ব্রেকিং নিউজ
Home / বাংলাদেশ / রাজ্জাকের ওপর লোমহর্ষক নির্যাতনের চাঞ্চল্যকর তথ্য, মিয়ানমার যাচ্ছে ছয় সদস্যের বিজিবি

রাজ্জাকের ওপর লোমহর্ষক নির্যাতনের চাঞ্চল্যকর তথ্য, মিয়ানমার যাচ্ছে ছয় সদস্যের বিজিবি

06২৪ জুন ২০১৫: বিজিবি নায়েক রাজ্জাকের ওপর মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির নির্যাতনের লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন তাদের হাত থেকে বেঁচে ফেরা জেলে লালমোহন দাস। গত ১৭ জুন টেকনাফের নাফ নদী থেকে বিজিবির নায়েক রাজ্জাকের সাথে জেলে লালমোহন ও তার ভাগ্নে জীবন দাসকেও ধরে নিয়ে যায় বিজিপি।

লালমোহন জানান, দিনভর নির্যাতনের পর ছেড়ে দেয়া হয় ভাগ্নেসহ তাকে। পরে ওই দিনই জীবন বাজি রেখে নদী সাঁতরে তারা ফিরে আসেন। তিনিই বিজিপির নির্মমতার খবর সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। লালমোহন বলেন, ‘রাজ্জাকসহ বিজিবির সদস্যরা নিজেদের নৌকায় ছিলো, সেখানেই বিজিপি গুলি চালায়। রাজ্জাক বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মিয়ানমারের সদস্যরা তাকে ঝাপটে ধরে বেঁধে ফেলে এবং মারধোর করে।’

১৭ জুন টেকনাফের নাফ নদীর জাদিমুরা পয়েন্ট সীমান্ত এলাকায় অনুপ্রবেশ করে কীভাবে টহলরত বিজিবির নায়েক রাজ্জাককে মিয়ানমারের বিজিপি ধরে নিয়ে যায় সেই চাঞ্চল্যকর তথ্যই জানাচ্ছিলেন প্রাণে বেঁচে আসা জেলে লালমোহন দাশ। ক্যাম্পে নিয়ে বিজিবি নায়েককে নগ্ন করে লাঞ্ছিত করে বিজিপি।

শুধু তাই নয়, ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়ার পথে পুরো সময় তার উপর চলে নির্যাতন। ঘটনার দিন নাফ নদীতে মাছ ধরার সময় Nayek-Abdur-rajjak-2-1_0_1রাজ্জাকের সঙ্গে লালমোহন দাস ও তার ভাগ্নে জীবন দাসকেও ধরে নিয়ে যায় বিজিপি। নায়েক রাজ্জাকের সঙ্গে এই দুই জেলেও বিজিপির নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার হয়।
পরে ওই দিন সন্ধ্যায় বিজিপি তাদের ছেড়ে দিলে বহু কষ্টে নদী সাঁতরে তারা বাংলাদেশে ফিরে আসেন।
লালমোহন বলেন, ‘দু’টি নৌকায়ই আমাদের মারধোর করে নিয়ে যাচ্ছিলো তারা, এরা নেওয়ার সময় আমাদের বলে- সেখানে তোমাদের জিজ্ঞেস করলে বলবে যে তোমরা মিয়ানমারের সীমানায় এসে জাল ফেলেছিলে। আমি মিথ্যা বলতে অস্বীকৃতি জানাই।’

এদিকে, লুৎফর নামে বিজিবির এক সদস্যকে সেদিন ধরতে এসে রাজ্জাককে ধরে নিয়ে যায় বিজিপি এমনটাই দাবি করেন লালমোহন। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের সদস্যরা রাজ্জাকসহ আমাদের নিয়ে যাওয়ার পর বলে, বিজিবি’র লুৎফরকে ধরে এনেছি, আমাকেও জিজ্ঞেস করে এ লুৎফর কি না।’

এদিকে কক্সবাজার-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘মারধোর করে থাকলে সেটা অত্যন্ত অমানবিক। এটা কূটনৈতিক পর্যায়ে সমাধান হওয়া দরকার।’

গত ১৭ জুন বিজিবি ও বিজিপির গোলাগুলির ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন বিজিবি সদস্য বিপ্লব। এতে আহত হন অপর এক বিজিবি সদস্য। পরে ধরে নিয়ে যাওয়ার ১ দিন পর গত ১৮ জুন গণমাধ্যমে নির্যাতিত নায়েক রাজ্জাকের ছবি প্রকাশ করে বিজিপি।

মিয়ানমার যাচ্ছে ছয় সদস্যের বিজিবি

নায়েক রাজ্জাককে ফিরিয়ে আনতে দুই একদিনের মধ্যেই ছয় সদস্যের বিজিবি প্রতিনিধি দল মিয়ানমার যাবে। তাকে ফিরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে কোনো শর্ত দেয়নি মিয়ানমার। পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে রাজ্জাককে খু্ব দ্রুতই ফিরিয়ে আনা হবে।

বুধাবার বিজিবি সদর দফতরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ডিজি মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ এসব কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বিজিবি, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় নায়েক রাজ্জাককে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষ করে মিয়ানমারে হাইকমিশন সার্বক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে খোঁজ রাখছে। আর এ তৎপরতার চূড়ান্ত ফল হল এখন একটি পতাকা বৈঠক হতে যাচ্ছে।

রাজ্জাকের আহত অবস্থার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে ডিজি বিজিবি বলেন, আমাদের হাইকমিশনার রাজ্জাকের প্রকাশিত ছবিগুলো নিয়ে মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে দেখা করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আমাদের ক্ষোভের বিষয়ে বিভিন্নভাবে জানানো হয়েছে।

সূত্র : সময়টিভি।