ব্রেকিং নিউজ
Home / Uncategorized / ব্যাপক সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে আদালতে খালেদার হাজিরা, পরবর্তী তারিখ ৭ জানুয়ারি

ব্যাপক সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে আদালতে খালেদার হাজিরা, পরবর্তী তারিখ ৭ জানুয়ারি

imageজিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৭ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য্য করা হয়েছে।

বুধবার বেলা একটার দিকে পুরান ঢাকার বকশিবাজার এলাকার আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আবু আহমেদ জমাদার এ দিন ধার্য্য করেন।
এদিন আদালতে কোনো শুনানি হয়নি। এ বিষয়ে আদালত বলেছে, মামলার কার্যক্রম শুরুর পর বেলা সাড়ে ১০টায় আসামি খালেদা জিয়ার আদালতে আসার কথা। কিন্তু তিনি আসেননি। এই মামলায় প্রায়ই এ ঘটনা ঘটছে।
এজলাসে বসে বিচারক বলেন, আমি আসলে আজ মামলা সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে পরিচিত হতে এসেছি। আজ কোনো শুনানি হবে না। আগামী ৭ জানুয়ারি শুনানি হবে।
এর আগে বুধবার দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে পুরান ঢাকার বকশিবাজার এলাকার আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এ উপস্থিত হন খালেদা জিয়া।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গুলশানের বাসা থেকে রওনা হন তিনি। আদালতে প্রবেশের আগে রাস্তায় খালেদাকে বহনকারী গাড়িতে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
পুরান ঢাকার বকশিবাজার এলাকার আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এর বিশেষ এজলাসে মামলা দুটির বিচারকাজ চলছে।
গত সপ্তাহে বিচারক বাসুদেব রায়কে বদলি করে তার স্থলে আবু আহমেদ জমাদ্দারকে বিচারক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
খালেদা জিয়ার হাজিরা ঘিরে সকাল থেকে আদালত এলাকায় বিপুলসংখ্যক বিএনপির নেতাকর্মী জড়ো হয়। তারা ব্যানার, ফেস্টুন, প্লা-কার্ড আর স্লোগানে মুখরিত করে রাখে গোটা পুরনো ঢাকা। এরই মধ্যে বেলা পৌনে ১২টার দিকে বুয়েট থেকে শতাধিক সশস্ত্র ছাত্রলীগের কর্মী বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালালে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
সকাল থেকে বকশিবাজারের আদালত ও আশপাশের এলাকায় সতর্ক অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার গেট ও চানখারপুল এলাকায় ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে রাখে।
এছাড়া রাজধানীর কাকরাইল মোড় থেকে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের একটি গাড়ি দেখা গেছে। কার্যালয়ে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী যাননি।
গত ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর খালেদা জিয়ার আইনজীবী বিচারক নিয়োগ ও মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন। উচ্চ আদালত তা খারিজ করে দেয়।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে। এজাহারে বলা হয়, ২০০৫ সালে কাকরাইলে সুরাইয়া খানম নামে এক মহিলার কাছ থেকে ‘শহীদ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’র নামে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়। তবে জমির দামের চেয়ে অতিরিক্ত ১ কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জমির মালিককে দেয়া হয়েছে, যা কাগজপত্রে উল্লেখ করা হয়। এই টাকার বৈধ কোন উৎস ট্রাস্ট দেখাতে পারেনি।
২০১১ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের নামে তেজগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ।
এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ চারজনকে অভিযুক্ত করে ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ খান।
অন্যদিকে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১০ সালের ৫ আগস্ট বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। অভিযোগপত্র দেয়ার পর ২৬টি ধার্য তারিখ পার হলেও আইনি মারপ্যাঁচে খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি।
সবশেষ এ মামলায় খালেদা জিয়া গত বছরের ১১ অক্টোবর আদালতে হাজিরা দেন। ২০০৮ সালের ৩ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশন রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে অনিয়মের অভিযোগে এ মামলাটি দায়ের করে। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে মোট ৩৬ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।