ঠিক ১ সপ্তাহ আগে গত শনিবার সকাল ১১টা ৫৬ নাগাদ কেঁপে উঠেছিল পৃথবী। রিখতর স্কেল বলেছিল নেপালের মাটিতে অনুভূত হওয়া ভূকম্পের তীব্রতা ৭.৮। মুহূর্তের মধ্যে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া দেশে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে ৬,৬০০। রাষ্ট্রপুঞ্জের হিসেব অনুযায়ী ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ৬০০,০০০ বাড়ি, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৮০ লক্ষ মানুষ। মৃতের সংখ্যা প্রতি মুহূর্তে বাড়তে থাকায় ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবীত উদ্ধার করার আশা ছেড়ে দিয়েছে নেপাল।
একটি সংবাদ সংস্থাকে নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী লক্ষ্মী প্রসাদ ধাকাল জানান, ভূমিকম্পের পর ১ সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। আমরা যানপ্রাণ লাগিয়ে দিয়েছি উদ্ধারকাজে। কিন্তু, ধ্বংসস্তূপে আটকে থাকা মানুষদের বেঁচে থাকা সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। শুধু নেপালের বাসিন্দারা নন, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বহু বিদেশিও। ইউরোপিয়ন ইউনিয়নের রিপোর্ট অনুযায়ী, নেপালের ট্রেকিং পথে খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না ১,০০০ ইউরোপিয়নের।
আতঙ্কের প্রহর গোনা নেপালবাসীর জীবনে স্বাভাবিকতা ফেরা এখনও সুদূর স্বপ্ন। ভূমিকম্পের পর থেকে খোলা আকাশের নিচেই রাত কাটাচ্ছেন বহ মানুষ। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন ভূমিকম্পের তীব্রতায় নেপালের রাজধানী কাঠমাণ্ডু ১০ ফুট দক্ষিণে সরে গিয়েছে। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া দেশের সেরে উঠতে প্রয়োজন আর্থিক সাহায্য ও অনেকটা সময়। হাসপাতাল ও মর্গে উপচে পড়লেও এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে ঘুমিয়ে রয়েছেন মানুষ, জলকষ্ট, গ্রাসাচ্ছদনের কষ্ট, শৌচালয়ের অভাবে রোগের আঁতুরঘরে পরিণত হয়েছে হিমালয়ের কোলের ছোট্ট দেশ।
প্রাকৃতিক নিয়মে জুন মাসে বর্ষা আসে নেপালে। ইউনিসেফের রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্ষা এলে কলেরা ও ডায়েরিয়ার জীবাণু ছড়াতে মুহূর্ত লাগবে না নেপালের বর্তমান পরিস্থিতিতে। ঝুঁকির শেষ সীমায় পৌঁছে গিয়েছে নেপালের শিশুদের জীবন। আগামী ৩ মাসে ৫ কোটি মার্কিন ডলার সাহায্যের লক্ষ্যে প্রচার শুরু করেছে ইউনিসেফ।