ব্রেকিং নিউজ
Home / বাংলাদেশ / নন মেট্রিক আসলামের শতকোটি, মমতাজের অর্ধকোটি টাকার গাড়ি

নন মেট্রিক আসলামের শতকোটি, মমতাজের অর্ধকোটি টাকার গাড়ি

imageঅষ্টম শ্রেণি পাশ করা ঢাকা- ১৪ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় সংসদ সদস্য আসলামুল হক পাঁচ বছরে শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। ল্যান্ড ডেভলপমেন্ট, রিয়েল এস্টেট, কেমিক্যাল আমদানি, কনজ্যুমার প্রোডাক্টস ও ট্রেডিং ব্যবসা করে নিজের নামের পাশাপাশি স্ত্রীর নামেও শত শত কোটি টাকার সম্পদ তৈরি করেছেন। এছাড়া নবম জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের মহিলা সংরক্ষিত আসনের এমপি কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম। দশম শ্রেণি পাশ করা মমতাজ গড়ে তুলেছেন অঢেল সম্পদ।ব্যবহার করেন ল্যান্ড ক্রুজার এবার তিনি মানিকগঞ্জ-২ আসনে থেকে এমপি নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। অষ্টম শ্রেণি পাশ আসলামুল হক যেন টাকার মেশিন: ২০০৮ সালে ইসিতে দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এমপি আসলামের মোট করযোগ্য আয় ছিল ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫০০ টাকা।এর মধ্যে কর প্রদান করেন ১১ হাজার ৮৫০ টাকা। বর্তমানে মিরপুরের এমপি আসলামের সম্পদ বেড়েছে কয়েকগুণ। আয়ের উৎস হিসেবে দেখা গেছে, তিনি বছরে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫০০ টাকা আয় করেন এবং স্ত্রী আয় করেন ২ লাখ ১৫ হাজার ৭০০ টাকা। তবে স্ত্রীর কোনো পেশার কথা উল্লেখ করেননি। পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে অস্থাবর সম্পদ বানিয়েছেন। সালে এমপি আসলামের কাছে নগদ টাকা ছিল ১৫ হাজার ৫০০ টাকা। এখন তার কাছে নগদ টাকার পরিমাণ ২ কোটি লাখ ১৩ লাখ ১৯ হাজার ০৩৯ টাকা।এছাড়া স্ত্রীর কাছে নগদ টাকার পরিমাণ ৫৭ লাখ ৮২ হাজার ৯ টাকা। ২০০৮ সালে ব্যাংকে জমা ছিল ৮ লাখ টাকা।বর্তমানে নিজের নামে ২৪ হাজার ৪৩ টাকা জমা থাকলেও স্ত্রীর নামে ব্যাংকে জমা আছে ৩৫ লাখ ৮৫ হাজার ৫০৬ টাকা। অস্থাবর সম্পদ হিসেবে দেখা গেছে বন্ড, ঋলপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভূক্ত ও তালিকাভূক্ত নয় কোম্পানির শেয়ার আছে ৮৫ লাখ ২৭ হাজার ৫০০ টাকার। এছাড়া স্ত্রীর নামে ১১ লাখ ৪০ হাজার টাকার শেয়ার আছে। পোস্টাল সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রে স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ আছে ১২ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ টাকার। এছাড়া একই খাতে স্ত্রীর নামে আছে ৫৪ লাখ ৭৩ হাজার ৪২৯ টাকার। পরিবহন ব্যবসায় নিজের নামে ৮৭ লাখ ও স্ত্রীর নামে ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার সম্পদ আছে। এছাড়া নিজের ও স্ত্রীর নামে ৮৩ ভরি স্বর্ণ আছে, যার কোনো মূল্য দেওয়া হয়নি। এছাড়া নিজে অন্যান্য খাত তিনি ৭ লাখ ২৫ হাজার ৮৭৩ টাকা আয় করেন এবং স্ত্রী আয় করেন প্রায় ৯ লাখ টাকা। ৫ বছরে তিনি কয়েক কোটি টাকা মূল্যের জমির মালিক হয়েছেন। ২০০৮ সালে নিজ নামে সাড়ে ৩ বিঘা ও স্ত্রীর নামে ৮ বিঘা জমি ছিল। বর্তমানে এমপি আসলামুল হকের নামে ১৪ হাজার ১৭৮ শতাংশ জমি আছে এবং স্ত্রীর নামে ৩৯০র শতাংশ জমি আছে। এছাড়া এমপি আসলাম প্রতি বছর বাড়ি ভাড়া বাবদ ১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা আয় করেন। ২০০৮ স্ত্রীর নামে গাবতলী ও মিরপুর এলাকায় ৫২ কাঠা সম্পত্তির কথা উল্লেখ করলেও এবার তা এড়িয়ে গেছেন এমপি আসলাম। মমতাজের অর্ধকোটি টাকার ল্যান্ড ক্রুজার মানিকগঞ্জ-২ আসনে একমাত্র বৈধ প্রার্থী হিসাবে এবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন সঙ্গীত শিল্পী মমতাজ। পেশা হিসাবে কণ্ঠশিল্পীর কথা উল্লেখ করেছেন। ২০০৮ সালের হলফনামায় আয়ের উৎস হিসাবে ব্যবসায় ২৬ লাখ ৮৫ হাজার ৪৩ টাকা এবং কৃষি খাতে আয় দেখিয়েছিলেন ৪০ হাজার টাকা। বর্তমানে তার আয় কয়েকগুণ বেড়েছে। বর্তমানে বাৎসরিক আয়ের থেকে বেশি টাকা মূল্যের গাড়ি ব্যবহার করেন মমতাজ। তিনি বর্তমানে ৬৫ লাখ ৬ হাজার ২৫০ টাকা মূল্যের টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার জিপও ব্যবহার করেন। পাশাপাশি তিনি কৃষিখাতে ৭০ হাজার এবং ব্যবসায় ১০ লাখ ৮৪ হাজার ৯৫৩ টাকা আয় করেন। তবে তিনি কি ব্যবসা করেন এর কোনো কিছু উল্লেখ করেননি মমতাজ। ২০০৮ সালে তার কাছে নগদ টাকা ছিল মাত্র ৭ লাখ ১১ হাজার ৫৭ টাকা, ২০১৩ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ২০ হাজার। নগদ টাকার পরিমাণ কমলেও বেড়েছে ব্যাংকে জমাকৃত টাকার পরিমাণ। ২০০৮ সালে মমতাজের ব্যাংকে জমা ছিল মাত্র ৫০ হাজার টাকা, বর্তমানে তার ব্যাংকে জমা ৩০ লাখ টাকা। বেড়েছে ২৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বর্তমানে তার কাছে ৩৫ ভরি স্বর্ণের গহনা আছে। ২০০৮ সালে নিজ নামে ২৩ লাখ ৪৬ হাজার ৭৩৪ টাকা মূল্যের কৃষি জমি থাকার কথা উল্লেখ করা হলেও এবার এড়িয়ে গেছেন। ২০০৮ সালে পেশার আয়ের কথা উল্লেখ না করলেও বর্তমানে ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকার কথা উল্লেখ করেছেন। এছাড়া এমপি হিসাবে পারিতোষিক ও অন্যান্য খাতে বছরে আয় দেখিয়েছেন ৩৪ লাখ ৪১ হাজার ৮৮১ টাকা। এবার তিনি ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের আসবাব পত্রের কথা উল্লেখ করেছেন ২০০৮ সালে যা উল্লেখ ছিল না। সংরক্ষিত আসনের এমপি পদ মমতাজের জীবনের যেন সব কিছু পরিবর্তন করে দিয়েছে।