বেসরকারি বিমান পরিবহন সংস্থা ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের একটি যাত্রীবাহী ফ্লাইট অন্তত ৬০ জন যাত্রী নিয়ে কক্সবাজার বিমান বন্দরে অবতরণকালে রানওয়েতে দুর্ঘটনাকবলিত হয়েছে। ফ্লাইটটি অবতরণের সময় সামনের চাকা পিটকক থেকে বের না হওয়ায় রানওয়েতে ছিটকে পড়ে।
তবে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনায় না পড়ে অন্তত এক কিলোমিটার রানওয়ে পার হয়ে দাঁড়াতে সক্ষম হয়। পরে সব যাত্রীই নিরাপদে ফ্লাইট থেকে নেমে আসেন।
রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে দুর্যোগকবলিত আবহাওয়ায় রানওয়েতে অবতরণ করার সময়ই এই দুর্ঘটনা ঘটে। ওই ফ্লাইটে থাকা একাধিক যাত্রী জানান, রানওয়েতে ছিটকে পড়ার আগে আকাশে থাকতেই ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের এই ফ্লাইটটি প্রচণ্ড রকম দুলছিল। তাদের মতে, একটা সময় এমন মনে হচ্ছিল, যেন ফ্লাইটটিই বঙ্গোপসাগরে পড়ে যাবে।
৬৬ জন যাত্রী ধারণক্ষমতার ওই ফ্লাইটিতে অন্তত ৬০ জন যাত্রী ছিলেন। যাদের মধ্যে জাতীয়তাবাদী যুবদল কক্সবাজার জেলা শাখার নবনির্বাচিত সভাপতি সৈয়দ আহমদ উজ্জল, সাধারণ সম্পাদক জিসান উদ্দিন কাউন্সিলর ও সাংগঠনিক সম্পাদক আমির আলীও ছিলেন। যারা কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদন পেয়েই কক্সবাজার ফিরে আসছিলেন।
দুর্ঘটনাকবলিত ফ্লাইটটির যাত্রী, বেসরকারি সংস্থায় (এনজিও) কর্মরত নির্ঝর তার স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে কক্সবাজার আসছিলেন। তিনি জানান, ফ্লাইটটি যখন কক্সবাজার বিমান বন্দরের রানওয়ের কাছাকাছি আকাশে ছিল তখন থেকেই সেটি প্রচণ্ড রকম দুলছিল। মনে ভয়-শংকা কাজ করলেও পাশে স্ত্রী থাকায় তিনি নিরবে হজম করেছেন।
তাঁর মতে, একটা সময় মনে হচ্ছিল পাইলট হয়তো বিমানটি বঙ্গোপসাগরেই নামিয়ে দেবেন।
ওই ফ্লাইটের আরেক যাত্রী, কক্সবাজারের তরুণ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সাহেদ উদ্দিন জানান, ফ্লাইটটি রানওয়েতে অবতরণকালে সামনে চাকাটি পিটকক থেকে বেরই হয়নি। যখন দুর্ঘটনাকবলিত হয় তখনও সামনের চাকাটি পিটককে বন্ধ অবস্থায় ছিল।
তিনি জানান, ফ্লাইটটি রানওয়েতে ছিটকে পড়ার পর সামনের চাকা ছাড়াই ছেঁচড়ে অন্তত এক কিলোমিটার পর্যন্ত সামনে এগিয়ে যায়। তারপরই ফ্লাইটটি থামানো সম্ভব হয়েছে।
কক্সবাজার বিমান বন্দর সূত্র জানায়, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের যাত্রীবাহী ফ্লাইটটি দুর্ঘটনাকবলিত হওয়ার পরপরই বিপদসংকেত বাজানো হয়। দ্রুত দমকল বাহিনীকেও খবর দেয়া হয়।
ওই সূত্র মতে, বিকাল ৫টা ৫৫ মিনিটের দিকে ফ্লাইটটি ছিটকে পড়ে উত্তর দিকে থেকে দক্ষিণে রানওয়েতেই ছেঁচড়ে এগিয়ে যায়।
ফ্লাইটটির যাত্রী নির্ঝর জানান, ফ্লাইটটির সামনে চাকা বের না হলেও বামপাশের চাকা প্রথম রানওয়ে স্পর্শ করে। ডানপাশে কাত হয়ে কিছুদূর ছেঁচড়ে যাওয়ার পর ডানপাশের চাকা রানওয়ে স্পর্শ করে।
এ ব্যাপারে তাত্ক্ষণিক ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ ও কক্সবাজার বিমান বন্দর ব্যবস্থাপকের কোনো বক্তব্য নেয়া যায়নি। তারা দুর্ঘটনাকবলিত ফ্লাইটটি উদ্ধারে ব্যস্ত রয়েছেন।
তবে বিমান বন্দরের নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছেন, ক্রেন এনে ফ্লাইটটি রানওয়ে থেকে সরিয়ে আনা হবে।