বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আমন্ত্রণে গত রোববার মসজিদে নববীতে ইফতার করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদী। সঙ্গে ছিলেন বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ। তাদের এই ইফতার মাহফিলকে সরকারবিরোধী বৈঠক বলে বিভিন্ন মহলে প্রচারিত হয়েছে।
মঙ্গলবার মাসুদ সাঈদী তার ফেসবুকে এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “গতকাল (রোববার) মসজিদে নববীতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জনাব আন্দালিব রহমান পার্থ এবং আমি একসাথে ইফতার করেছিলাম। জনাব তারেক রহমানের আমন্ত্রণে আমি ওই ইফতার মাহফিলে অংশগ্রহণ করেছিলাম। একসাথে করা ইফতারের এই ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হওয়ার পর নানা মানুষের নানা কথা শুনছি।
সাংবাদিক বন্ধুগণ আমাকে ফোন করে জানতে চাইছেন, আমরা তিনজন সরকারবিরোধী আন্দোলন কিংবা সরকার পতনের বিষয়ে কী কী আলোচনা করেছি!!
মসজিদে নববীর সাথেইতো আমাদের থাকার হোটেল, সরকারবিরোধী আন্দোলনের কথা বলতে মসজিদে নববীতে গিয়ে সকলের উপস্থিতিতে ক্যামেরার সামনে করতে হবে কেন??!!
আমি হাসব না কাঁদব বুঝতে পারছি না । আমি বুঝতেই পারছি না একটি সহজ সরল ইফতার মাহফিল কী করে সরকারবিরোধী আন্দোলনের একটি মিটিংয়ে রূপ নেয়!!!!!!’”
গত ১৬ জুলাই রাতে পবিত্র ওমরা পালনের উদ্দেশে সৌদি আরব যান মাসুদ সাঈদী। ওইদিন মাসুদ সাঈদী এ প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ করে বলেছিলেন, ইমিগ্রেশন তাকে বিমানবন্দরে বসিয়ে রেখেছে, উপরের কর্মকর্তারা তাকে জানিয়েছে উপরের নির্দেশ না আসা পর্যন্ত তাকে বসে থাকতে হবে। এক ঘণ্টা বসিয়ে রেখে তাকে ক্লিয়ারেন্স দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
২০ জুলাই মদিনা মনোয়ারার হোটেল রয়েলে ব্যবসায়ীদের দেয়া এক সংবর্ধনা এবং ইফতার মাহফিলে যোগ দেন মাসুদ সাঈদী। তার সঙ্গে রয়েছে তার স্ত্রী ও পুত্র। ওমরা পালনে যাওয়ার আগে তার বাবা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সঙ্গে দেখা করেছেন। তখন রাসুলের রওজায় তার নাম নিয়ে সালাম পৌঁছে দিতে বলেছেন। একই সঙ্গে দেশবাসীকে ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কারণ ঈদের আগে পরিবারের আর কোনো সদস্যর সঙ্গে দেখা হবে না।
ওমরায় যাওয়ার আগে মাসুদ সাঈদী আরো বলেন, “রমজানে নামাজ-রোজা, তেলাওয়াত ও ইসলামি বই পড়েই কারাগারে সময় কাটছে দেলোওয়ার হোসেন সাঈদীর। সেহেরির সময় ওঠে তিনি তাহাজ্জুতের নামাজ আদায় করেন, পরে সেহেরি খেয়ে ফজরের নামাজ আদায় করে ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে ঘুম থেকে ওঠে কুরআন তেলাওয়াত করেন।”
তিনি জানান, কারাগারে সেহেরিতে সাঈদীকে গরম খাবার দেয়া হয়। মাছ, গোশত, সবজি, ডাল, মোটা চালের ভাত সরবরাহ করা হয়। ইফতারিতে তার জন্য বরাদ্দ ২৮ টাকা। ছোলা, খেজুর,পেয়াজু দিয়ে ইফতার সারেন।
ফাঁসির আসামী হওয়া সত্ত্বেও মাওলানা সাঈদী মানসিকভাবে শক্ত আছেন বলেও জানান ছেলে মাসুদ সাঈদী।- সূত্র: নতুন বার্তা