মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর আমীর মতিউর রহমান নিজামীর রায় আগামী মঙ্গলবারের (৩১ ডিসেম্বর) মধ্যেই ঘোষণা হবে।
মামলা প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলী বলেন, এ মাসেই নিজামীর মামলার রায় ঘোষণা করা হবে বলে আশা করছি। তিনি বলেন, এক মাস অতিক্রম হয়ে গেছে মামলার কার্যক্রম শেষ হয়েছে। সুতরাং এ মাসেই রায় হবে।
নিজামীর মামলার কর্যক্রম শেষ করে গত ২০ নভেম্বর রায়ের জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রাখেন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর। নিয়ম হলো যেসব বিচারপতি মামলা শুনানি করেন রায়ও ঘোষণা করেন তাঁরা।
বিচারপতি এটিএম ফজলে কবিরের ৩১ ডিসেম্বর অবসরে যাওয়ার কথা রয়েছে। সে হিসেবে অবসর গ্রহণের আগেই অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই নিজামীর মামলার রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে অবসরে যাবেন তিনি।
তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সানাউল হক বলেন, আইনানুযায়ী যে বিচারপতি মামলার কার্যক্রম পরিচালনা করবেন, তিনিই মামলার রায় লিখবেন এবং ঘোষণা করবেন। সুতরাং চেয়ারম্যান বিচারপতি অবসরে যাওয়ার আগে রায় লিখে যাবেন।
তিনি বলেন, আইন অনুযায়ীই রায় হবে। আমি মনে করি বিচারপতি (এটিএম ফজলে কবির) রায় ঘোষণা করে যাবেন।
সানাউল হক বলেন, নিজামীর ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট হবে এটাই প্রত্যাশা করি। ভিকটিম ও সাক্ষীদের প্রত্যাশা অনুযায়ী দাবি হলো অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত তারা দ্রুত বিচারের সম্মুখীন হোক। তাই নিজামীর মামলার রায় ঘোষণার পরে আপিল শেষ করে শাস্তি নিশ্চিত হোক এটাই বিচার প্রার্থীদের প্রত্যাশা।
প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট সুলতান মাহমুদ সীমন বলেন, যে কোনো সময় নিজামীর মামলার রায় দিতে পারেন। এর আগে অবশ্য দিনক্ষণ ঠিক করবেন ট্রাইব্যুনাল-১।
সূত্র জানায়, বিচারপতির অবসর গ্রহণের আগে তাকে ট্রাইব্যুনাল থেকে হাইকোর্টে স্থানান্তর করা হতে পারে। সে অনুযায়ী ৩০ ডিসেম্বর হাইকোর্টে স্থানান্তর এবং ৩১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর দেয়া হবে। ৩১ ডিসেম্বর তার বয়স ৬৭ বছর পূর্ণ হবে। সে অনুযায়ী ট্রাইব্যুনাল-১ এ চলমান অন্যসব মামলার কার্যক্রম শেষ না করেই ওই দিন অবসরে যেতে হচ্ছে এটিএম ফজলে কবিরকে।
প্রসঙ্গত, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন মতিউর রহমান নিজামীকে গ্রেফতার করা হয়। একই বছরের ২ আগস্ট এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। ২০১২ সালের ৯ জানুয়ারি তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। চলতি বছরের ২৮ মে ১৬টি অভিযোগ এনে গঠন করা হয়।
নিজামীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, লুট, ধর্ষণ, উস্কানি, সহায়তা, পরিকল্পনা, ষড়যন্ত্র এবং বুদ্ধিজীবী হত্যাসহ মোট ১৬টি অভিযোগ আনা হয়।