লন্ডন বাংলা ও এলবি২৪- এর সিলেট প্রতিনিধি শাহপরান সুমন আজ সিলেট সিটি করপোরেশন মিলনায়তনে সিলেটে অক্সিজেন সংকট সংক্রান্ত সংবাদ সংগ্রহ করাকালীন সতীর্থ সাংবাদিক কর্তৃক নিগৃহীত হয়েছেন। সাংবাদিকতার নীতিমালা অনুযায়ী এই গর্হিত ও অপেশাদারি আচরণের জন্য ইউকে ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম লন্ডনবাংলা ও এলবি২৪ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
আজ ০৩ আগস্ট বেলা ১২ টায় সিলেট সিটি করপোরেশন মিলনায়তনে করোনা সংক্রমণরোধ ও সিলেটের চিকিৎসা সেবার উন্নয়ন শীর্ষক জরুরি সভার সংবাদ সংগ্রহ করতে যান লন্ডনবাংলা ও এলবি২৪ -এর সিলেট প্রতিনিধি শাহপরান সুমন। সেখানে তিনি তার পেশাদারী দায়িত্ব পালন করতে গেলে সময় টিভির সাংবাদিক ইকরামুল কবির তাকে সেখান থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। এ সময় এলবি২৪- প্রতিনিধি সুমন কেনো তাকে অনুষ্ঠান কাভার না করে বেরিয়ে যেতে বলছেন জানতে চাইলে অতি উৎসাহী হয়ে মাহবুবুর রহমান রিপন, সাইদুর রহমান রাসেল (যমুনা টিভি), সবুজ আহমদ (দীপ্ত টিভি), দিগেন সিনহা (ক্যামেরাম্যান সময় টিভি), ইকবাল মুন্সি (এটিএন বাংলা) সহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও কয়েকজন মিলে সম্পূর্ণ বিনা উস্কানিতে সুমনের উপর ঝাপিয়ে পড়ে কিল-ঘুষি মারেন এ সময় তাদের মুখে অনলাইন টিভি সম্পর্কে অকথ্য গালিগালাজ করতে শোনা যায়। এখানেই শেষ নয়; সুমনের সংবাদকার্যে ব্যবহৃত মোবাইল তারা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। তারা প্রায় ২ ঘন্টা তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে একটি কক্ষে আটকে রাখে। অতঃপর তারা সেখান থেকে চলে গেলে সুমন সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানায় গিয়ে তার জানমান ও পেশাদারীত্বের নিরাপত্তা চেয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও গ্রহণকৃত ভিডিও ফুটেজ থেকে দেখা যায়, উল্লেখিত সাংবাদিকদের অপেশাদারি আচরণ ছিলো আইন নিজ নিজ হাতে তুলে নেওয়ার মতো জিঘাংসাপরায়ন।
উল্লেখ্য, গত কিছুদিন আগে শাহপরান সুমন ‘সাংবাদিকতার নামে উচ্ছৃঙ্খল যুবকের অনৈতিক ও বেপরোয়া আচরণে সুষ্ঠু ধারার অনলাইন সাংবাদিকতা হুমকির মুখে’ শীর্ষক পুলিশের সার্জেন্টের সঙ্গে তথাকথিত সাংবাদিকের বেপরোয়া আচরণ নিয়ে ( https://www.facebook.com/LB24tv/videos/572674104090207/ ) লন্ডনবাংলা ও এলবি২৪ -এ প্রতিবেদন প্রচার করেন। এরই প্রেক্ষাপটে তার উপর কৌশলগত জিঘাংসামূলক আক্রমণ কি না সুমন বুঝে উঠতে পারছেন না।
সচেতন মহল মনে করেন, যুগ পাল্টাচ্ছে। পৃথিবী যেমন হাতের মুঠোয় চলে এসেছে, তেমনি বড় আকারের মেশিনারিজ ছোট হয়ে আসছে। বড় বড় নামীদামী ক্যামেরা কোম্পানীগুলো ধীরে ধীরে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে। বিবিসি, সিএনএন, আলজাজিরা’র মতো সংবাদ মাধ্যমগুলোও এখন ধীরে ধীরে মোবাইল ফোনের ক্যামেরার উপর নির্ভর করতে শুরু করেছে, সেখানে সিলেটে মোবাইল ক্যামেরায় সংবাদ রেকর্ড করাকে অন্যচোখে দেখার অবকাশ নেই। এখন যারা বড় ও ভারী ক্যামেরা বহন করাকে মূলধারার সাংবাদিক বলে ঢেঁকুর তুলছেন, আর কয়েক বছর পর তারাও মোবাইল নির্ভর হবেন বাধ্য হয়ে – যুগের তালে।
প্রকৃত সংবাদ পাঠক ও বিজ্ঞ বিদগ্ধজনেরা মনে করেন, সাংবাদিক ভুয়া হোন আর গোষ্ঠীবদ্ধ মূলধারাধারী হোন, আইন কারো নিজ হাতে তুলে নেওয়া উচিত নয়, অন্তত সাংবাদিকতায় আসার পূর্বে এই বেসিক নলেজটুকু তাদের নিয়ে আসা দরকার। কারো উপর হাত উঠানো, শারীরিক আঘাত করা, হুমকি প্রদান করা, কারো ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে আটক রাখা, সবগুলোই দণ্ডবিধি অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সচেতন মহল মনে করে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কারোরই সন্ত্রাসী আচরণ কাম্য হতে পারে না।