আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনি ও সদ্য বদলিকৃত ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) গোলাম সাকলায়েন শিথিলের একটি গোপন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
সাংবাদিক ইলিয়াস কীভাবে ভিডিওটি পেলেন?
ফাঁস হওয়া ভিডিওটির ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘পরীমনি ও পুলিশ কর্মকর্তা সাকলায়েনের গোপন ভিডিও! সাকলায়েন পরীমনির সঙ্গে তার অবৈধ সম্পর্কের কথা অস্বীকার করলেও তাদের গোপন একটি ভিডিও আমাদের কাছে পাঠান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন পুলিশ কর্মকর্তা।’
প্রশ্ন উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা একজন প্রবাসী সাংবাদিক কীভাবে সংবেদনশীল এই ভিডিও পেলেন? কে বা কারা তাকে ভিডিওটি পাঠিয়েছে—তা নিয়ে চলছে জোর আলোচনা। তবে সাংবাদিক ইলিয়াস ভিডিওটি ‘একজন পুলিশ কর্মকর্তা’র কাছ থেকে সংগ্রহ করেছেন বলে দাবি করেছেন ক্যাপশনে।
জানা গেছে, ফাঁস হওয়া ভিডিওটি ঈদের পরের। এডিসি সাকলায়েনের বাসায় ধারণ করা এটি। বাসায় পরীমনি, তার কস্টিউম ডিজাইনার জিমি এবং তার গাড়ি চালক উপস্থিত ছিলেন। ভিডিওটি জিমি ধারণ করেছেন। বর্তমানে ডিবির হেফাজতে রিমান্ডে রয়েছেন জিমি। প্রশ্ন উঠেছে, জিমি বর্তমানে ডিবির রিমান্ডে আছেন। তাহলে সাংবাদিক ইলিয়াস কীভাবে ভিডিওটি পেলেন? কে পাঠিয়েছে?
এ বিষয়ে ডিবি সূত্রের দাবি, পুলিশের কেউ এই ভিডিও ছড়াতে পারে না। তাছাড়া এই ভিডিও পুলিশের হাতে আসার কথা নয়। ভিডিওটি প্রবাসী সাংবাদিককে যিনি পাঠিয়েছেন, তিনি দুই পক্ষের পরিচিত কেউ। ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের লক্ষ্যেই ভিডিওটি পাঠানো হয়েছে।
তবে সূত্রের ভাষ্য, পুলিশ কর্মকর্তা সাকলায়েনের বাসায় পরীমনি যে গিয়েছিলেন এবং সিসি ক্যামেরার যে ফুটেজ ফাঁস হয়েছে, সেটিও কোনো পুলিশ সদস্যের মাধ্যমেই হতে পারে। কারণ সাকলায়েন রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের ভিতরে একটি ভবনে থাকতেন। সেই ভবনের পুরো দায়িত্ব পুলিশের হাতেই।
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা গণমাধ্যমকে বলেন, কোনো কর্মকর্তা যদি আচরণবিধি বা আইনলঙ্ঘন করেন, তাকে তার দায় নিতে হবে। পরীমনিকে নিয়ে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের জন্য ইতোমধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার কথা রয়েছে। প্রতিবেদন হাতে পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে পরীমনি-সাকলায়েনকে নিয়ে একটি সিসিটিভি ফুটেজ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আসে। ফুটেজটি সাকলায়েনের সরকারি বাসভবনের। সেখানে তারা এক সঙ্গে ১৮ ঘণ্টা অবস্থান করেন। এই আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইউটিউবে সাকলায়েন ও পরীমনির ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এক মিনিটি ৫৪ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটিতে দেখা গেছে, সাকলায়েনের জন্মদিনে কেক কাটছেন তারা। পরে পরীমনি তাকে খাইয়ে দিচ্ছেন। পরে সাকলায়েনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে দেখা গেছে পরীমনিকে।
জিজ্ঞাসাবাদে পরীমনি জানিয়েছেন, নিয়মিত কথা বলতে বলতে গোলাম সাকলায়েনের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় তার। এরপর তারা নিয়মিত গাড়ি নিয়ে ঘুরতে যেতেন। এমনকি সাকলায়েন তার বাসায় নিয়মিত যাতায়াত করতেন। সর্বশেষ গত ১ আগস্ট তার সরকারি বাসভবন রাজারবাগের মধুমতির ফ্ল্যাটে যান পরীমনি। সেখানে প্রায় ১৮ ঘণ্টা অবস্থান করেন। পরীমনি জানান, সাকলায়েনকে তিনি পছন্দ করেন। সুযোগ পেলে সাকলায়েনের সঙ্গে দেখা করতে চান তিনি।
এর আগে ৪ আগস্ট বিকেলে পরীমনির বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। এ সময় তার বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ ওয়াইন, ভয়ঙ্কর মাদক আইস, এলএসডি ও মাদক সেবনের সরঞ্জামাদি উদ্ধার করে র্যাব।