চাঁদা না পেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়কের সংস্কার কাজের ইট উপড়ে ফেলেছে কথিত ছাত্রলীগ নেতারা। পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, চারটি গ্রাম ও একটি বাজারের একমাত্র সড়কের এ বেহলা অবস্থায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী।
সোমবার দিনগত রাত সাড়ে ১১ টায় সোনাগাজীর নবাবপুর ইউনিয়নের নাজিরপুর গ্রামের দক্ষিণ সুলতানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগীরা জানায়, লোকাল গভমেন্ট সাপোর্ট প্রজেক্ট (এলজিএসপি) প্রকল্পের আওতাধীন নবাবপুর ইউনিয়নের ৩২০ মিটার সড়ক উন্নয়নের কাজ করছে জাহীদ এন্টারপ্রাইজ। সোমবার রাতে ইউপি চেয়ারম্যান মো. জহিরুল আলমের কাছে রাস্তা সংস্কার কাজ করতে হলে চাঁদা দিতে হবে বলে আরিফ নামে কথিত ছাত্রলীগ নেতা ফোন করেন। চেয়ারম্যান চাঁদা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে রাতে ১০-১৫ জন সন্ত্রাসী সড়কের ইট তুলে অর্ধেক লুট করে নিয়ে যায়। বাকিগুলো সড়কের পাশে পুকুরে ফেলে দেয়।
দীর্ঘদিনের কদমাক্ত এ সড়কটি দক্ষিণ সুলতানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভোরবাজার অ্যাডভোকেট বেলায়েত হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়, নাজিরপুর দাখিল মাদরাসা, ভোরবাজার কিন্ডার গার্টেনের দুই হাজার ছাত্র-ছাত্রীর একমাত্র চলাচলের পথ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। এছাড়া নাজিরপুর, গোয়ালিয়া, সুলতানপুর, মোহদিয়া ও ভোরবাজার গ্রামের লোকজন নিয়মিত এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে।
ভোরবাজার অ্যাডভোকেট বেলায়েত হোসেন উচ্চ বিদ্যালয় অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র শাহাদাত হোসেন জানান, সড়কে সারা বছর কাঁদা থাকে। সংস্কার ও পাকাকরণের কাজ দেখে খুশি হয়েছিলাম। তবে মঙ্গলবার সকালে স্কুলে আসার পথে সড়ক উপড়ে ফেলা দেখে খুব কষ্ট পেয়েছি।
দক্ষিণ সুলতানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র আলী হাসান ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, ‘আমাদের রাস্তাটা কী কখনও পাকা অইবোনা (হবেনা)?’
চেয়ারম্যান মো. জহিরুল আলম জানান, কথিত ছাত্রলীগ আরিফ নিজকে সরকার দলীয় নেতা দাবি করে মুঠোফোনে চাঁদা দাবি করেন। তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি প্রকাশ করে তাকে ইউপি কার্যালয়ে আসতে বলেন।
জহিরুল আরো জানান, তার ইউপিতে ৯ জন সরকার দলীয় সদস্য রয়েছে। আমি নিজে কোনো দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নই। চাঁদা দেয়ার প্রশ্ন আসে না।
নাজিরপুর গ্রামের ৩নং ওয়ার্ড মেম্বার ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব খান সবুজ জানান, যারা চাঁদা দাবি করেছে কিংবা সড়কের ইট ফেলে দিয়েছে তারা কেউই ছাত্রলীগের সদস্য নয়। তারা সুবিধাভোগী রাজনীতি করে। এলাকার বিভিন্ন চুরি-ডাকাতির সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে।
সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুন নাহার জানান, এঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। দোষীদের শিগগিরই আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে।