মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের আইনজীবি শিশির মনির অভিযোগ করেছেন, ‘কামারুজ্জামানের পরিবারকে পুলিশ হয়রানি করছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে তার রাজধানীর বাসায় এবং গ্রামের বাড়িতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অভিযানের নামে হয়রানি করে যাচ্ছে। এ কারণে তার ছেলেরা কামারুজ্জামানের সঙ্গে সাক্ষাত করতে পারছে না।’
শনিবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাফটকে তিনি এ অভিযোগ করেন। এর আগে কামারুজ্জামানের পরিবারের আটসদস্য তার সঙ্গে সাক্ষাত করেন। পরিবারের সাক্ষাত শেষে কামারুজ্জামানের আইনজীবী শিশির মনির সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি তখন এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘কামারুজ্জামান অবিচল রয়েছেন। তিনি এই ঘটনায় মোটেও বিচলিত নন।’
কামারুজ্জামানের আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়ে শিশির মো. মুনির জানান, তারা যথাসময়েই রিভিউ করবেন। রিভিউ করার আগে জানানো হবে।
কামারুজ্জামানের পরিবারের বরাত দিয়ে এই আইনজীবী সাক্ষাতের বিষয়ে বলেন, তিনি মোটেই বিচলিত নন। তিনি তার পরিবারের সদস্যদের কাছে উচ্চ আদালতে রিভিউ করে খালাস পাবেন বলে ফের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। রিভিই নিষ্পত্তির পরে আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলেও জানিয়েছেন কামারুজ্জামান।
শনিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা এগারটা ৩৫ মিনিটে কারাগারের ভেতর থেকে বের হয়ে আসেন কামারুজ্জামানের স্ত্রী নূরুন্নাহারসহ মোট ৮ জন। এর আগে সকাল দশটা ৪০ মিনিটের দিকে কারাগারের ভেতরে ঢোকেন তারা। অন্যদের মধ্যে ছিলেন কামারুজ্জামানের মেয়ে আফিয়া নূর, পুত্রবধূ শামীম আরা, শ্যালক আবুল কালাম আজাদ, ভাগ্নে সানোয়ার হোসেন এবং ৩ ভাগ্নি রোকসানা জেবিন, শাহানা জেবিন ও আফরোজা জাহান।
কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলী সাংবাদিকদের জানান, এটি নিয়মিত সাক্ষাতের অংশ। তারা ৫৫ মিনিটের মতো ভেতরে ছিলেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) পূর্ণাঙ্গ রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি হাতে পাওয়ার পর থেকে রিভিউ আবেদনের জন্য নির্ধারিত ১৫ দিন গণনা শুরু হবে বলে দাবি করেছিলেন কামারুজ্জামানের আইনজীবীরা। তবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি আসামি তার আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় ও মৃত্যু পরোয়ানা জানার পর থেকে এ দিন গণনা শুরু হয়েছে। ফলে আগামী ৫ মার্চের মধ্যে রিভিউ করতে হবে।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে কারা কর্তৃপক্ষ কামারুজ্জামানকে তার মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনান। এর দু’ঘণ্টা আগে লাল কাপড়ে মোড়ানো মৃত্যু পরোয়ানাটির সঙ্গে আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপিও পৌঁছে কারাগারে। সে সময় কামারুজ্জামান জানান, তিনি আইনজীবীর সঙ্গে আলাপ করে রিভিউ আবেদনের বিষয়ে জানাবেন।
কামারুজ্জামানের ইচ্ছা অনুসারে ২১ ফেব্রুয়ারি তার ৫ জন আইনজীবী কারাগারে তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি আইনজীবীদের রিভিউ করতে বলেন।