১৯ অক্টোবর ২০১৪: বিবিসি জানতে পেরেছে যে দক্ষিণ থাইল্যান্ডে একটি চক্র রয়েছে – যারা দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশীদের বিভিন্ন খামারে বা মাছধরার ব্যবসায় ক্রীতদাসের মতো কাজ করাচ্ছে। গত এক সপ্তাহে এমন ১৩০ জন বাংলাদেশীকে উদ্ধার করেছে সেখানকরা কর্তৃপক্ষ।
বিবিসির দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সংবাদদাতা জোনাথন হেড থাইল্যান্ডে এমন একটি জায়গা ঘুরে দেখেছেন, যেখানে অন্তত ১৩০ জন বাংলাদেশী পুরুষকে উন্নত চাকরির লোভ দেখিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। এরা সবাই মানব পাচারের শিকার।
বাংলাদেশ ছাড়ার পর তাদেরকে ওষুধ খাইয়ে, হাত-পা বেঁধে নৌকায় করে থাইল্যোন্ড নিয়ে যাওয়া হয়। ওই নৌকায় প্রায় ৩০০ বন্দী ছিল। এর পর তাদেরকে থাইল্যান্ডের উপকুলে জঙ্গলের মধ্যে লুকানো কিছু ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়, এবং দাস-শ্রমিক হিসেবে বিক্রি করে দেয়া হয়।
উদ্ধার পাবার পর আবদুর রহিম নামের একজন বাংলাদেশী বলছিলেন, তাদের জঙ্গলে নিয়ে রাখা হয়েছিল, কোন খাবার দেয়া হয় নি। ১০ দিন তারা শুধু পাতা খেয়ে বেঁচে ছিলেন। তিনি বলেন, থাই দালালরা তাকে এমন মারধর করেছে যে এখনো তিনি খুঁড়িয়ে হাঁটেন।
সম্ভবত এদের ক্ষেত-খামারে বা মাছধরার নৌকায় কাজ দাসশ্রমিক হিসেবে করানো হয়। তিন সপ্তাহ বন্দী থাকার পর একজন স্থানীয় জেলা প্রশাসন কর্মকর্তা – যিনি মানবপাচার রোধের জন্য কাজ করছেন – তাদের উদ্ধার করেন। তবে অ্ন্য আরো ৬০ জন এখন নিখোঁজ রয়েছেন এবং তাদের বিক্রি করে দেয়া হয়েছে বলে করা হচ্ছে।
থাইল্যান্ডে দীর্ঘদিন ধরেই মানবপাচার একটি বড় সমস্যা।
মাছ ধরার নৌকাগুলোতে দাস শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর অভিযোগ ওঠায় ইউরোপে সি-ফুড জাতীয় খাদ্যের বাজার হারাচ্ছে থাইল্যান্ড।
এ ব্যাপারে যথেষ্ট ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না বলে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ বছরই মানবপাচারকারীদের নিয়ন্ত্রণে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল থাই সরকার।
কিন্তু পাচার হওয়া বাংলাদেশী উদ্ধারের ঘটনার পর ধারণা করা হচ্ছে যে, দেশটিতে সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী চক্র সক্রিয় রয়েছে।
সৌজন্যে: বিবিসি
London Bangla A Force for the community…
