দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের ৬৪টি ভোট কেন্দ্রে একটিও ভোট পড়েনি। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ওই ভোট কেন্দ্রগুলোর কর্মকর্তার ভোট গ্রহণের জন্য প্রস্তুত থাকলেও একজন ভোটারও ভোট দিতে আসেননি। অথাৎ ৬৪টি ভোট কেন্দ্রই ভোটার শূণ্য ছিল। আমাদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন এসব কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা সর্বো নিম্ন ১ হাজার ৫শ’ থেকে সাড়ে তিন হাজারের মধ্যে।
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় বিএনপির নিখোঁজ সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীর গ্রামের বাড়ি রামদানা ভোট কেন্দ্রেও কেউ ভোট দিতে যাননি। ওই এলাকার রামদানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে দিন শেষে খালিই ছিল ব্যালটবক্স। ভোট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মো: বজলুর রহমান বিকেল ৪টায় সাংবাদিকদের জানান কোন ভোট কাস্ট হয়নি। তিনি বলেন, ভোট কেন্দ্রের এক হাজার ৯১০ জন ভোটারের কেউই ভোট দিতে আসেননি।
লালমনিরহাট-৩ আসনের ২৬ কেন্দ্রে একটিও ভোট পড়েনি। এছাড়া লালমনিরহাট-১ আসনেও পাঁচটি ভোট কেন্দ্রে কোন ভোটারই ভোট দিতে আসেননি। তিনি জানান, জেলার এই দুটি আসনে ভোট পড়েছে মাত্র পাঁচ শতাংশ।
সিরাজগঞ্জ-৫ এর ছয়টি ভোট কেন্দ্রে একটিও ভোট পড়েনি। এই কেন্দ্রগুলো হয়, কল্যাণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কল্যাণপুর রওশনিয়া দাখিল মাদ্রাসা, কলাগাসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, টিএসসি গয়না কান্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চার নবীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র এবং কেসি সালদাইর ভোট কেন্দ্রে একটি ভোট পড়েছে। তবে ওই ভোটটিও বাতিল করেছেন কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার।
দিনাজপুরের দুটি আসনের মোট ১২টি ভোট কেন্দ্রে একজন ভোটারও ভোট দেয়নি। এর মধ্যে দিনাজপুর-৪ আসনে ছয়টি এবং দিনাজপুর-৬ আসনে নবাবগঞ্জ ইসলামীয়া মাদ্রাসাসহ ছয়টি কেন্দ্রে একজন ভোটাও ভোট দিতে আসেননি।
বগুড়া-৭ আসনের শাজাহানপুর উপজেলার একটি ভোটকেন্দ্রে একজন ভোটারও ভোট দিতে আসেনি। শাজাহানপুর উপজেলার মাদলা ইউনিয়নের মালিপাড়া দাখিল মাদরাসা কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার আনিছুর রহমান জানান, ওই কেন্দ্রের মোট দুই হাজার ১৫৯ ভোটার। রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কোনো ভোটারই ভোট দিতে আসেনি।
অপরদিকে, ওই কেন্দ্রের পাশে রামচন্দ্রপুর বালক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট পড়েছে মাত্র তিনটি।
উখিয়া-টেকনাফ আসনে উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে একজন ভোটারও ভোট দিতে আসেননি। ওই কেন্দ্রের ভোট সংখ্যা ১৫৯৫।
আমাদের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি কাজী শহীদুল হক রাজু জানান, সাতক্ষীরা-২ আসনের তিনটি ভোট কেন্দ্রে কোন ভোটারই ভোট দেয়নি। ওই ভোট কেন্দ্রগুলো হল, আগরদাড়ী মহিলা মাদ্রাসা, কামিল মাদ্রাসা ও ধলবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে কোন ভোটারই ভোট দিতে আসেননি।
জেলার মহেশপুর উপজেলার দুটি ভোট কেন্দ্রে কোন ভোটার ভোট দেননি। উপজেলার এসবিকে ইউনিয়নের বজরাপুর ও পুরোন্দপুর ভোট কেন্দ্রে কোন ভোটার ভোট দিতে আসেননি। পুরোন্দপুর ভোট কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা ৩৫২৮ এবং বজরাপুর ভোট কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা ২৫৪২।
ফেনী-৩ আসনে দুট ভোট কেন্দ্রে একজন ভোটারও ভোট দেননি। ওই আসনের পূর্ব মহেশ্বর সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে কোন ভোটার ভোট দিতে আসেননি। ওই কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা ১৬৩২।
এছাড়া সওদাগরহাট মোহাম্মাদিয়া মাদ্রাসা ভোট কেন্দ্রও ভোটার শূণ্য ছিল। ওই কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা ২০৮০।
জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনের সরিষাবাড়ী বলার দিয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সরিষাবাড়ী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর সরিষাবাড়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাঘমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে একজন ভোটারও ভোট দিতে আসেননি। বলার দিয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটার ছিল ৩১শ ৭৪জন, সরিষাবাড়ী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটার ১৫শ, চর সরিষাবাড়ী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে চার হাজার ৩০০, বাঘমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই হাজার ৬৬৭। এছাড়াও একই উপজেলার রিয়াজ উদ্দিন তালুকদার উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে তিনটি ভোট পড়েছে। ভোটার ছিল ২২শ ৮১জন। বগারপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ১১টি ভোট পড়েছে। মোট ভোটার দুই হাজার ৪৪৩।
আমাদের রাজশাহী ব্যুরো থেকে জানানো হযেছে মাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যায় কেন্দ্রে একটিও ভোট পড়েনি। ওই কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা ছিল ২৭৯৭
এছাড়া নীলফামারীর ডোমার উপজেলার গোমনাতী উচ্চ বিদ্যালয় ১৮ নং কেন্দ্রে নারী-পুরুষ মিলিয়ে মোট ভোটারের সংখ্যা ৩৭৩২। এরমধ্যে একটি মাত্র ভোট পড়েছে বলে আমাদের সাংবাদদাতা জানিয়েছেন।