দেশে দুই বিদেশিকে হত্যাসহ একের পর এক নাশকতামূলক কা-ের জেরে র্যাব-পুলিশের পাশাপাশি সবকটি গোয়েন্দা সংস্থা অধিকতর তৎপর হয়ে ওঠেছে। এর অংশ হিসেবে দেশের শতাধিক রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবীসহ বিভিন্ন পেশার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সার্বিক কর্মকা-ে কড়া নজরদারি শুরু করেছে একটি গোয়েন্দা সংস্থা। সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, দুই বিদেশি হত্যা, রাজধানীর হোসেনি দালানের তাজিয়া মিছিলে গ্রেনেড হামলা ও পুলিশের এএসআই ইব্রাহিম মোল্লা হত্যাকা- একসূত্রে গাঁথা। এসব ঘটনার নেপথ্যে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত রয়েছে। এই চক্রান্তকারীদের শনাক্তকরণ ও আইনের আওতায় আনতেই তাদের সার্বিক কর্মকা-ের খোঁজখবর রাখছেন গোয়েন্দারা।
এই তালিকায় সবচেয়ে বেশি নাম রয়েছে জামায়াত-বিএনপি ঘরানার রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির। এ ছাড়া মানবাধিকারকর্মী, দেশি-বিদেশি বেসরকারি সংস্থার কর্তাব্যক্তিদের ওপরও নজরদারি করা হচ্ছে। এসব ব্যক্তি কখন, কোথায়, কার সঙ্গে দেখা করছেন, সাক্ষাৎ দিচ্ছেন, টেলিফোনে কথা বলছেন তা নজরে রাখছে গোয়েন্দারা। তাদের কেউ কেউ ঢাকায় অবস্থিত কয়েকটি প্রভাবশালী রাষ্ট্রের দূতাবাসে আসা-যাওয়া করছেন কিনা তা নিবিড় নজরদারিতে রাখা হচ্ছে।
গোয়েন্দা সূত্র বলছে, সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এসব ব্যক্তি নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে বলে সরকারের কাছে তথ্য আসছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতেই তাদের অফিস, বাসা-বাড়িতে সার্বক্ষণিক নজরদারি করছে গোয়েন্দারা। এর মধ্যে দুই বিদেশি নাগরিক খুনের পরিকল্পনা ও অর্থায়নে জড়িত থাকার অভিযোগে বিএনপির কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হয়েছে। তারা যেন বিদেশে পালাতে না পারে সেজন্য সব ইমিগ্রেশন চেক পয়েন্টে একটি তালিকাও পাঠানো হচ্ছে বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, দেশকে অস্থিতিশীল করতে সরকারবিরোধী নানা পক্ষ এখন একজোট হওয়ার চেষ্টা করছে। এ নিয়ে নানান ধরনের চক্রান্ত করতে তারা সক্রিয় রয়েছে। দুই বিদেশি খুনসহ দেশে একের পর এক স্পর্শকাতর কয়েকটি ঘটনায় গভীর ষড়যন্ত্রের কিছু তথ্য-উপাত্ত ইতোমধ্যে গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে। প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে আবার শুরু হয়েছে অধিকতর অনুসন্ধান। ষড়যন্ত্রকারীদের কোনো কোনো অংশ আবার নিষিদ্ধ বা নিষিদ্ধ নয়, এমন জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে সক্রিয় করে তোলার জোর চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও পুলিশের কাছে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য এসেছে। দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে পরিকল্পিত কিছু নেতিবাচক কর্মকা-ের মাধ্যমে নাজুক করে তুলতে ইতোমধ্যে অর্থের লেনদেন হয়েছে বলেও তথ্য পাচ্ছে গোয়েন্দারা। এখন অর্থদাতা এবং গ্রহীতা দুপক্ষকেই আইনের আওতায় আনতে মাঠে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দারা।