বহু প্রতিক্ষিত বৃটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ (বিবিসিসিআই) নির্বাচনে ১০ প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন । ১৩ জুন বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় মনোনয়ন দাখিলের শেষদিনে বিবিসিসিআই অফিসে প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনারদের কাছে তাঁদের প্রার্থীতা দাখিল করেন । চেম্বার পরিচালনা পরিষদের ২২টি পদের মধ্যে ১০ পদে প্রার্থীতা দাখিল করা হয়েছে । তবে ১০ পদে একক প্রার্থী থাকায় এবছর নির্বাচনে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকছে না। প্রার্থীদের প্রার্থীতা বৈধ থাকলে ২৫ জুন নির্বাচন কমিশন তাঁদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করবে।
১০ পদের মধ্যে সভাপতি পদে মনোনয়ন দাখিল করেছেন বিবিসিসিআই লন্ডন রিজিয়নের সাবেক সভাপতি বশির আহমদ। সহ-সভাপতি পদে মনোনয়ন দাখিল করেছেন মোহাম্মদ মোহাইমিন মিয়া ও ড. সানাওয়ার চৌধুরী । ডাইরেক্টর জেনারেল পদে মনোনয়ন দাখিল করেছেন সাবেক ডিজি সাইদুর রহমান রানু। ডেপুটি ডাইরেক্টর পদে হিলসাইড ট্রাভেলসের স্বত্তাধিকাকারী হেলাল খান, ফাইন্যান্স ডাইরেক্টর পদে জেএমজি এয়ার কার্গোর চেয়ারম্যান মনির আহমদ এবং লন্ডন রিজিয়নের প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন দাখিল করেছেন একাউন্টেন্ট আবুল হায়াত নুরুজ্জামান। তাছাড়া মেম্বারশীপ ডাইরেক্টর পদে গোলাম কিবরিয়া ওয়েস, প্রেস এন্ড পাবলিক রিলেশন্স ডাইরেক্টর পদে এমদাদ আহমদ ও ইন্টান্যাশনাল রিলেশনশীপ ডাইরেক্টর পদে আব্দুল মোমেন মনোনয়ন দাখিল করেছেন।
তবে কমিউনিটি এফেয়ার্স ডাইরেক্টর ও ১১টি রিজিয়ন মিলিয়ে মোট ১২টি পদে কেউ মনোনয়ন দাখিল করেন নি । বিবিসিআইর অন্তবর্তিকালীন কমিটির প্রধান শাহগীর বক্ত ফারুক জানিয়েছেন, সংগঠনের নিয়ম অনুয়ায়ী যেসব পদে মনোনয়ন দাখিল করা হয়নি, নির্বাচনের পর নতুন কমিটি আলোচনা সাপেক্ষে এসব পদে যোগ্য ব্যক্তিদের কোঅপ্ট করবে।
মনোনয়ন গ্রহণ শেষে নির্বাচন কমিশনার বেলায়েত হোসাইন বলেছেন, কমিশন মনোনয়নপত্রগুলো স্ক্রুটুনি করবে। আগামী ২৫ জুনের আগে চেম্বারের অন্তবর্তীকালীন কমিটির প্রধান শাহগীর বক্ত ফারুক মনোনয়ন ফি বাবদ প্রদানকৃত চেক ক্লিয়ার হওয়ার রিপোর্ট দেবেন। সময়মতো চেকের অর্থ বিবিসিসিআইর ব্যাংক একাউন্টে জমা হলে এবং মনোনয়পত্রে অন্য কোনো ত্রুটি না থাকলে ২৫ জুন এই ১০ প্রার্থীকে তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করবেন।
এ বছর ১০ পদে যেহেতু একক প্রার্থী তাই কোনো ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই নির্বাচন হচ্ছে । এতে করে নির্বাচনে ভোটের আমেজ নেই। বৃহস্পতিবার বিকেলে মনোনয়ন দাখিলকালে বেশ উৎসবমুখর পরিবেশ পরিলক্ষিত হয় । এসময় প্রার্থীরা ছাড়াও চেম্বার কার্যালয়ে অন্তবর্তীকালীন কমিটির সভাপতি শাহগীর বক্ত ফারুক, সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মহিব চৌধুরী, ডাইরেক্টর মোহাম্মদ আব্দুল কাইয়ূম, শফিকুল ইসলাম ও সরকুম খালেদসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন ।
মনোনয়ন দাখিলের পুর্বে সভাপতি পদে দুইজন সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম শুনা গিয়েছিলো । তাঁরা হলে মহিব চৌধুরী ও বশির আহমদ। তাই সকলের মধ্যে বেশ কৌতুহল ছিলো। কিন্তু প্রার্থীদের চুড়ান্ত তালিকা ঘোষনার পর জানা যায় সভাপতি পদে শুধু বশির আহমদ মনোনয়ন দাখিল করেছেন । আর মহিব চৌধুরী বশির আহমদকে সমর্থন করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকেন। মহিব চৌধুরী মিডিয়াকে বলেন, নতুন কমিটি সংগঠনকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদী। তিনি নির্বাচনে না দাঁড়ালেও ডাইরেক্টর হিসেবে নতুন কমিটিকে সবধরনের সহযোগিতা করে যাবেন।
প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বশির আহমদ বলেছেন, বিবিসিসিআইর ইতিহাসে এবারের কমিটিতে সবচেয়ে বেশি নতুন প্রজন্মের ব্যবসায়ী স্থান পেয়েছেন। তাঁরা প্রত্যেকেই স্বস্বক্ষেত্রে সফল এবং অভিজ্ঞ।। তিনি আশাবাদী নতুন প্রজন্মের বৃটিশ-বাঙালি ব্যবসায়ীদের অন্তর্ভূক্ত করার মধ্যদিয়ে বিবিসিসিআই নতুন প্রজন্মের সাথে কানেক্ট করতে পারবে এবং তাঁদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে চেম্বার অব কমার্সকে অনেকদূর এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।
ফাইন্যান্স ডাইরেক্টর মনির আহমদ বলেন, মামলার কারণে গত তিন বছর বিবিসিসিআইর কর্মকাণ্ড প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছিলো। এখন একটি ফ্রেশ কমিটি আসছে । তিনি আশাবাদী পারস্পারিক মতবিরোধের উর্ধেওঠে তাঁরা ব্যবসায়ীদের স্বার্থে একযোগে কাজ করবেন । এক প্রশ্নের জবাবে মনির আহমদ বলেন, আমাদের অন্যতম প্রধান কাজ হবে চেম্বারের জন্য একটি নিজস্ব অফিস ভবনের সংস্থান করা । আমাদের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি থাকলে তা বাস্তবায়ন করা অসম্ভব কিছু নয় ।
News credit: Weekly Desh online