করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ ঠেকাতে দেশে চলছে সরকারঘোষিত কঠোর লকডাউন। এর মধ্যেও রাজধানীর যেকোনো প্রান্তে যাওয়া যায়। রাস্তা ফাঁকা থাকায় আগের চেয়ে সময়ও লাগে কম। এ জন্য কেবল টাকা আর মুভমেন্ট পাস (অনেক সময় এটা ছাড়াও চলে) থাকলেই চলে।
ফলে আর্থিক সঙ্কট থাকায় অতি প্রয়োজন ছাড়া নিম্নবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্তরাই এই লকডাউনে যাতায়াত থেকে বিরত থাকছেন। উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্তের প্রয়োজনে কোথাও যাওয়া আটকাচ্ছে না।
মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুর, আগারগাঁও, মহাখালী, গুলশান, বাড্ডা, নতুন বাজার, বনানী, মাটিকাটা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তায় রিকশা, মোটরসাইকেল, সিএনজি, ব্যক্তিগত গাড়ি হরদম চলছে। কোথাও গাড়ির আধিক্য। কখনও যানজটও হচ্ছে। রাস্তায় মানুষের আনাগোনাও বেশ। অন্যান্য দিনের তুলনায় আজকে রাস্তায় যানবাহন ও মানুষের উপস্থিতি বেশি ছিল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উচ্চবিত্তরা ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে গন্তব্যে নির্ঝঞ্জাটে ছুটে চলছেন। মধ্যবিত্তরাও বাড়তি ভাড়া দিয়ে সিএনজি, মোটরসাইকেল ও রিকশায় চেপে গন্তব্যে যাচ্ছেন। কেবল নিম্নবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্তরাই লকডাউনে আকাশচুম্বী ভাড়া দিয়ে কোথাও যেতে পারছেন না। অতি জরুরি কোনো প্রয়োজন ছাড়া লকডাউনে তারাই কেবল এলাকায় অবস্থান করছেন।
রাজধানীর উত্তর বাড্ডার বাসিন্দা বেলাল হোসেন। লকডাউন শুরুর পর থেকে তিনি বাড্ডা এলাকার বাইরে কোথাও যাননি। বেলাল জানান, আগে তিনি আম, তেঁতুল, পেয়ারা, আনারস– এগুলো কেটে বিক্রি করতেন। রোজার কারণে এগুলো এখন আর চলে না। একটা কিছু তো করে খেতে হবে। সেজন্য এখন আম আর লেবু বিক্রি করছিলেন গুলশান-বাড্ডা লিংক রোডে। এই এলাকায় যা পান, তাই কিনে বিক্রি করেন। কম দামে ফল কেনার জন্য তার পক্ষে দূরে যাওয়া সম্ভব হয় না। তার প্রশ্ন, ‘আমি যে টাকা কামাই, তাতে রিকশা বা সিএনজি ভাড়া করে কেমনে দূরের কম দামের মাল আনতে যামু?’