ব্রেকিং নিউজ
Home / প্রচ্ছদ / যুবলীগ নেত্রীর মাসিক আয় ১৯ লাখ, ওয়েস্টিনের তিন মাসের বিল ১ কোটি ৩০ লাখ

যুবলীগ নেত্রীর মাসিক আয় ১৯ লাখ, ওয়েস্টিনের তিন মাসের বিল ১ কোটি ৩০ লাখ

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জাল টাকা, দেশি-বিদেশি মুদ্রা এবং নগদ টাকাসহ চার জনকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) সদস্যরা। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) র‌্যাব-১ এর সদস্যরা তাদের আটক করে। সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লেফট্যানেন্ট. কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব কর্মকর্তা শাফী উল্লাহ দাবি করেন, ‘দুপুরে বিমানবন্দর হয়ে দেশত্যাগের সময় অবৈধ অর্থ ও জাল টাকা সরবরাহকারী শামিমা নূর পাপিয়া ওরফে পিউসহ (২৮) চার জনকে আটক করে র‌্যাব-১ এর একটি টিম। আটক অন্যরা হলো- পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন (৩৮), সাব্বির খন্দকার (২৯) ও শেখ তায়্যিবা (২২)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৭টি পাসপোর্ট, নগদ দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ জাল টাকা, ১১ হাজার ৯১ ইউএস ডলারসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা জব্দ করা হয়।’

র‌্যাব কর্মকর্তা আরও দাবি করেন, ‘আটক নারী গাড়ির শোরুম ব্যবসার আড়ালে প্রতারণা, অস্ত্র ও মাদক কারবার এবং চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এই কাজে তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সহযোগিতা করতেন। শুধু তাই নয়, রাজধানীর গুলশানের অভিজাত হোটেল ওয়েস্টিনে প্রেসিডেন্ট স্যুট পাপিয়ার নামে সবসময় বুকড থাকতো। গাড়ি ব্যবসা থেকে পাপিয়ার বছরে আয় হয় মাত্র ১৯ লাখ টাকা। অথচ গত তিন মাসে শুধুমাত্র হোটেল ওয়েস্টিনে তিনি বিল পরিশোধ করেছেন এক কোটি ৩০ লাখ টাকা। ওয়েস্টিন হোটেলে প্রতিদিন বারের খরচবাবদ প্রায় আড়াই লাখ টাকা পরিশোধ করতেন পাপিয়া। ওয়েস্টিনে সাত জন মেয়েকে ব্যবহার করে পাপিয়া অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন। যাদেরকে প্রতি মাসে ৩০ হাজার করে মোট দুই লাখ ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করতেন।’

ব্রিফিংয়ে র‌্যাব কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘পাপিয়া সমাজ সেবার নামে নরসিংদী এলাকায় অসহায় নারীদের আর্থিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাদেরকে অনৈতিক কাজে ব্যবহার করতেন। নরসিংদী ও রাজধানীর বিভিন্ন বিলাসবহুল হোটেলে অবস্থান করে এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন তিনি। এসবের মাধ্যমে আসা অর্থ দিয়ে তিনি নরসিংদী ও ঢাকায় একাধিক বিলাসবহুল বাড়ি-গাড়িসহ বিপুল পরিমাণ টাকার মালিক হয়েছেন। এছাড়া, তিনি বিভিন্ন ধরনের তদবির বাণিজ্যের সঙ্গেও জড়িত। নরসিংদীতে তার একটি টর্চার সেলও রয়েছে। সেখানে বিভিন্ন মানুষকে ফাসিয়ে নিয়মিত আটকে টর্চার চালানো হতো।’

তবে এ বিষয়ে এখনো বিস্তারিত জানার সুযোগ হয়নি বলে সাংবাদিকদের জানান তিনি।

র‌্যাব কর্মকর্তা লে. কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল সাংবাদিকদের আরও বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাপিয়ার স্বামী আটক মতি পেশায় একজন ব্যবসায়ী বলে জানা গেছে। দেশে স্ত্রীর ব্যবসায় সহযোগিতার পাশাপাশি থাইল্যান্ডে তার বারের ব্যবসা রয়েছে। সে তার স্ত্রীর মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের অসহায় নারীদের এনে অনৈতিক কাজে ব্যবহার করতেন। অবৈধ অস্ত্র, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের জন্য নরসিংদী এলাকায় তার কুখ্যাতি রয়েছে।’

এদিকে, আটক সাব্বির খন্দকার পাপিয়ার ব্যক্তিগত সহকারী এবং আটক তায়্যিবা মতি সুমনের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করতো বলে জানিয়েছেন লে. কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল।

আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।

উৎসঃ   বাংলা ট্রিবিউন