নানা ধরনের স্মাট প্রেজেন্টেশন এবং ইন্ডাস্ট্রি নেতৃবৃন্দের সমর্থন নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে যাত্রা শুরু করলো ওনলাইন ওর্ডারিং সিষ্টেম প্রোভাইটার শেফ অনলাইন। স্মাট সলিউশন ফর স্মাট বিজনেস-এই স্লোগানকে সামনে রেখে সোমবার ১০ আগষ্ট মিডিয়া লনচিং-এর মাধ্যমে সূচনা। এতে বক্তারা বলেন, বৃটিশ বাংলাদেশী রেস্টুরেন্ট ইন্ডাস্ট্রিকে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে এগোতে হবে। টেকনোলজির সাথে অগ্রসর হতে না পারলে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে। এ ক্ষেত্রে কমিশন ফ্রি শেফ অনলাইন হতে পারে সত্যিকারের সহযোগি। অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে কোম্পানীর পক্ষ থেকে বলা হয়, শেফ অন লাইনের ডিজাইকৃত কাস্টমাইজ ওয়েসাইট (ওনলাইন ওডারিং সুবিধাসহ)-এর মাধ্যমে যে কোনো মুহুর্তে সহজেই কাস্টমাররা খাবার অর্ডার দিতে পারবেন। আর নিজস্ব এ্যাপস ব্যবহার করে মোবাইল থেকেই আসবে ওর্ডার। ই-কমার্স ওয়েব ডিজাইন ও সার্ভিস ৬ মাসের জন্য থাকবে ফ্রি। তারপর যতো বিশাল অংকের বিক্রি হোক না কেনো, শেফ অনলাইন শুধুমাত্র মাসে সামান্য অর্থ চার্জ করবে ( সাপ্তাহে ১২ পাউন্ড ২৫ পেন্স)। থাকবে না কেনো কমিশন।
এলবিসি নিউজ প্রেজেন্টার লিসা আজিজের পরিচালনায় লন্ডনের ডকল্যান্ডের ক্রাউন প্লাজা হোটেলে শেফ অন লাইনের মিডিয়া লনচিং-এ সাংবাদিক ছাড়াও বিপুল সংখ্যক রেস্টুরেন্ট মালিক, ব্যবসায়ি সংগঠনের নেতা এবং টেলিভিশন ডিরেক্টররা অংশ নেন।
স্বাগত বক্তৃতা করেন বাংলাদেশী শীর্ষ স্থানীয় শিল্পপতি আম্বর আইটি এবং শেফ অন লাইনের চেয়ারম্যান শওকত আজিজ রাসেল। সমাপনী বক্তৃতা করেন শেফ অনলাইন এবং সালিক এন্ড কোং-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর সফল প্রোপাটি ব্যবসায়ী এম এ মুনিম সালিক। শওকত আজিজ রাসেল, চেয়ারম্যান শেফ অনলাইন : শওকত আজিজ রাসেল বলেন, আমাদের ৬শতাধিক আইটি ওয়ার্কার রয়েছেন, আছেন দেড়শ সফটওয়্যার ইনজিনিয়ার। যারা গ্রামিন ফোনসহ বিভিন্ন বড় বড় প্রতিষ্টানকে ইন্টারনেট সাপোর্ট দিচ্ছেন। সেই সূত্রে সেফ অন লাইনের টেকনোলজি সাপোর্ট দেয়া হবে সহজ কাজ। তিনি বলেন, এখন টিজিটাল সময়। সবাইকে এই সময়ের সাথে থাকতে হবে। আর ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে চায় শেফ অনলাইন। আমরা রেস্টুরেন্ট মালিক এবং স্টাফকে এমন ভাবে সহযোগিতা করবো যাতে তারা সহজেই তাদের পরিবর্তিন ম্যানু আপডেড করতে পারেন। মার্কেটিং এবং প্রোমোশনাল অফারেও সবসময় সহযোগিতা করা হবে। আর বিশেষ করে রেস্টুরেন্ট মূলত তার নিজের কাস্টমারকে নিজস্ব ওয়েব প্লাটফর্মের আওতায় আনতে পারবে। যার ফলে থার্ড পার্টির নিয়ন্ত্রন কমে যাবে বা থাকবে না এবং মাত্রাতিরিক্ত কমিশনও দিতে হবে না। এম এ মুনিম সালিক, এমডি শেফ অনলাইন : এম এ মুনিম সালিক বলেন, অপতত শেফ অন লাইন গুরুত্ব দিচ্ছে প্রত্যেক রেস্টুরেন্ট এর নিজস্ব ওনলাইন প্লাটফর্ম তৈরীর ব্যাপারে। তবে পর্যায়ক্রমে শেফ অন লাইনও রেস্টুরেন্টের জন্য নিজ উদ্যোগে মার্কেটিং করবে। তিনি জানান, বৃটেনে সবমিলিয়ে প্রায় ৮৪ হাজার রেস্টুরেস্ট রয়েছে। এর মধ্যে টেকওয়ে ও ফাস্টফোড সেক্টরের মূল্য প্রায় ৩০বিলিয়ন পাউন্ড। ৪০ ভাগ বর্তমানে ওনালাইনে ওর্ডার দিচ্ছেন, যার মধ্যে ৭০ ভাগ ব্যবহার করছেন স্মাট ফোন। কিন্তু টেকনোলজির এই অগ্রসরতার সাথে ততটো দৌড়াতে পারছেনা বাংলাদেশী রেস্টুরেন্টগুলো। ২৪৩০টি রেস্টুরেন্ট-এর ওপর আমাদের নিজস্ব সার্ভে থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ৮৮% বাংলাদেশী/ এশিয়ান রেস্টুরেন্টের নিজস্ব অন লাইন ওর্ডারিং ফেসেলিটি নেই। মাত্র ১২% এর মতো নিজের প্লাটফর্ম ব্যবহার করছেন, আর বাকী অনেকেই থার্ডপার্টি প্লার্টফর্মে প্রবেশ করে বেশী বেশী কমিশন দিচেছন এবং ব্যবসা চলে যাচেছ নিজের নিয়ন্ত্রনের বাইরে।
অনুষ্ঠানের সূচনায় ভিডিও ও স্লাইড প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে প্রজেক্ট সম্পর্কে তুলে ধরা হয়। এতে চ্যানেল এস চেয়ারম্যান আহমেদুস সামাদ চৌধুরী জেপি, চেম্বার অব কমার্স-এর সাবেক প্রেসিডেন্ট মুকিম আহমদ, বর্তমান প্রেসিডেন্ট মাহতাব চৌধুরী, বৃটিশ বাংলাদেশী ক্যাটারার্স এসোসিয়েশন প্রেসিডেন্ট ইয়াফর আলী, এশিয়ান ক্যাটারিং-এর চেয়ার ইয়াওর খান এবং জিএসসি প্রেসিডেন্ট নরুল ইসলাম মাহবুব শেফ অনলাইনকে স্বাগত জানিয়ে বক্তৃতা করেন।
তারা বলেন, এখন সময় এসেছে পরিবর্তনের। আইটি বিপ্লবের। কাস্টমাররা দ্রুতই ওনালাইন ওডারিংএর দিকে যাচ্ছেন। বাংলাদেশী রেস্টুরেন্ট গুলোর আর পিছিয়ে থাকার সুযোগ নেই। তবে থার্ড পার্টি কমিশন থেকে বের হয়ে সবাইকে ব্যবসাকে নিজের নিয়ন্ত্রনে নিতে হবে। অনুষ্ঠানের শেষ দিকে সাংবাদিকের সাথে প্রশ্ন উত্তর পর্বে চেয়ারম্যান ও এমডি‘র সাথে যোগদেন শেফ অন লাইনের ডিরেক্টর হাফিজুর রহমান রিমন এবং মার্কেটিং ডিরেক্টর আখতারুজ্জামান।
সার্ভিস ইউজাররা যা বলেন: শুরুতে সরাসরি এবং ভিডিও‘র মাধ্যমে সেফ অন লাইনের ইউজার হিসেবে অভিগগতা তুলে ধরেন বার্নেট এর বেলিফ রেস্টুরেন্ট-এর মালিক মো তফাজ্জুল, সারের রিপলি গার্ডেন এর ডিরেক্টর সাহেদ রহমান এবং কেন্ট এর সুখ্যাত রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী মিঠু চৌধুরী। মো তফাজ্জুল বলেন, ইতিমধ্যে আমি শেফ অন লাইন ব্যবহার করেছি। আমি খুবই খুশী তাদের প্রফেশনাল সার্ভিসে। তাদের কথায় কাজে মিলে আছে। এতে আমার নিজের স্টাফ ও কস্ট সেইভ হচেছ। মিঠু চৌধুরী বলেন, আমি খুব সহজেই শেফ অন লাইন ব্যবহার করছি এবং এতে আমার দারুন উপকার হচেছ। তাদের সেবার মানও খুব ভালো। আর আমাকে কোনো কমিশন দিতে হচেছ না। গেস্ট স্পিকাররা যা বলেন: সফল রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী আহমদ উস সামাদ চৌধুরী জেপি বলেন, শেফ অন লাইন আমাদের কমিউনিটিরই একটি প্রজেক্ট। বাংলাদেশী সকল রেস্টুরেন্ট-এরই এর সেবা নেয়া এবং সহযোগিতা করা দরকার। শীর্ষ ব্যবসায়ী মুকিম আহমদ বলেন, আমি শেফ অন লাইনে স্বাগত জানাই এবং বিশ্বাস করি এর মাধ্যমে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। মাহতাব চৌধুরী বলেন, শেফ অনলাইন এর সূচনায় আমি গর্বিত। এটি সত্যিই এক ব্যতিক্রমী প্রোডাক্ট। ইয়াফর আলী বলেন, এখন আর ৬০এর দশকের মানসিকতায় থাকলে চলবে না। আমাদেরকে শেফ অন লাইনের মতো উচ্চমানের টেকনোলজি সেবা নিতে হবে। ডিজিটাল সময়ে ডিজিটাল কাস্টমারদের যথার্থ সেবা দিতে হবে। ইয়াওর খান বলেন, কিছু কিছু অন লাইন প্রোভাইডার শুধু বেশি বেশি কমিশন নিচেছ না, তারা আমাদের ডাটাবেজ নিয়ে যাচেছ। এক পর্যায়ে এই ব্যবসা তারাই নিয়ন্ত্রন করবে আর আমরা বসে বসে দেখবো। তবে সময় আছে এখনো সচেতন হওয়ার। কমিশন ফ্রি শেফ অন লাইন এ ক্ষেত্রে আমাদের জন্য এক নতুন সম্ভাবনা। কেন্টের সফল রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম মাহবুব বলেন, এখন রেস্টুরেন্ট ব্যবসার কঠিন সময় যাচেছ। এই সময়ে কম খরচে টেকনোলজির মাধ্যমে অগ্রসর হওয়ার সুযোগ আমাদের জন্য আশির্বাদ। এক পলকে শেফ অন লাইনের সার্ভিস: অন লাইন ওর্ডারিং: এই সুবিধা থাকবে ই কমার্স ওয়েবসাইট এবং এ্যাপস এর মাধ্যমে। এ্যাপল এবং এন্ড্রোয়েড- দুই ধরনের ডিভাইস সুবিধা থাকবে। কাস্টমাররা যে কোনো মুহুর্তে ইমেল বা ট্যাক্স-এর মাধ্যমে টেবিল রিজার্ভ করতে পারবে। কাস্টমার আকর্ষনের জন্য ওনলাইন ওর্ডারের ক্ষেত্রে ডিসকাউন্ট,ওফারর্স এবং লোয়েলিটি সুবিধা থাকবে। ইপস : সহজে বিল, সেইলস রিপোর্ট এবং পুরো একাউন্ট দেখাশুনার জন্য দেয়া হবে ইপস সেবা। এ জন্য সংক্ষিপ্ত ট্রেনিং দেয়া হবে। শেফ অনলাইন মার্কেটিং : পর্যায়ক্রমে সেবা গ্রহনকারী রেস্টুরেন্টগুলোর জন্য মার্কেটিং সেবা দেয়া হবে। সোস্যাল মিডিয়া,ট্যাক্স ম্যাসেজ,ইমেল-ইত্যাদি নানা ভাবে রেস্টুরেন্টকে প্রোমোট করা গবে।