হঠাৎ মুহুর্মুহু গুলির শব্দ। আকাশে র্যাবের হেলিকপ্টার। বনানীর নরডিক হোটেলে প্রবেশ করে কয়েকজন জঙ্গি। প্রবেশের পর তৃতীয়তলায় কয়েকজন বিদেশি অতিথিকে জিম্মি করে ফেলে তারা। কিছু সময়ের মধ্যে র্যাব হোটেলটির চারপাশ ঘিরে ফেলে। মুহুর্তে হাজির করা হয় উন্নত বিভিন্ন প্রযুক্তি। বিভিন্ন ভবনের ছাদে স্নাইপার রাইফেল নিয়ে অবস্থান করে র্যাব সদস্যরা।
কয়েকটা হোটেলের ভেতর থেকে র্যাবকে লক্ষ্য করে ছোঁড়া হয় গুলি। র্যাবও পাল্টা গুলি ছোঁড়ে। এরই মধ্যে আরেকটি দল আইইডিডি রেসপন্স, ভেকেল, র্যাটার ভেকেল, জ্যামার ও টিসিভি নিয়ে ঘিরে ফেলে হোটেলটি। দুই মিনিটের মধ্যে একটি হেলিকপ্টার থেকে কয়েকজন কমান্ডোকে হোটেলর ছাদে নামিয়ে দেওয়া হয়। ত্রিমুখি সংঘর্ষে মাত্র চার মিনিটের মধ্যে শেষ হয় অভিযান। জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার করা হয় আহত কয়েকজনকে। নিহত হয় জঙ্গিরা।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকালে বনানীর ১৭ নম্বর সড়কের ব্লক-সিতে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে র্যাবের সক্ষমতার ‘বিশেষায়িত মহড়া’ প্রদর্শন করা হয়।
মহড়ায় উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব (জননিরাপত্তা শাখা) মোস্তফা কামাল, র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজির আহমেদ ছাড়াও বাহিনীর প্রতিটি ব্যাটেলিয়নের প্রধান এবং ডিএমপির গুলশান জোনের কর্মকর্তারা।
মহড়ায় অংশ নেওয়া র্যাব সদস্যদের ধন্যবাদ জানান স্বরাষ্ট্র সচিব।
তিন বলেন, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বাংলাদেশে অত্যান্ত চৌকস এবং এলিট ফোর্স হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। বর্তমানে তাদের অনেক সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আজকে তারা থ্রি ডাইমেনশনাল কমান্ডো অপারেশন পরিবেশন করেছে। ভবিষ্যতে যদি জঙ্গি বা কোনো দুর্বৃত্ত কোনো প্রতিষ্ঠান, হোটেল বা আবাসিক ভবনে এমন জিম্মি করার চেষ্টা করে তাহলে এমনিভাবেই তাদেরকে প্রতিহত করা হবে।
স্বরাষ্ট্র সচিব আরও বলেন, বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধামন্ত্রী দুর্নীতি, জঙ্গী, সন্ত্রাস এবং মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। সে দিকে লক্ষ্য রেখেই বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে বিশেষ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধিনে যে সকল বাহিনীগুলো রয়েছে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি আনসার, কোস্টগার্ড সকলকে মিলে এই দেশটাকে বিশ্বের বুকে শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে রোল মডেল পরিচিত হতে সবাইকে নিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছে। সরকার উন্নয়নশীল দেশ গড়ে তুলেছে যা বিশ্বের বুকে ভিন্ন একটি স্থান করে নিয়েছে।
এ সময় র্যাব মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ বলেন, অনেকেই বলছেন রাজধানীতে ৫০-৬০টি ক্যাসিনো আছে। কেউ কেউ বলছেন ৫০০ ক্যাসিনো আছে। আবার অনেকেই বলেন, ঘরে ঘরে ক্যাসিনো আছে। আমি বলছি, আপনারা দয়া করে তালিকা দেখান। এভাবে গুজব ছড়াবেন না। এতে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আপনারা আমাদের পাশে আছেন ধন্যবাদ। কিন্তু, ভুল তথ্য দিয়ে গুজব ছড়াবেন না।
তিনি বলেন, আমরা ক্যাসিনো বন্ধের অভিযানে নেমেছি। এরইমধ্যে ঢাকা শহরে এখন সব ক্যাসিনো বন্ধ হয়ে গেছে। তবে অভিযানকে অন্য খাতে প্রবাহিত করতে গুজব ছড়াবেন না।
বেনজির আহমেদ আরও বলেন, আমরা শুধুই ক্যাসিনো বন্ধের অভিযানে নেমেছি। অনুমান নির্ভর তথ্য দিয়ে গুজব ছড়াবেন না। অনেক ক্ষেত্রে এতে মানুষের ক্ষতি সাধন হয়।