১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫: ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির(ভারতীয় জনতা পার্টি) নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী গরু পাচার বন্ধে কঠোর হওয়ার পর বাংলাদেশে বেড়ে যায় গরুর মাংসের দাম। আসন্ন কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে বাংলাদেশের বাজারে গরুর দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা তৈরি হয়। এমন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে ঈদ উপলক্ষে সীমান্ত দিয়ে আসছে ভারতীয় গরু।
বাংলাদেশের অন্যতম দৈনিক প্রথম আলো বুধবার এক নিজস্ব প্রতিবেদকের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ‘বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে গরু আসছে। কিছু কিছু স্থানে কড়াকড়ি থাকলেও বেশ কয়েকটি করিডর দিয়ে গত বছরের তুলনায় বেশি গরু এসেছে।’
ঐ প্রতিবেদনে তারা জানায়, গরু আসছে বাংলাদেশের পূর্বের মিয়ানমার সীমান্ত দিয়েও।তবে সাতক্ষীরা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে গরু কম আসছে।
একই ধরনের তথ্য জানায় দৈনিক ইত্তেফাক। মঙ্গলবার রাজশাহী অফিসের বরাতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তারা জানায়, ‘সারাবছর বন্ধ থাকার পর শেষ মুহূর্তে ভারতীয় গরু-মহিষ দেশে প্রবেশ করায় লাভ-ক্ষতির দোলাচলে পড়েছেন দেশের খামারিরা। বর্তমান বাজার দরে গরু বিক্রি করলে কিছুটা হলেও লাভের মুখ দেখবেন বলে আশা করছেন তারা। এদিকে ঈদের আগ পর্যন্ত ভারত থেকে অতিরিক্ত গরু-মহিষ আমদানি হলে লাভ দূরে থাক, খামারিদের লোকসান গুনতে হবে বলেও মনে করছেন তারা।’
এছাড়া ভোরের কাগজ ১১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানায় দেশের বাজারে বৈধ-অবৈধ উভয় পথে আসছে ভারতীয় গরু আসায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।
ঐ প্রতিবেদনে তাদের দাবি, ‘৫ সেপ্টেম্বর শনিবার থেকে এসব গরু আসতে শুরু করে। বেনাপোল সীমান্তের পাশাপাশি টেকনাফ সীমান্ত দিয়েও গরু আসছে।’
দৈনিক প্রথম আলো তাদের প্রতিবেদনে ‘সূত্রের’ বরাতে জানিয়েছে, ‘বি টু বি (বাংলাদেশের ব্যবসায়ী ও ভারতের ব্যবসায়ী) সিস্টেমে কুরবানির ঈদ উপলক্ষে দেশে গরুসহ অন্যান্য পশু আসছে। তবে ভারতীয় গরু না আসার সংবাদে দেশীয় গরুর ব্যাপারীরা দেশীয় গরুর প্রতি ঝুঁকেছিলেন। এখন আবার সীমান্ত দিয়ে গরু আসায় এসব ব্যবসায়ীরা হতাশ।’
তবে এসব গরু আসার প্রতিক্রয়ায় ভোরের কাগজের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ‘ব্যবসায়ীদের একাংশ মনে করেন এতে দেশের কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। অন্যপক্ষের দাবি, সহনীয় দামে দেশের মানুষ কুরবানি দেয়ার সুযোগ পাবে।’
প্রসঙ্গত, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্র অনুযায়ী ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৮৬ লাখ ২২ হাজার গরু-মহিষ জবাই হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৭২ লাখই গরু। ঈদুল আজহাতে প্রায় ৩৫ লাখ গরু কুরবানি হয়েছিল। প্রতিবার দেশীয় গরুতেই কুরবানির ৭০ শতাংশ চাহিদা মেটে। বাকি ৩০ শতাংশ ভারত থেকে আসে।’