২৭ মে ২০১৫: বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে ভারতে অনুপ্রবেশের সন্দেহে মেঘালয় পুলিশ মঙ্গলবার রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের পর আজ বুধবার আদালতে হাজির করা হবে। এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে নর্থ ইস্টার্ন ইন্দিরা গান্ধী রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ অ্যান্ড মেডিক্যাল সায়েন্সেস (নিগ্রেহমস) থেকে তাকে শিলং জেলা পুলিশ সদর থানায় নিয়ে যায়। এ সময় স্ত্রী হাসিনা আহমেদ ও ভাইয়ের ছেলে সাফাইনূল করিম সালাহ উদ্দিনের সঙ্গে ছিলেন।
নিগ্রেহমসের ডেপুটি মেডিক্যাল সুপার জানান, ‘চার সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাঁকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। ‘সালাহ উদ্দিনের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। তাই তাঁকে আর হাসপাতালে রাখার প্রয়োজন নেই।’
এদিকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার শিলং সদর থানায় নিয়ে যাওয়া হয় বিএনপির এই নেতাকে। রাতেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন সিটি পুলিশের চার কর্মকর্তা।
পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন সালাহ উদ্দিন অবশ্য বরাবরই দাবি করেছেন যে তাঁকে কেউ অপহরণ করেছে এবং চোখ-মুখ ও হাত-পা বেঁধে শিলং গলফ মাঠে ছেড়ে দিয়ে গেছে। তিনি পরে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করে থানায় আত্মসমর্পণ করেন। আত্মসমর্পণের বিষয়টি পুলিশ স্বীকার করলেও তাঁকে অপহরণ করে কেউ ফেলে গেছে এমন তথ্য-প্রমাণ পুলিশের কাছে নেই এখনো।
অনুপ্রবেশ নয়, কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সালাহ উদ্দিন বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য মেঘালয়ে গিয়েছিলেন কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে শিলং জেলা পুলিশ সুপার এম খাগড়াং বলেন, ‘সব সন্দেহ নিয়েই আমরা এগোচ্ছি। এত দিন পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেনি। আমরা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করব। বুধবার সকালে শিলংয়ের স্থানীয় আদালতে তাঁকে হাজির করা হবে।’
সালাহ উদ্দিনের আইনজীবী এস পি মহন্ত বলেন, ‘আমার মক্কেলকে অপহরণ করে নিয়ে আসা হয়েছিল। এ ব্যাপারে আমরা আদালতে সব কাগজপত্র জমা দেব।’
রাজ্য সরকারের পক্ষে মেঘালয় হাইকোর্টের পিপি আই সি ঝাঁ-কে ইতিমধ্যে এই মামলায় সরকারি আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘আইনি লড়াইয়ে সরকার প্রস্তুত। রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে আমরা আসামির বিরুদ্ধে সব তথ্য-প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করব।’
অনুপ্রবেশের অভিযোগে মেঘালয় পুলিশ সালাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে ফরেনার্স অ্যাক্টের ১৪ ধারায় মামলা করেছে। এই মামলায় সর্বোচ্চ সাজা পাঁচ বছরের জেল ও অর্থদণ্ড। কেউ অর্থদণ্ড দিতে না পারলে তাকে অতিরিক্ত সাজা দিতে পারেন বিচারক।
গত ১০ মার্চ উত্তরা থেকে নিখোঁজের ৬৩ দিন পর ১১ মে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে খোঁজ মেলে সালাহ উদ্দিনের। ১২ মে সালাহ উদ্দিনকে শিলং সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর আগের দিন তাঁকে উদ্ধার করে একটি মানসিক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। এ দিনই বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ভারতে প্রবেশ করায় ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী সালাহ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার দেখায় মেঘালয় পুলিশ।
এরপর সালাহ উদ্দিন আহমেদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শিলংয়ের নেগ্রিমস হাসপাতালে নেওয়া হয়।
গত শুক্রবার শিলংয়ের একটি আদালতে তাঁর পক্ষে জামিন আবেদন করেন তাঁর স্ত্রী। এ বিষয়ে ২৯ মে পুলিশকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন আদালত।