সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)-র প্রতিবাদে ডাকা বিক্ষোভে ত্রিমুখী সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের রূপ নিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি। এতে অন্তত ২ জন নিহত হয়েছেন। গুলিবৃদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন অনেকেই। তাদের অনেকের অবস্থা গুরুতর। নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
হিন্দ্যুত্ববাদী বিজেপির কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ হলেও বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালিয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাকর্মী। যারা কিনা সিএএ-এনআরসি বিরোধে বিক্ষোভে সরব। তৃণমূল যদিও এই ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেছে।
দেশটির গণমাধ্যমের খবর, বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে মুসলিম অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদের জলঙ্গির সাহেবনগর এলাকায় বিক্ষোভ ও অবরোধ ডাক দেয় স্থানীয় জনতা। ‘নবজাগরণ’ নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠনের ব্যানারে জমায়েত হয় হাজার হাজার মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ওই সংগঠনে বিভিন্ন রাজনৈতির দলের কর্মীরা থাকলেও তারা মূলত অরাজনৈতিক একটি আন্দোলন তৈরির চেষ্টা করেছিলেন। এ দিন সকাল ৭টা থেকে সাহেবনগর বাজারে অবস্থানে বসেন অবরোধকারীরা। সাড়ে ৮টা নাগাদ তিন-চারটি গাড়ি এসে থামে বাজারের সামনে। ওই গাড়িগুলোতে ছিলেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতা ও কর্মীরা।
নূর হোসেন ও সালাউদ্দিন শেখ নামের প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ‘ওই তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা লাঠিসোটা হাতে নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে অবরোধকারীদের সরে যেতে বলেন। এরপরেই তৃণমূল কর্মী-সমর্থক এবং অবরোধকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে তৃণমূলে পিছু হটলে দুষ্কৃতকারীরাএলোপাথাড়ি গুলি চালায়। সেই গুলিতে মারা গিয়েছেন সানারুল বিশ্বাস (৬০) এবং সালাউদ্দি শেখ (১৭)।
তবে তৃণমূলের মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি আবু তাহের খান বলেন, ‘শারজিল ইমামের গ্রেফতারের প্রতিবাদে বন্ধের ডাক দিয়েছিল একটি অরাজনৈতিক মঞ্চ। কিন্তু সেখানে সিপিএম-কংগ্রেসের সঙ্গে মিম-পিএফআই-এর মতো মৌলবাদী শক্তি ঢুকে পড়ে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছে।’
এই তৃণমূল নেতা বলেন, ‘আমার দলের নেতৃত্ব কেন গুলি চালাতে যাবে? এ সব মিথ্যে অভিযোগ। পুলিশ তদন্ত করুক। কিছু দুষ্কৃতি গুলি চালিয়ে এলাকায় অশান্তি পাকাচ্ছে।’