জুয়ার আসর বসাতে মিথ্যাচারসহ বিভিন্ন ঘোষণায় ক্যাসিনোর যন্ত্র আমদানিতে এখন পর্যন্ত ২০ আমদানিকারককে চিহ্নিত করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। প্রাথমিকভাবে সংস্থাটি ৫টি আমদানিকারকের কথা জানালেও পরবর্তীতে আরো ১৫ আমদানিকারককে চিহ্নিত করা হয়। এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে সংস্থাটি সূত্রে জানা যায়।
গতকাল বৃহস্পতিবার পুষ্পিতা এন্টারপ্রাইজের মালিক সুরঞ্জন শেঠ তাপসকে এ অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বিকেল পৌনে ৪টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সংস্থাটির নিজ কার্যালয়ে শুল্ক গোয়েন্দার সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এর আগে পুষ্পিতা এন্টারপ্রাইজের পক্ষে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট বেত্রাবতি ট্রেডের মালিক মো: আশরাফুল ইসলামকে সোমবার ৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে তিনি বলেন, ‘আইনকানুন অনুসরণ করেই আমদানিকারকদের পক্ষে যথাযথ শুল্ককরাদি দিয়ে পণ্যগুলো ছাড় করেছি। কোনও অনিয়ম বা মিথ্যা ঘোষণা ছিল না।’
এর আগে একই কারণে এ ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মালিক আহসানুল আজমকে বুধবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জুতার সরঞ্জাম, কম্পিউটার ও মোবাইল পার্টস কিংবা ফার্নিচার ঘোষণার আড়ালে আমদানি হচ্ছে ক্যাসিনোতে ডিজিটাল জুয়ার সরঞ্জাম- এমন অভিযোগে এই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি নীতির সুযোগ নিয়ে ক্যাসিনোর নামে রোলেট গেম টেবিল, পোকার গেইম, ক্যাসিনো ওয়ার গেইম টেবিল ইত্যাদি সরঞ্জাম আমদানি হয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে জুয়ায় ব্যবহৃত প্রতিটি মেশিন ও সরঞ্জামের দাম প্রায় লাখ টাকা থেকে তিন কোটি টাকা। যেখানে মিথ্যা ঘোষণায় কোটি কোটি টাকার শুল্ককর ফাঁকি দেয়া হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত গত ১০ বছরে ১৯টি আমদানিকারকের হাত ধরে আসা চালানের তথ্য বিশ্লেষণ করে ওই তথ্য-প্রমাণ বেরিয়ে এসেছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য আমদানিকারকরা হলো- এ এম ইসলাম অ্যান্ড সন্স, ন্যানাথ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, পুষ্পিতা এন্টারপ্রাইজ, বি পেপার মিলস লিমিটেড ও এ থ্রি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা গত ১০ বছরের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে প্রাথমিকভাবে অনিয়ম খুঁজে পেয়েছি। কোনো আইনের লঙ্ঘন করেছে কি না তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অনিয়ম পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’