ননদকে হত্যার দায়ে ভাবী-ভাইসহ একই পরিবারের ৬জনকে ৫৫ বছরের জেল দন্ড দিয়েছে সেন্ট আলবান্স ক্রাউন কোর্ট। নিহতের নাম শাহানা উদ্দিন। বয়স ১৯। অভিযুক্তরা তাকে প্রায় এক বছর ঘরে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে হত্যা করেন বলে আদালতের শুনানিতে উল্লেখ করা হয়েছে। হত্যার দায়ে অভিযুক্ত প্রধান আসামী শাহানার ভাবী সালমা বেগমকে যাবজ্জীবন জেল দন্ড দিয়েছে আদালত।
১৯ বছরের শাহানা হত্যার প্রধান অভিযুক্ত হলেন তার ভাবী সালমা বেগম। ওয়াটফোর্ডের এই ঘরে স্বামী এবং ননদ ও দেবরদের নিয়ে বসবাস করতেন তারা। আদালতের শুনানিতে বলা হয়েছে ৩২ বছরের ভাবী সালমা বেগম ছিলেন ঘরের নিয়ন্ত্রক। স্বামী সুহাইল উদ্দিনের ছোট ভাই-বোনেরা কোনো কারণে কথার অবাধ্য হলে তিনি স্বামীকে দিয়ে তাদের শায়েস্তা করাতেন। গত বছর অক্টোবরে তাদের ঘরের বাথরুম থেকে শাহানার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রায় বছরব্যাপি তাকে নির্যাতন করা হত বলে আদালতে উল্লেখ করা হয়। শাহানার শরীরে প্রায় ৫৪টি মারাত্বক চিহ্ন পাওয়া যায়। তাকে সীমিত আকারে বাথরুম ব্যবহারের সুযোগ দেয়া হতো এমনকি পানি পানের ক্ষেত্রেও ছিল সীমাবদ্ধতার কঠোরতা। তাই সে বিভিন্ন প্রোডাক্টের বোতলে লুকিয়ে পানি পানের চেষ্টা করতো।
ভাবীর নির্যাতনের ভয়ে সব সময় ভীত থাকতেন শাহানা। স্কুলে সহপাটির সঙ্গে এ বিষয়ে কিছু কথা বললেও এ বিষয়ে শিক্ষকদের প্রশ্ন এড়িয়ে যেতেন তিনি। একটি চিঠিতে তিনি এ ঘর ত্যাগ করে অন্যত্র বসবাসের কথাও উল্লেখ করেন একবার।
শাহানাকে হত্যার দায়ে ভাবী সালমা বেগমকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। তাকে অন্ত:তপক্ষে ১৮ বছর জেলদন্ড ভোগ করতে হবে। তার স্বামী এবং নিহত শাহানার বড় ভাই সুহাইল উদ্দিনকে দেয়া হয়েছে ১০ বছরের জেলদন্ড। এছাড়াও শাহানাকে নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যায় কোনো প্রকার বাধা প্রদান থেকে বিরত থাকার অভিযোগে তার আরো দুই ভাই যথাক্রমে জুহাল উদ্দিন, জুয়েল উদ্দিন, তুহেল উদ্দিন এবং বোন রেহানা উদ্দিনকে বিভিন্ন মেয়াদে জেলদন্ড দিয়েছে আদালত। জুহালকে ৯ বছর, জুয়েলকে ৮ বছর, তুহেলকে সাড়ে ৬ বছর এবং বোন রেহানাকে ৫ বছরের জেলদন্ড ভোগ করতে হবে। তবে আদালতে এ পরিবারের পক্ষ থেকে শাহানাকে কেনো এভাবে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে সে বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি।