ব্রেকিং নিউজ
Home / অপরাধ জগৎ / বিএসএফ আরও হিংস্র, এক মাসেই ১৫ বাংলাদেশিকে হত্যাI

বিএসএফ আরও হিংস্র, এক মাসেই ১৫ বাংলাদেশিকে হত্যাI

সীমান্তে থাকছে না ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ’র হিংস্রতা। বরং গত কয়েক বছরের তুলনায় চলতি বছরে কয়েকগুণে বেড়েছে তাদের হিংস্রতা। চলতি বছরের (৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত) তাদের হিংস্রতায় প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ১৫ বাংলাদেশি।

জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের অগ্রভুলোট, মোমিনপাড়া, ওয়াহেদপুর, দুইখাওয়া, বুড়িমারী, নিতপুর, পাখিউড়া, ধর্মপুর, বড়লেখা ও দৌলতপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে প্রাণ ঝরেছে ১৫ জনের।

সর্বশেষ কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে প্রতিবেশি এই দেশটির সীমান্তরক্ষীদের গুলিতে আহত বাংলাদেশি কৃষক সোলাইমান (৩৭) মারা গেছেন। তিনি গত ৪ ফেব্রুয়ারি গুলিবিদ্ধ হয়ে বিএসএফের তত্ত্বাবধানে ভারতের একটি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।

আর ২০১৯ সালে রেকর্ড পরিমাণে বাংলাদেশিকে হত্যা করে তারা। বেসরকারি সংস্থাটির হিসাবে, ২০১৮ সালে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশির সংখ্যা ছিলো ১৪। এবছর তা বেড়ে ৪৩-এ দাঁড়িয়েছে। ২০০৯ সালে প্রতিবেশী এই দেশটির সীমান্তরক্ষীরা ৬৬ বাংলাদেশিকে হত্যা করেছিল।

তবে বিজিবি মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম জানান, ‘ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হিসাবে এ হত্যার সংখ্যা আরও কম। আমাদের হিসাবে গতবছর সীমান্তহত্যার সংখ্যা ৩৫। গত চার বছরের মধ্যে এ সংখ্যা সর্বোচ্চ, আমরা বিএসএফকে এ বিষয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছি।’

সীমান্তহত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিএসএফকে অনুরোধ করা হয়েছে। বিএসএফ প্রধান আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। তারা এ ব্যাপারে আরও সতর্ক থাকার কথা বলেছেন বলেও জানান বিজিবি মহাপরিচালক।

তবে দুদেশের সমঝোতা আর কঠোর আইন – কোনো কিছুই থামাতে পারছে না বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে প্রাণহানির সংখ্যা। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইন্দিরা-মুজিব সীমান্ত চুক্তির সঠিক প্রয়োগ আর দুদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপই পারে এই অস্থিরতা ঠেকাতে।

বছরের দু’একটি দিন সীমান্তে মিলনের দৃশ্য দেখা গেলেও অন্য সব দিন যেন আলোর মাঝে আঁধারের কালো অধ্যায়। যে অধ্যায়ের সূচিগুলো লেখা হয় বারুদ আর মরদেহের মিছিল দিয়ে। তখন বোঝা যায় সীমান্ত কাঁটাতারের আঘাত কতটা ক্ষত তৈরি করতে পারে। কখনও আহত, কখনও মৃত্যু।

সমাজ বিশ্লেষকরা বলছেন, ধরা পড়লেই বিএসএফের বিবৃতি মেলে অবৈধ ব্যবসায়ী। কিন্তু, বাস্তবে সবাই ব্যবসায়ী না। একই সাথে দুদেশের রাজনৈতিক প্রচেষ্টা ও আইনের নিয়ন্ত্রণও জরুরি।

বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন অধিকার বলছে, প্রতিটি ঘটনাতেই নিরস্ত্র বাংলাদেশিরা নিহত হয়েছেন। বিএসএফের গুলিতে যখনই কোনও বাংলাদেশি নিহত হয় তখন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাকে গরু চোরাচালানকারী হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা দেখা যায়। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকার অনেক মানুষের ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে।

সংগঠনটির অভিযোগ- গরু চোরাচালানের সাথে ভারতীয়রা জড়িত থাকলেও গুলিতে কেবল বাংলাদেশিরাই নিহত হচ্ছে।