ব্রেকিং নিউজ
Home / প্রচ্ছদ / সিরাজ হকের সভায় মৃদু উত্তেজনা “আমরা কিতা দেশো আলবাইয়া লন্ডন আইছিনা…”

সিরাজ হকের সভায় মৃদু উত্তেজনা “আমরা কিতা দেশো আলবাইয়া লন্ডন আইছিনা…”

Shiraj Haque

Shiraj Haque

বিশিষ্ট কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব নানা কারনে আলোচিত কমিউনিটি নেতা সিরাজ হকের মেয়র নির্বাচন কেন্দ্রিক এক সভা শেষ পর্যন্ত মৃদু উত্তেজনা এবং তামাশার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। অনেকটা বেইজ্জতি আর বেহাল দশার মধ্যে দিয়ে সভা পন্ড হয়েগেছে বলা যায়। সিরাজ চাইছিলেন মেইনস্ট্রিম মেইনস্ট্রিম বলে আর চেইনজ বা পরিবর্তনের কথা বলে জনবিগসের পক্ষে কিছু সাফাই গাইবেন। কিন্তু তার এক জেনারেল, এক সমর্থক,যিনি ছিলেন প্রধানতম বক্তা, বলেছেন,…আমরা কিতা দেশো আলবাইয়া লন্ডন আইছি নি..আমরারে এখবার ওবায়, আবার হবায় ঘুরাইরায়। আমরা ওউ ইয়ং নারী যোগ্য প্রার্থী রাবিনারে ইবার ভ্টো দিতাম। হখলে মিলিয়া দিতাম। মেয়র আমরার থাকাউ লাগবো। তিনি সিরাজ হকের সামনে দাড়িয়ে উত্তেজিত হয়ে বেশ সাহস নিয়ে বলেন, যেসময় মেয়র ক্ষমতায় গেলা, তুমি আমারের একবার খবর দিছোনি, যে জেনারেল হখল আও, যারা ইয়েস মেয়রের জেনারেল সবে মিলে সুখ করি। আপনি  আপনার মজা পকেটে হারাইয়া, আজকে খুইরা চেইনজ..ইতা আমরারে লইয়া খেইড় খেলারানি। ওউ যে আরেকজন (সাবেক কাউন্সিলার গোলাম মর্তুজা) তার পক্ষে ( জনবিগস) খইরা, তান আরেক ভাই (কাউন্সিলার গোলাম রব্বানী) মহিলার লগে (রাবিনা খান) আছইন। ইতি আমরা বুঝি না নি।

এতো কথা রাবিনার পক্ষে শোনার পর আয়োজকরা অভাক। আর পিছনের কাতারে অনেকটা লোকিয়ে বসা পরাজিত কাউন্সিলার হেলাল আব্বাস, কাউন্সিলার খালিস উদ্দিনও যেনো কিছু বুঝতে পারছেন না।  এটা কী হচেছ, এলাম কেনো আর বলা হচেছ কী?
প্রায় পন্ড হয়ে যাওয়া সভায় উপস্থিত ছিলেন মাত্র ৬/৭জন। তার মধ্যে আবার মনে হয়েছে অনেকে লুতফুর রহমান বা রাবিনার পক্ষের লোকও প্রবেশ করেছেন। যদিও সভার মতলব ছিলো উল্টো। এক বিশাল আয়োজন আর হাজার হাজার দাওয়াত আর ট্যাক্স ম্যাসেজের মাধ্যমে  মোটামোটি পরিস্কার ছিলো-এটা করা হচেছ লেবার পার্টির জনবিগস এর জন্য। কিন্তু আয়োজকদের সকল স্বপ্ন আর পরিকল্পনা মাটি হয়েগেছে। কারন সামনে কয়েকশ চেয়ার থাকলেও ১ম কাতারেই বসা ছিলেন মাত্র ২/৩জন। আর স্টেজে সিরাজ হক ছাড়া মাত্র তিনজন। আয়োজক সিরাজ হকের জন্য সবচেয়ে বড় দু:খ হলো প্রধানতম এক বক্তা ( যাকে আনা হয়েছিলো হয়তো তিনি রাবিনা বা লুতফুর রহমানের বিরুদ্ধে কিছু বলবেন) রাবিনার পক্ষ  খুব জোরালো ভাষায় বক্তৃতা করেন। আনোয়ার চেয়ারম্যান নামে পরিচিত কমিউনিটি নেতা ক্ষুব্দ হয়ে বলেন, কিছু ভুল হওয়ায় হয়তো একটি ঘটনা ঘঠেছে। এখন যাতে আর ভুল না হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
আনোয়ার চেয়ারম্যান সাহসের সাথে বলেন, যারা তরুন, মেধা মনন নিয়ে কাজ করবেন তাদের ভোট দিতে হবে। কারন আমিও প্রবীন, ভাত খেতে পারিনা। তো বুড়োদের আর ভোট দিতে চাইনা।  আমরা আর বয়স্ক-বৃদ্ধ মানুষের পক্ষে কাজ করতে পারবো না, আমরা চাই তরুন সমাজের প্রতিনিধি রাবিনা খানের পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে। তিনি একজন যোগ্য নারী নেত্রি। আমারা যেভাবে ইয়েস মেয়রের সময় একেকজন জেনারেল হয়েছিলাম এবং কাজ করেছিলাম। এখন আমরা সবাই মিলে রাবিনার জন্য কাজ করবো। এটা এখন সময়ের প্রয়োজন।
এক পর্যায়ে যেনো মাইক বন্ধ হয়ে যায়। তার পরও দর্শক সারিতেও রাবিনার সমর্থন!! সবাই বলে বক্তৃতা চলবে চলবে। চলে হাতাতালি। তখন আবার আনোয়ার চেয়ারম্যান বক্তৃব্য শেষ করেন। এর পর ৩য় বক্তা বা প্রশ্ন কারী হিসেবে আসেন তরুন নেতা কবির হোসেন। তিনি বলেন, সিরাজ ভাই তো নিজে আমাদের মেইনস্ট্রিম বুঝাতে চাইছেন, লেবার বুঝাতে চাইছেন। গোলাম মর্তুজা সাহেব যখন জনবিগসের পক্ষে বললেন তখন তিনি বেশ বাহাবাই দিলেন। কিন্তু আনোয়ার চেয়ারম্যান সাহেব যখন রাবিনার পক্ষে বল্লেন তখন কেনো ভিন্নচিত্র। কেনো মাইক যেনো বন্ধ।
সূত্র জানায় আনোয়ার চেয়ারম্যান তেতোটা খুশী নয় লুতফুর রহমানের ওপর। সে কারনেই তাকে বাছাই করা হয়েছে। কিন্তু তিনিই ঘটালেন অঘটন। বল্লেন লুতফুরের প্রার্থী রাবিনার পক্ষে। বল্লেন শক্ত ভাষায়। এর পর সভা অনেকটা পন্ড হয়ে যায় মৃদু উত্তেজনার কারনে।
সেূত্র আরো জানায়, সিরাজ হকের পেছনের দুই কারিগর সভায়ই আসেননি। জানাগেছে এর নেতৃত্ব নিয়েও গন্ডগুল চলছে। আর সভায় পরিচালনায় সবসময় আগ্রহি আরেকজন আলি সাদেক এই হজবরল সভা পরিচালনায় সহযোগিতা করেন। ব্যবসায়ি রফিক হায়দারকে নেয়া হয়েছিলো সভায়। কিন্তু তিনি পরিস্থিতি আচ করতে পেরে বক্তব্য রাখেননি, অনেকটা যেনো কেটে পড়েন।
সিরাজ হকের প্রতিক্রিয়া:
এদিকে লন্ডন বাংলার পক্ষ থেকে উক্ত অনুষ্ঠান আয়োজনের উদ্দেশ্য ও আনোয়ার চেয়ারম্যানের বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে এর আয়োজক সিরাজ হক বলেন, আমরা বিগত দিনে যে উদ্দেশ্যে সাবেক মেয়র লুতফুরের সাথে ছিলাম তার কারনেই তাতে ব্যর্থ হয়েছি। আমরা সে সময় যারা তাকে সমর্থন দিয়েছিলাম তাদের বেশিরভাগই লেবার সাপোর্টার। আমরা একা একা চলতে পারবনা। আমাদেরকে মেইনস্ট্রিম দলের সাথে থাকতে হবে। বর্তমানে যে ঘটনা ঘটছে তা আমাদের সমাজের জন্য ভাল নয়, যুদ্ধ সব সময় করা যায় না, পটেষ্ট ভোট একবার দেয়া যায়  বারবার নয়। ৬ বছর যুদ্ধ করার পর এই যুদ্ধের কোন মিনিং নাই। আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য এই  যুদ্ধ চলা ঠিক হবে না। আমি মনেকরি আমরা সমর্থক লেবার দলকে সমর্থন করা উচিত জন বিগসকে সমর্থন করা উচিত। তিনি বলেন, এদেশে সফল হতে হলে মেইনস্ট্রিমমের সাথে থাকতে হবে।
আনোয়ার চেয়ারম্যানের বক্তব্য সম্পর্কে বলেন, বিগত ২০১০ ইয়েস মেয়র ক্যাম্পেইনে তিনি আমাদের সাথে কাজ করেছেন। এরপরে কমিউনিটিন সাথে কোন সভা না করায় তার দু:খিত। এখানে প্রত্যোকেই যার যার মতামত ব্যক্ত করেছেন। আমরা কাউকে বাঁধা দেয়নি। কে কি বলল তাতে কিছু আসে যায়না।
তবে প্রশ্ন হচ্ছে সিরাজ তুমি কার?
এখন সবমিলিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সিরাজ হক তুমি কার? প্রথমে সব সময় লুতফুর রহমানের পেছনে ছিলেন। ৯ বছরের জন্য মেলা মেলা পেলেন। সুবিধা নিলেন। তার পর গত নির্বাচনে গিয়ে কিছুটা নড়েচগে বসলেন। প্রথমে তিনি জনবিগসের নির্বাচনী সভায় বক্তব্য রাখেন। পরে আবার লুতফুর রহমানের এক সভায়ও বক্তৃতা করেন। এবারও তিনি এদিক ওদিক করছেন। আসলে তিনি কার?