জনগণের সঙ্গে শত্রুর মত আচরণ বন্ধ করতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী। তিনি বলেন, নির্বিচারে মানুষ হত্যা বন্ধ করুন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অন্যায় আদেশ দিয়ে এবং দলীয় লোকদের তাদের ছত্রছায়ায় রেখে নাগরিকদের উপর হামলা বন্ধ করুন। এক তরফা নির্বাচন বন্ধ করে সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনী পরিবেশ তৈরী করুন। কারণ, অন্যায়ভাবে এবং জোর-জুলুম চালিয়ে কেউ ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে পেরেছে, এমন নজির পৃথিবীতে নেই। এক বিবৃতিতে হেফাজত মহাসচিব এসব কথা বলেন। সুপ্রিমকোর্ট ও জাতীয় প্রেসক্লাবে আইনজীবি এবং সাংবাদিকদের উপর পুলিশের ছত্রছায়ায় ছাত্রলীগের হামলাকে বর্বরোচিত এবং সরকারের ফ্যাসিবাদি আচরণ হিসাবে অভিহিত করেন তিনি। বলেন, বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় পুরুষের পাশাপাশি মহিলা আইনজীবি ও মহিলা সাংবাদিকদের উপর ছাত্রলীগের কর্মীরা যে বর্বরোচিত কায়দায় হামলার সচিত্র প্রতিবেদন এসেছে, তা দেখে যে কোন সচেতন নাগরিক স্তব্ধ না হয়ে পারবে না। নারীদের উপর এমন বর্বর হামলা আইয়্যামে জাহিলিয়্যাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এমন বর্বরতায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নীরবতা ও সহযোগিতা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এর প্রতিবাদ করা দেশপ্রেমি প্রতিটি নাগরিকের কর্তব্য। একটা যুদ্ধক্রান্ত দেশেও প্রকাশ্য এমন বর্বরতা দেখা যায় না। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে জনগণ এতটা অসহায়বোধ কখনোই করেননি। পাকিস্তানী জুলূম থেকে দেশকে স্বাধীন করা হয়েছে মানুষ যেন স্বাধীনভাবে চলতে ও বলতে পারে। কিন্তু এখন মানুষের সেই অধিকার হরণ করা হয়েছে। হেফাজত মহাসচিব বলেন, বিরোধী দলের পক্ষ থেকে বার বার বলা হচ্ছে, তারা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবেন। অথচ সরকার বিরোধী দলের প্রতিবাদ কর্মসূচিকে বানচাল করার জন্য পুরো দেশটাকে অচল করে দিয়ে রাজধানীতে যুদ্ধাবস্থার মত পরিস্থিতি তৈরী করেছে। বাবুনগরী আরো বলেন, সরকার আলেমদেরকে ইসলামের কথা বলতে দিচ্ছে না, বিরোধী দলকে সরকারের অন্যায় আচরণের প্রতিবাদ করতে দিচ্ছে না, জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হচ্ছে, মন্ত্রী এমপিরা তাদের কর্মীদেরকে লাঠি হাতে রাস্তায় বের হতে বলছে, জনগণের বিরুদ্ধে একের পর এক হুংকার দিয়ে যাচ্ছে। সরকার আসলে দেশটাকে নিয়ে কি করতে চাচ্ছে, এ নিয়ে জনগণ চরম উদ্বেগের মধ্যে আছে। তিনি আরো বলেন, আজ শুধু দেশের মানুষ নয়, একমাত্র ভারত ছাড়া বিশ্বের প্রায় সকল দেশই সরকারের অন্যায় আচরণের প্রতিবাদ করছে। এমনকি জাতিসংঘসহ পশ্চিমা বিশ্বও এই তরফা নির্বাচনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। অথচ সরকার কারো কথাই কর্ণপাত করছে না। হেফাজত মহাসচিব সরকারের প্রতি জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, নাগরিকদের সঙ্গে শত্রুর মত আচরণ করা বন্ধ করুন।