১৩ জুলাই, ২০১৫: সিলেটে চুরির অভিযোগে কিশোর রাজন হত্যার ঘটনার সাথে জড়িত প্রধান আসামি মুহিত আলমের ভাই অন্যতম আসামী কামরুল ইসলাম সৌদি আরবে পালিয়ে গেছে বলে জানা গেছে। সোমবার ওসমানী বিমান বন্দর থানার ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ এতথ্য জানিয়েছে। তবে পুলিশ একথা অস্বীকার করেছে।পুলিশ জানিয়েছে, তার বিদেশ যাওয়া রুখতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কামরুল ইসলামের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে পুলিশ।
সিলেট শাহজালাল বিমান বন্দরের কাস্টমস পরিদর্শক খায়রুল ফজল বলেন, ‘১০ জুলাই শুক্রবার দুপুর দুইটায় বিজি ৪০৪ বিমানে করে সিলেট শাহজালাল বিমান বন্দর ত্যাগ করে কামরুল।’
অন্যদিকে জালালাবাদ থানা পুলিশ নির্মম এ হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই গোটা এলাকায় রেড এল্যার্ট জারি করার পড়ও কেমন করে কামরুল পালিয়ে গেলো এ নিয়ে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ মানুষের মনে এখন নানা প্রশ্ন। চলছে আলোচনা ও সমালোচনাও।
এদিকে চাঞ্চল্যকর শিশু রাজন হত্যায় জড়িতদের আজকের (সোমবার) মধ্যে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। একই সাথে দ্রুত আসামিদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
এদিকে ১৩ বছরের শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যার প্রধান আসামি মুহিত আলম এর ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। আবার ভোরের দিকে অভিযান চালিয়ে খুনের সাথে জড়িত সন্দেহভাজন হিসেবে মুহিতের তালতোভাই ইসমাঈলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া হত্যাকান্ডের স্থানে থাকা সবধরনের দোকানপাঠ পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার দিয়েছে পুলিশ।
সোমবার দুপুর একটার দিকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে নিহত রাজনের পোস্টমর্টেম রিপোর্ট থানায় পৌঁছেছে। প্রতিবেদনে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক ডা. তাসমিনা ইসলাম উল্লেখ করেন রাজনের শরীরে ৬৪টি মাল্টিপল আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়া মত্বিষ্কে রক্তক্ষরণ জনিত কারণে রাজনের মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জালালাবাদ থানার ওসি আখতার হোসেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শিশু সামিউলের বুকে, মাথায়, দুই হাতে, পায়ে, হাঁটুতে ও গোড়ালিতে ফোলা জখম ছিল।
গত বুধবার ভ্যানগাড়ি চুরির অপবাদ দিয়ে সদর উপজেলার বাদেওয়ালী গ্রামের মাইক্রো চালক আজিজুর রহমানের ১৩ বছরের পুত্র সামিউল আলম রাজনকে তেমুখী এলাকায় দোকানের খুঁটির সাথে বেধে নির্মমভাবে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় শেখপাড়া গ্রামের এক পরিবারের তিন ভাই মুহিত, আলী, কামরুল এবং চৌকিদার ময়নাকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করে পুলিশ ও নিহতের বাবা আজিজুর রহমান।