আন্তর্জাতিক লবিংয়ের ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার এখন শূন্যের কোটায় অবস্থান করছে। ক্ষমতার মেয়াদ আর মাত্র ১ মাস ৮ দিন বাকি থাকলেও আগামীতে পুনরায় ক্ষমতায় আসতে এখন পর্যন্ত কোনো দেশের সমর্থন আদায় করতে পারেনি। ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নিয়ে কথাবার্তা হলেও আগামী নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের লোকজন সরকারের সঙ্গে কোনো কথাই বলছে না। এমনকি আওয়ামী লীগের বিপদে-আপদে যারা সব সময় পাশে এসে দাড়িয়েছে সেই ভারতও এবার আগামী নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগকে কোনো আশার বাণী দিচ্ছে না।
গত সপ্তাহে অ্যানালাইসিস বিডির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পর ভারতও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। ভারতের পিছু টান দেয়ার কয়েকটি কারণও উল্লেখ করা হয়েছিল সেই প্রতিবেদনে।
অ্যানালাইসিস বিডির অনুসন্ধানে আরও গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে যার কারণে ভারত আগামীতে আর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসতে সমর্থন দেবে না।
একাধিক বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, কোটা আন্দোলনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের জনপ্রিয়তা যাছাই করার জন্য ভারত সরকার গোপনে একটি টিম পাঠিয়েছিল বাংলাদেশে। যারা বাংলাদেশে প্রায় ৩৫টি জেলায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেছে। তাদের জরিপে উঠে এসেছে অধিকাংশ মানুষ এবার আওয়ামী লীগকে চাচ্ছে না।
জরিপের এই রিপোর্ট ভারত সরকারের হাতে যাওয়ার পরই আওয়ামী লীগের বিষয়ে তাদের নেতিবাচক ধারণা চলে আসে। যার কারণে এখন পর্যন্ত তারা শেখ হাসিনাকে আগামী নির্বাচন নিয়ে কিছুই বলছে না। এরপর নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সমর্থনও ভারতকে ভাবিয়ে তুলেছে।
ভারতের এই গোপন জরিপের ফলাফল কোনো গণমাধ্যমে প্রকাশ না হলেও দিল্লির বাংলাদেশ দূতাবাসে এ সংবাদটি এসেছে। এছাড়া ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন থেকেও সরকারের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের কয়েকজনকে আকারে ইঙ্গিতে বিষয়টি বলে দেয়া হয়েছে।
ভারত মনে করছে, সাধারণ ইস্যুতেও জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে মাঠে নেমে আসছে। এতে বুঝা যায় সরকারের কর্মকাণ্ডে জনগণ সন্তুষ্ট নয়। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন থেকেও ভারত সরকারকে বলা হয়েছে যে, জনমতকে উপেক্ষা করে ৫ জানুয়ারির মতো এবার আর কিছু করা ঠিক হবে না। কারণ, এমনিতে বাংলাদেশে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব আছে মানুষের মধ্যে। একটি দলের কারণে দেশটির জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হলে পরবর্তীতে সমস্যা হবে।