করোনাভাইরাসের মহামারির মধ্যেও চীন-ভারত বিরোধ এবং দুই দেশের সামরিক স্তরে বৈঠকের পর গতকাল রোববার ভারত এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দুই দেশই এই সংকটের ‘শান্তিপূর্ণ সমাধান’ চাইছে। সীমান্ত বিরোধ নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে গতকাল সামরিক স্তরে বৈঠকটি হয়েছিল। -বিবিসি বাংলা, ডযেস এবেলে, এনডিটিভি
এই উত্তেজনার নিরসনে ভারত যে সামরিক পর্যায়ে বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছিল, চীন তাতে রাজি হওয়ার পর গতকাল পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চীনের অভ্যন্তরে মালডোতে ‘বর্ডার পার্সোনেল মিটিং পয়েন্টে’ বৈঠকে বসেন দুই দেশের সেনা কর্মকর্তারা। ভারতের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন ফোর্টিন্থ কোরের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল হরিন্দর সিং। আর চীনের পক্ষে নেতৃত্ব দেন তিব্বত মিলিটারি ডিস্ট্রিক্ট – এর কমান্ডার। সেই বৈঠক অত্যন্ত ‘ সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে ’ হয়েছে এবং দুপক্ষই শান্তিপূর্ণ সমাধান চাইছে বলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ জানিয়েছে। তবে সীমান্তের বিতর্কিত এলাকা থেকে সেনা সরানোর ব্যাপারে বিবৃতিতে কিছুই বলা হয়নি ।
অন্য দিকে চীনের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে কোনো বক্তব্য না এলেও সে দেশের রাষ্ট্রীয় মুখপত্র গ্লোবাল টাইমসে আজ একটি সেনা মুভমেন্টের খবর দিয়ে জানানো হয়েছে , মধ্য চীনের হুবেই প্রদেশে থেকে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বিমানবাহিনীর সদস্যরা লাদাখ সীমান্তে উড়ে গেছে ।
গ্লোবাল টাইমস জানায় , চীন – ভারত সীমান্ত উত্তেজনার মধ্যেই মধ্য চীনের হুবেই থেকে চীনা বিমানবাহিনীর বেশ কয়েক হাজার সেনা লাদাখের দিকে উড়ে গেছে। ভারতের উত্তর সীমান্তের এই সামরিক সংঘাত যে খুব তাড়াতাড়ি মিটছে না , সেটা ভারতের সামরিক পর্যবেক্ষকদের কাছেও এখন দিনের আলোর মতো পরিষ্কার ।
পাশাপাশি ভারতের সামরিক সূত্রগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে , লাদাখ সীমান্তের এই বিরোধ যে খুব তাড়াতাড়ি মিটবে না , সেটা গতকাল দুপক্ষের অনড় অবস্থান থেকেই অনেকটা পরিষ্কার হয়ে গেছে। মাসখানেকের ওপর হল লাদাখ সীমান্তের গালওয়ান ভ্যালি ও প্যাংগং লেক এলাকায় দু ’ দেশের সেনা মোতায়েনকে ঘিরে ভারত – চীন সম্পর্কে তীব্র উত্তেজনা চলছে ।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের গবেষক ও লেখক শ্রীরাম চাউলিয়া অবশ্য মনে করেন , এই বৈঠকে খুব বেশি কিছু হওয়ারও ছিল না। কারণ চীনের মতো দেশে সব কিছু সর্বোচ্চ নেতার ইশারাতেই চলে , তার সিদ্ধান্তের দিকেই সবাই তাকিয়ে থাকেন। তার কথায় , শি জিনপিং শুধু প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্টই নন , তিনি কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতা এবং সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনেরও প্রধান , যাদের হাতে সেনাবাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ।