুটিপূর্ণ ওই তথ্যসূচি সংশোধন করে নেয়। এ ঘটনায় দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিসংখ্যানবিদ শাহাজাহান আলীকে ইতিমধ্যে শোকজ করা হয়েছে। তাকে তিন কার্য দিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলেছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

চুয়াডাঙ্গা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার মুন্সিপুরের ওসমান গণী ওরফে মন্টু সর্দার (৫৮) জ্বর ও ঠান্ডাজনিত রোগে অসুস্থ হয়ে গত ১১ মে তার করোনার পরীক্ষার নমুনা দেন। এতে পর দিনই তার করোনার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এরপর থেকে অর্থাৎ ঈদের আগের দিন থেকে তার নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে থাকেন। এর মধ্যেই দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিসংখ্যানবিদ শাহাজাহানআলী লোকমুখে শুনে বিষয়টি তদন্ত না করেই মঙ্গলবার (১৮মে) জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানান, করোনায় আইসোলেশনে থাকা মন্টু সর্দার মারা গেছেন। এই তথ্যের উপর ভিত্তি করে স্বাস্থ্য বিভাগ মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬০ জন হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানায়। যদিও ওসমান গণি ওরফে মন্টু সর্দার এখনও জীবিত আছেন।

জানা গেছে, উসমান গণির দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর তাকে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি ৬০৭ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীনও আছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনায় আক্রান্ত উসমান গণী ওরফে মন্টু সর্দার দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের মুন্সিপুর গ্রামের দক্ষিনপাড়ার মৃত কলিম উদ্দীন সর্দারের ছেলে।

মন্টু সর্দার বলেন, হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় নিজের মৃত্যুর সংবাদ পত্রিকায় পড়তে হয়েছে। তিনি স্বাস্থ্য বিভাগের সঠিক তদারকি ও উদাসীনতাকে দায়ী করে আরো বলেন, আমি বেশ সুস্থ আছি। দুই-এক দিনের মধ্যেই আমাকে ছাড়পত্র দিয়ে দেবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

মন্টু সর্দারের ছেলে সাব্বির বলেন, আমি বাবার সাথে হাসপাতালেই থাকি। স্থানীয় একটি দৈনিক পত্রিকায় বাবার মৃত্যুর খবর দেখে আমি হতবাক। বাবাকে জানালে তিনিও ভীত হয়ে পড়েন। পরে পত্রিকা অফিসে যোগাযোগ করে বিষয়টি জানাই। তারাই স্বাস্থ্য বিভাগকে জানিয়েছে।

দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু হেনা মোহাম্মদ জামাল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এই ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত বললেও ভুল হবে। আমাদের পরিসংখ্যানবিদ শাহাজাহান আলী যাচাই-বাছাই না করে কোনো অনুমতি বা স্বাক্ষর না নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে রিপোর্ট পাঠিয়ে দেয়। এতেই সৃষ্টি হয় বিপত্তি। পরেরদিন অবশ্য রিপোর্টটি সংশোধন করা হয়েছে। এছাড়া পরিসংখ্যানবিদ শাহাজাহান আলীকে শোকজ করা হয়েছে, ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মারুফ হাসান বলেন, যারা করোনার রিপোর্ট নিয়ে কাজ করেন, তাদের আরো মনযোগী হতে হবে। এ ধরনের ভুল আমাদের প্রশ্নবিদ্ধ করবে। তবে ভুল রিপোর্টটি ওই দিনই স্বাস্থ্য বিভাগের নজরে এলে পরে তথ্যসূচি আমরা সংশোধন করে ঢাকাসহ সব জায়গায় পাঠিয়ে দিয়েছি।