অভিযানের নামে যৌথবাহিনী সাতক্ষীরাকে মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত করেছে বলে অভিযোগ করেছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি।
এমন অভিযোগ করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, “যৌথবাহিনী তিন দিনের অভিযানে সাতক্ষীরা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। মনে হয়, সেখানে ভূমিকম্প হয়েছে। বাতাসে কান্না ভাসছে, এখানে সেখানে আগুন জ্বলছে। সব হারিয়ে মানুষ এখন পাগলপ্রায়। গত ১১ মাসে সেখানে বিএনপি ও ১৮ দলের ৩৩ জন নেতাকর্মী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন। মনে হয়, এটা মৃত্যু উপত্যকা।”
সোমবার সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে টানা ৮৩ ঘণ্টার অবরোধের তৃতীয় দিনের চিত্র তুলে ধরতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন।
সংবিধানের দোহাই রাষ্ট্রের মালিক জনগণের ওপর নির্যাতন অতীতের সব সীমা অতিক্রম করেছে বলেও দাবি করেন নজরুল ইসলাম।
নির্বাচনের নামে দেশে নাটক চলছে এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, “জনগণকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। সরকারকে বলবো, জনগণের রাষ্ট্র জনগণের কাছে সর্ম্পণ করুন। গণমাধ্যমে এসেছে ক্ষমতাসীনদলের প্রার্থীরা নির্বাচনে যে হলফনামা দিয়েছে, তা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে ফেলতে সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ করছে। এখন জনগণের মতো আমরা অপেক্ষা করছি সরকারের এমন আবদার ইসি পূরণ করে কি না।”
নজরুল ইসলাম আরো বলেন, “জনগণের ওপর যে গুলি চালানো হচ্ছে তা সংবিধান রক্ষা নয় বরং ক্ষমতায় থাকার অপচেষ্টা। রাষ্ট্র যখন তার জনগণের ওপর নির্যাতন করে তখন জনগণ কোথায় যাবে।”
আওয়ামী লীগের প্রয়োজন শুধু ক্ষমতা- এমন দাবি করে নজরুল ইসলাম বলেন, “জামায়াত বাদে নিবন্ধিত রাজনৈতিক ৪০টির মধ্যে আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে ১২ টি দল। পত্রপত্রিকায় দেখলাম প্রার্থীরা এলাকা নেই। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কমনওয়েলথ ও যু্ক্তরাজ্য বলছে নির্বাচনে তারা পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। কিন্তু এতেও আওয়ামী লীগের কোনো সমস্যা নেই। কারণ নির্বাচন কমিশন আছে যারা তাদের দলের প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করে দিবে।”
মঙ্গলবার মতিঝিলে হেফাজতে ইসলামীর সমাবেশে সরকার অনুমতি না দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তারা সব দল মত দমনের সরকার। স্বাধীন দেশে মানুষের কথা বলার অধিকার তারা কেড়ে নিয়েছে। তাদের আর যাই বলা হোক না কেন গণতান্ত্রিক সরকার বলা যায় না।”
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন দলের আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, সহ-দফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করিম শাহীন ও শামীমুর রহমান শামীম।