দেশে রাজনৈতিক সংকটের কথা বলে বিএনপি-জামায়াত যেভাবে সন্ত্রাসী কাজকর্ম চালাচ্ছে তাতে তাদের দমনে অস্ত্র ব্যবহারই একমাত্র পথ। খুব শিগগিরই আমরা দেশে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।
রোববার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর বিয়াম অডিটোরিয়ামে বিবিসি’র ১০০তম বাংলাদেশ সংলাপে অংশ নিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।
কামরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে কোনো রাজনৈতিক সংকট নেই। রাজনৈতিক সংকটের নামে বিএনপি-জামায়াত দেশে সন্ত্রাস ও অরাজকতা সৃষ্টি করছে। তারা রাজনৈতিক দলের চরিত্র পাল্টে সন্ত্রাসের চরিত্র ধারণ করেছে। মূলত বিএনপি এখন আইএস ও লাদেন মার্কা দল। তারা এখন আইএস ও লাদেনের ভাবধারায় কাজ করছে। সুতরাং এ ধরনের সন্ত্রাসী দলের সাথে কোনো আলোচনা হতে পারে না। তাদের সাথে আলোচনা করে কোনো সমস্যার সমাধান হবে না।
যদি নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করতে হয় তবে নির্বাচনের সময় এলেই তা করা হবে বলেও মন্তব্য করেন খাদ্যমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে কমিউনিস্ট দলগুলোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে দেশে রাজনৈতিক সংকট বিরাজ করছে। তবে আমি তা মনে করি না। দেশে মূল দ্বন্দ্ব মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ও বিপক্ষের শক্তির মধ্যে। তাই এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য বিএনপিকে জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে। তবে এখন বিএনপি ও জামায়াতকে আলাদা করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। কারণ তারা এখন মিলেমিশে একাকার।
বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে কামরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি অংশ না নেওয়ায় গত নির্বাচন সুন্দর হয়নি এটা আমি স্বীকার করি। তবে তারা নির্বাচনে গেলে ফলাফল তাদের দিকেই যেতে পারতো। মাঠে মোহামেডান ও আবাহনীর খেলা হলে যেমন উপচে পড়া দর্শক হয়, তেমনি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে সবাই ভোট দিতে পারতো। কিন্তু খেলায় যেহেতু বিএনপি অংশ নেয়নি তাই আমাদের আর কিছু করার নেই। দেশে নির্বাচন হয়ে গেছে, একটি স্থিতিশীল সরকার আছে। তাই এ মুহূর্তে নির্বাচনের কোনো দরকার নেই।
দেশে আবারও ১/১১ এর মতো পরিস্থিত সৃষ্টি হতে পারে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি মনে করি না যে দেশে আবার ১/১১ হবে। তবে বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনের আগে দেশে যে সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু করেছিল আবারও সেরকম শুরু করেছে। আমাদের ব্যর্থতা আমরা এতদিন এসব সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ করতে পারিনি। তবে আশা করছি খুব শিগগিরই আমরা সন্ত্রাস নির্মূল করতে পারবো।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে কামরুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ যে যৌক্তিকতার ভিত্তিতে ১৯৯১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করেছিল, সেই যৌক্তিকতা এখন আর নেই। এখন মিডিয়ার যুগ। কেউ নির্বাচনে কারচুপি করতে চাইলেও পারবে না। আর এখন ১০/১২ জন গুন্ডার দিন শেষ। তাই বর্তমান অবস্থার জন্য বিএনপি দায়ী, সরকারের কোনো দায় নেই। বিএনপি নির্বাচনে না গিয়ে যে ভুল করেছে তার জন্য কেন জনগণকে খেসারত দিতে হবে।
বিবিসির বাংলাদেশ সংলাপে অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়া, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এবং সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী।