ভারতের লোকসভা নির্বাচনের আর কয়েক মাস বাকি রয়েছে। সেই লক্ষে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য কংগ্রেসে রদবদল করে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী প্রেসিডেন্ট করলেন বর্ষীয়ান নেতা সোমেন্দ্রনাথ মিত্রকে। বিদায়ী সভাপতি অধির রঞ্জন চৌধুরীকে দেওয়া হয়েছে ক্যাম্পেইন কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব।
সোমেন বাবুর এই নিয়োগ নিয়ে ইতোমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে শুরু হয়ে গেছে গুঞ্জন। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, কংগ্রেসের সঙ্গে মমতা ব্যানার্জির তৃণমূলের জোট এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
একজন বিশেষজ্ঞ বলছেন, অধীর ঘোর মমতা বিরোধী। আর উনি কোনোমতেই এই জোট মেনে নিতে পারতেন না। সোমেন মিত্রকে সভাপতি করে কংগ্রেস মমতা ব্যানার্জিকে বার্তা দিল যে, তারা জোট করে লোকসভা নির্বাচন লড়তে চায়।
মমতার সঙ্গে সোমেন এর অম্লমধুর সম্পর্ক। সোমেন প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন ১৯৯২ সাল থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত। ওই সময় মমতা বারবার সোমেনের নেতৃত্বের বিরোধিতা করেন।
তিনি সভাপতি থাকাকালীনই মমতা কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে এসে তৃণমূল গঠন করেন। ১৯৯৮ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় কংগ্রেস মাত্র একটি আসন পাওয়ায় পরাজয়ের দায় স্বীকার করে সোমেন পদত্যাগ করেন।
সেই সোমেন ২০০৯ সালে তৃণমূলে যোগ দেন এবং ডায়মন্ডহারবার কেন্দ্র থেকে তৃণমূল সাংসদ নির্বাচিত হন। তবে মমতা-সোমেন সম্পর্কে কিছুদিনের মধ্যেই চিড় ধরে। ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটেও শিখা তৃণমূলের হয়ে জেতেন। ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে সোমেন তৃণমূলের সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে কংগ্রেসে আবার ফিরে আসেন।
গত কয়েক বছরে সোমেন যদিও রাজনীতির ময়দান থেকে অনেকটা দূরে সরে থেকেছেন। তার পরেও তাকে আবার দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে কংগ্রেসের এক মহলে খুশির হাওয়া।
‘সোমেন বাবু অনেক বিচক্ষণ। অধীরের মমতা বিরোধিতা করে আমাদের কোনো লাভ হয়নি। বরং ক্ষতি হয়েছে; কারণ একের পর এক বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। আমাদের এখানে যেভাবে বিজেপি বাড়ছে, কংগ্রেসকে এখন তৃণমূলের হাত ধরেই এগিয়ে যেতে হবে’, বলেছেন এক কংগ্রেস নেতা।