ইউরোপ সংস্করণের যাত্রা শুরুর লগ্নে অনাবাসী বাংলাদেশীদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছে বাংলাদেশের সর্বাধিক প্রচারিত জাতীয় দৈনিক ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’।
লন্ডনকে ভিত্তি করে পত্রিকাটির ইউরোপ সংস্করন প্রকাশনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইউরোপসহ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা অনাবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটির সুখ-দুঃখে পাশে থাকার এ ঘোষণা দেন বাংলাদেশের শীর্ষ শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। ‘বসুন্ধরা’র মালিকানাধীন ইষ্ট ওয়েষ্ট মিডিয়া গ্রুপের সদস্য ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’ এখন থেকে ইউরোপে বসবাসরত অনাবাসী বাংলাদেশীদের সমস্যা, সম্ভাবনা, অর্জন সব বিষয়ই পৌছে দেবে বাংলাদেশের মানুষের কাছে, এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, ‘অনাবাসী ও আবাসিক বাংলাদেশীদের মধ্যে বাংলাদেশ প্রতিদিন এখন থেকে কাজ করবে সেতুবন্ধন হিসেবে।
শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় পূর্ব লন্ডনের ইম্প্রেশন ইভেন্টস ভ্যানুতে আয়োজিত এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পরিণত হয়েছিলো বিলেতের রাজনীতিক, সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও সংস্কৃতিকর্মীদের মিলন মেলায়। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম।
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল, প্রবীন সাংবাদিক ও সাহিত্যিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনার মোহাম্মদ জুলকারনাইন ও টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র জন বিগস। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি সৈয়দ নাহাস পাশা, চ্যানেল এস চেয়ারম্যান আহমেদ উস সামাদ চৌধুরী, সুরমা সম্পাদক ফরিদ আহমদ রেজা, জনমত সম্পাদক নবাব উদ্দিন, পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মোহাম্মদ বেলাল আহমেদ, আইওন টিভি র কর্ণধার এনাম আলী এমবিই, সত্যবাণীর প্রধান সম্পাদক সৈয়দ আনাস পাশা, চ্যানেল আই’র রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী শুয়েব, বাংলা পোষ্টের তাজ চৌধুরী, টিভি ওয়ানের গোলাম রসুল, ইকরা বাংলার হাসান হাফিজুর রহমান ও সাপ্তাহিক দেশ সম্পাদক তাইসির মাহমুদ। অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন বিশিষ্ট টেলিভিশন উপস্থাপিকা উর্মী মাজহার।
অনুষ্ঠানের শেষে বাংলাদেশ প্রতিদিনের পক্ষ থেকে সমবেত সুধীদের নৈশভোজে আপ্যায়ন করা হয়। পুরো অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্বাবধানে ছিলেন পত্রিকাটির ইউরোপ ব্যুরো চীফ এএসএম মাসুম ও যুগ্ম ব্যুরো চীফ আফজাল হোসেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপ চেয়ারম্যান আহমদ আকবর সোবহান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে ব্রিটেনের বাংলা মিডিয়া পরিবারের সদস্য হিসেবে গ্রহন করায় লন্ডনের সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে ঘোষণা দেন, বাংলাদেশ প্রতিদিন যদি বসুন্ধরা গ্রুপের পণ্য সামগ্রীর বিজ্ঞাপন পায়, তাহলে ব্রিটেনের অন্যান্য বাংলা মিডিয়াও তা পাবে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রচার সংখ্যার শীর্ষে থাকার কারন বলতে গিয়ে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখে পাশে থাকে বলেই পত্রিকাটি আজ দেশের সর্বাধিক প্রচারিত জাতীয় দৈনিক। বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার প্রকৃত চেহারা তুলে ধরার চেষ্টা করে বলেই বাংলাদেশ প্রতিদিনের উপর পাঠকের এই ভরসা। তিনি বলেন, শুধু নেতিবাচক নয়, দেশের প্রতিটি সেক্টরের ইতিবাচক খবরও যাতে দেশবাসী জানতে পারে বাংলাদেশ প্রতিদিনসহ ইষ্টওয়েষ্ট মিডিয়া গ্রুপের প্রতিটি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিই আমাদের ছিলো এমন পরামর্শ।
বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্ভাবনা সম্পর্কে বলতে গিয়ে দেশের শীর্ষ শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, এই মুহূর্তে বাংলাদেশের মত বিনিয়োগ বান্ধব দেশ পৃথিবীর আর কোথাও নেই। তিনি বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে একমাত্র সামরিক সরকার ছাড়া প্রতিটি সরকারই ছিলো ব্যবসা বান্ধব। ১/১১ সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন বসুন্ধরা চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাংলাদেশকে অন্তত ২০ বছর পিছিয়ে দিয়ে গেছে এই সরকার।’ ব্যবসায়ীদের ১২শ কোটি টাকা ঐসময় ১/১১ সরকার নিয়ে নেয়, যার মধ্যে তাঁর নিজের রয়েছে ২৫৬ কোটি টাকা, এমন তথ্যও দেন আহমেদ আকবর সোবহান।
অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডের বিস্তারিত বর্ননা দেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্ববাসীর কাছে আজ উন্নয়নের রোল মডেল। শেখ হাসিনার নেতৃত্ব আজ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করেছে একটি সম্মানজনক আসনে, এমন মন্তব্য করে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, এই সম্মান ধরে রাখতে মিডিয়ার সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি বলেন, সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা আমরা ইতিবাচকভাবেই দেখি। কিন্তু অবাধ মিডিয়া স্বাধীনতার সুযোগে কেউ কেউ মিথ্যে অপপ্রচারের মাধ্যমে উন্নয়ন কর্মাকান্ড বাধাগ্রস্থ করার অপচেষ্টা করেন, এটি মোটেই কাম্য নয়। প্রবাসীদের বাংলাদেশীদের রাজনীতিতে স্বাগত জানিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, তবে এই পথটি কিন্তু মসৃন নয়। জেলজুলুম সহ্য করার ক্ষমতা নিয়েই রাজনীতিতে নামতে হয়।বাংলাদেশ প্রতিদিনের ইউরোপ সংস্করণের শুভ যাত্রায় অভিনন্দন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে প্রচার শীর্ষে অবস্থানকারী এই পত্রিকাটি লন্ডনসহ ইউরোপেও একই অবস্থানে উঠে আসবে, এমনটিই আমাদের প্রত্যাশা।
স্বাগত বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম বলেন, উত্তর আমেরিকা সংস্করণ প্রকাশের পর বাংলাদেশ প্রতিদিন আজ যাত্রা শুরু করলো ইউরোপে, এটি আমাদের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। লন্ডনকে ভিত্তি করে পত্রিকাটির ইউরোপ সংস্করন প্রকাশের কারন বলতে গিয়ে তিনি বলেন, লন্ডনকে কেন্দ্র ধরেই ইউরোপে বিস্তৃত হয়েছে বাঙালী নামক বটবৃক্ষটির ডালপালা। এই বটবৃক্ষটি এখন মাল্টিকালচারেল ব্রিটিশ সোসাইটির অন্যতম সমৃদ্ধ অংশ। এই অংশকে কেন্দ্র করে গোটা ইউরোপব্যাপী অনাবাসী বাংলাদেশীদের রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক যে বলয় সৃষ্টি হয়েছে সেই বলয়ের সাথে বাংলাদেশের জনগনের একটি সেতুবন্ধন তৈরী করতে চায় বাংলাদেশ প্রতিদিন। বাংলাদেশের একটি শীর্ষ জাতীয় দৈনিক হিসেবে অনাবাসী এই জনগোষ্ঠির প্রতি আমাদের যে দায়বদ্ধতা রয়েছে, সেই দায় থেকেই বাংলাদেশ প্রতিদিনের এই ইউরোপ সংস্করন। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে পরিবার সদস্য করায় ব্রিটেনের বাংলা মিডিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সম্পাদক নঈম নিজাম বলেন, ব্রিটেনসহ ইউরোপে বসবাসরত অনাবাসী বাঙালিদের সুখ-দুঃখের সংগ্রামে এখন থেকে বাংলাদেশ প্রতিদিন সহযোদ্ধা হিসেবে থাকবে। অনাবাসীদের অর্জনের কথা পত্রিকাটি যেমন পৌছে দেবে শিকড় ভূমিতে, ঠিক তেমনি দেশেও তাদের অধিকার রক্ষায় ভূমিকা রাখবে বাংলাদেশ প্রতিদিন।
Copied from সত্যবাণী
London Bangla A Force for the community…
