বাংলাদেশে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায় করতে গিয়ে বিগত ৭ বছর যাবত আন্দোলন সংগ্রামে ব্যর্থ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। গত জানুয়ারী মাস থেকে টানা তিন মাসের হরতাল, অবরোধ করে শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটাতে না পারলেও দলটি এই আন্দোলনে হারিয়েছে কয়েকশ নেতাকর্মী। দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ হাজার হাজার নেতাকর্মী জেলে বন্ধী। দলটি এখন বিদেশী কুটনীতি নিরবর হয়ে পড়েছে। মাঠ পর্যায়ে নেতাদের খুজে পাওয়া যাচ্ছেনা। আর তাই দল গোছাতে বাংলাদেশে বিএনপির চেয়ারপার্র্সন বেগম খালেদা জিয়া মনোনিবেশ করেছেন। সেক্ষেত্রে অনেকেই মনে করছেন অপেক্ষাকৃত তরুন নেতৃত্ব উঠে আসতে পারে।
এরই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাজ্য বিএনপির নতুন কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলে জানাগেছে। বিগত ২০১৩ সালের মে মাসে তারেক রহমানের উপস্থিতিতে প্রতিনিধি সম্মেলন করার পর ২ বছরের জন্য যুক্তরাজ্য বিএনপির নতুন কমিটি গঠন করা হয়। যদিও সে কমিটি গঠন করতে গিয়ে তারেক রহমান যুক্তরাজ্য বিএনপির শীর্ষ নেতাদের পরামর্শনেন। তারপরও কমিটি থেকে বাদ পড়েন অনেক ত্যাগী নেতা কর্মী। উঠে আসে অনেক নবীন ও অনভিজ্ঞ নেতা। তারেক রহমানের উপস্থিতিতে বেশ কয়েকটি সফল সভা সমাবেশ করলেও আর্ন্তজাতিক সমর্থন আদায়ে ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করেন অনেক।
বাংলাদেশের বাইরে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান ব্রিটেন। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র। এছাড়াও যুক্তরাজ্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের একটি প্রভাবশালী সদস্য রাষ্ট্র বিধায় পুরো ইউরোপে রয়েছে এর প্রভাব। বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে যুক্তরাজ্য একটি উন্নয়ন সহযোগী ও দাতা রাষ্ট্র হিসেবে বিএনপির যুক্তরাজ্য শাখার গুরুত্ব অপরিসীম।
এক্ষেত্রে তারেক রহমান গঠিত যুক্তরাজ্য বিএনপি কতটুকু সফল তার মূল্যায়ন করতে মঙ্গলবার দুপুরে পূর্ব লন্ডনের সোনারগাঁও রেষ্টুরেন্টে বসছে যুক্তরাজ্য বিএনপির বিভিন্ন জোনাল ও শাখা কমিটির প্রতিনিধিদের নিয়ে সম্মেলন। সম্মেলনে আসার দাওয়াত পেয়েছেন এমন অনেকে আমাদের প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন কি উদ্দেশ্যে এ সম্মেলন তারা কিছুই জানেন না। সম্মেলনের পর বলতে পারবেন। তবে তারেক রহমান দলের স্বার্থে যে কমিটি দিবেন তাই তারা মেনে নিবেন।
তারপরও অনেকের অভিযোগ রয়েছে যুক্তরাজ্য কমিটি গঠনের পর মাত্র একটি কার্যকরী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। কমিটির মেয়াদ শেষ হতে চললেও প্রায় দুই বৎসর আগে সম্পন্ন কার্যকরী সভার কার্যবিবরণী কমিটির সদস্যরা জানতে পারেননি। এছাড়া চারটি সাংগঠনিক জোনের চারটি সভা হলেও সভাসমূহের প্রস্তাবনার কি কি বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে তা কেউ জানে না। যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরের কিছু কিছু জোনাল কমিটি বাতিল করা হলেও এখনো সকল জোনাল কমিটি গঠনের ব্যাপারে দৃশ্যমান তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। কিছু কিছু জোনাল কমিটির আহ্বায়ক কমিটি দেয়া হলেও দলের সাংগঠনিক সদস্যের সাথে আদৌ আলাপ আলোচনা হয়েছে বলে মনে হয় না। কমিটি গুলিতে চরম আঞ্চলিকতা দেখানো হয়েছে এমন অভিযোগ রয়েছে।
এত অভিযোগের পরও অনেক নেতাকর্মী মনে করেন তারেক রহমান গঠিত যুক্তরাজ্য বিএনপি অতীতের যেকোন কমিটির চাইতে বেশি কাজ করেছে। সবচাইতে বড় কথা হচ্ছে এই কমিটির বিরুদ্ধে কেউ এখনো পর্যন্ত সুস্পষ্ট অভিযোগ আনতে পারেনি কিংবা পাাল্টা গ্রুপিংয়ের সৃষ্টি হয়নি। এই কমিটি যুক্তরাজ্যে দলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। [Adverts]
এদিকে কমিটিতে স্থান পেতে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত তারেক রহমানের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন একাদিক নেতা। তবে কাদের ভাগ্যে ঘটবে বিজয়ের মালা তা বলা মশকিল। কোন নেতার দিকে তারেক রহমানের সুদৃষ্টি পড়বে তা-ই এখন দেখার বিষয়।
তবে মাঠ পর্যায়ের অনেক নেতাকর্মীদের সাথে আলাপ করে জানাগেছে। দলের শীর্ষ কয়েকটি পদের মধ্যে সভাপতি পদে যাদের নাম শুনা যাচ্ছে তারা হচ্ছেন বর্তমান সভাপতি শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুছ, সাবেক আহবায়ক এম এ মালিক, সহ সভাপতি আখতার হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ব্যারিষ্টার এম এ সালাম, বর্তমান সিনিয়র সহ সভাপতি আব্দুল হামিদ চৌধুরী, উপদেষ্টা মুজিবুর রহমান মুজিব, সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ, আলহাজ্ব তৈমুছ আলী, তাজুল ইসলাম।
সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমদ, বর্তমান যুগ্ম সম্পাদক ও যুক্তরাজ্য যুবদলের জনপ্রিয় সাবেক সভাপতি নাসিম আহমদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন সেলিম, দপ্তর সম্পাদক ড. মুজিবুর রহমান, সহসাধারণ সম্পাদক এডভোকেট তাহির রায়হান চৌধুরী পাবেল, সাদিক মিয়া।
সাংগঠনিক সম্পাদক পদে যুক্তরাজ্য যুবদলের বর্তমান আহবায়ক দেওয়ান মোকাদ্দেম চৌধুরী নিয়াজ, সাবেক সফল সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাছিত বাদশা, লন্ডন মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক এনামুল হক এনুর নাম শোনা যাচ্ছে।
source: লন্ডনবিডিনিউজ২৪