ব্রেকিং নিউজ
Home / অপরাধ জগৎ / কুমিল্লায় মা-বাবার কবরের পাশে সমাহিত মুনিয়া

কুমিল্লায় মা-বাবার কবরের পাশে সমাহিত মুনিয়া

 

ঢাকার কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়াকে কুমিল্লায় তার মা-বাবার পাশে দাফন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার আসরের নামাজের পর কুমিল্লার টমছমব্রিজ কবরস্থানে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।

সোমবার রাতে ঢাকার গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় ২১ বছর বয়সী মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়।

পরে তার বোন ইসরাত জাহান তানিয়া গুলশান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, যেখানে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে ‘আত্মহত্যায় প্ররোচনার’ অভিযোগ আনা হয়।

ক্যান্টনম্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী মুনিয়া গুলশানের ওই ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন।

পুলিশ বলছে, ওই তরুণীর সঙ্গে ‘প্রেমের সম্পর্ক’ ছিল আনভীরের; গুলশানের ওই ফ্ল্যাটে তার যাতায়াতও ছিল।

ওই মামলায় পুলিশের আবেদনে আদালত ইতোমধ্যে সায়েম সোবহান আনভীরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আগামী ৩০ মের মধ্যে পুলিশকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে বিকালে মুনিয়ার মরদেহ নিয়ে কুমিল্লায় পৌঁছান স্বজনরা। শহরের বাগিচাগাঁওয়ে বড় বোনের বাসা অরণী ভবনে স্বজনরা তাকে শেষ বিদায় জানান।
বড় বোন ইসরাত জাহান তানিয়া বলেন, মুনিয়া ডায়রি লিখতেন। সেখান থেকেই অনেক তথ্য পাওয়া যাবে।

“দুবছর আগে বসুন্ধরার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের সঙ্গে মুনিয়ার সম্পর্ক হয়। কালকে মুনিয়া ফোন করে বলে, ‘আমাকে মেরে ফেলবে। আমাকে ধোঁকা দিয়েছে, ধোঁকা দিয়েছে। আপু তুমি তাড়াতাড়ি ঢাকায় আস, আমার অনেক বড় বিপদ।”

ইসরাত জাহান বলেন, বোনের ফোন পেয়ে সোমবার দুপুরে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় রওনা হন তিনি। পথে বারবার ফোন দিলেও মুনিয়া ধরেননি। বাসায় গিয়ে নক করলেও দরজা খোলেননি। পরে ফ্ল্যাটের মালিককে ডেকে তালা ভেঙে ঘরে ঢোকার পর মুনিয়াকের সিলিং ফ্যানে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।

তিনি বলেন, “আনভীর ওই বাসায় আসা-যাওয়া করেছে, সিসিটিভির এমন ফুটেজ পুলিশ পেয়েছে। এটা আত্মহত্যা, নাকি হত্যা সেটি তদন্তেই বেরিয়ে আসবে।”

জানাজার সময় ইসরাত জাহানের স্বামী ব্যাংকার মিজানুর রহমান সানিও অভিযোগ করেন, মুনিয়াকে ‘হত্যা করা হয়েছে।’

মুনিয়ার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান কুমিল্লা শহর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ছিলেন। মা সেতারা বেগম ছিলেন সোনালী ব্যাংককের সিনিয়র অফিসার।
তিন ভাইবোনের মধ্যে মুনিয়া ছিলেন সবার ছোট। তার বড় ভাই আশিকুর রহমান সবুজ কুমিল্লায় মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক।

এ বিষয়ে সরকারপ্রধানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সবুজ বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমার বোনের হত্যাকারীর বিচারের ব্যবস্থা করবেন।”

মুনিয়ার জানাজায় অংশ নিয়ে কুমিল্লার ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কবিরুল ইসলাম শিকদারসহ স্থানীয়রা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।