রাত পোহালেই মুসলিম সম্প্রদায়ের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা।
ঈদ মানেই সবাই মিলে একত্র হয়ে মিলনের মোহনায় দাঁড়িয়ে একমঞ্চে উদ্যাপন।
ঘরে ঘরে নেমন্তন, সেমাই, খুরমার সুঘ্রাণ। আর অলিতে-গলিতে শুভ্র পাঞ্জাবি-টুপিতে লোকে লোকারণ্য। তাদের কাঁধে জায়নামাজ, হাতে তসবি। বাহারি রঙে-ঢঙের টুপি।
হাসিমুখে কোলাকুলি, করমর্দণের পর একে অপরে নিজের বাড়িতে টেনে নেওয়ার পায়তারা।
কিন্তু করোনার অতিমারিতে ঈদের চিরচেনা সেই উৎসবের দৃশ্যগুলো দেখা যাবে না এবারও।
করোনার তাণ্ডব শুধু ঈদ নয়, জীবনের স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ স্থবির করে দিয়েছে।
সংক্রমণ ঠেকাতে যখন জীবন ও জীবিকা অনিশ্চয়তার দোলাচলে দুলছে, তখন ঈদ কি কোনো আনন্দ নিয়ে হাজির হতে পারে? দেশে প্রতিদিনই মৃত্যু দুইশো বা তার চেয়েও বেশি।
ঈদ মানে আনন্দ হলেও গতবারের মতো এবারও ঈদও আনন্দ নিয়ে হাজির হচ্ছে না নিশ্চিত। বুধবার আরেকটি বিষাদমাখা ঈদই উদ্যাপন করবে বাংলাদেশ, যে দিনেও গুনতে হবে মৃত্যুর সংখ্যা।
তবে সংক্রমণ এড়াতে এবারও সতর্ক অবস্থানে বাংলাদেশ সরকার। স্বাস্থ্যবিধি মেনে গরুর হাটে বসেছে। শুধু ঈদ উপলক্ষে চলমান লকডাউনে শিথিলতা আনা হয়েছে। ঈদের দ্বিতীয় দিনের ভোর থেকেই ফের কঠোর লকডাউন চলবে। গণপরিবহণ, দোকান-পাট, শপিংমল, সরকারি-বেসরকারি অফিসসহ এবার পোশাকশিল্পও বন্ধ থাকবে।
এমন লকডাউন চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত।
করোনার সংক্রমণ এড়াতে এবারও জাতীয় ঈদ গাহ, শোলাকিয়া, সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শাহী ঈদগাহ ময়দানে এবার হচ্ছে না ঈদের জামাত।
তবে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদুল আজহার পাঁচটি জামাত হবে। রাজশাহীতে প্রধান জামাত হবে সকাল সাড়ে ৭টায় মাদ্রাসা ময়দানসংলগ্ন হজরত শাহ্ মখদুম (র.) কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে।
খুলনায় টাউন জামে মসজিদে তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শাহী ঈদগাহ ময়দানে এবার হচ্ছে না ঈদের জামাত। হজরত শাহজালাল (রহ.) মাজার মসজিদে জামাত হবে সকাল ৮টায়।
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ১২ জুলাই জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুসরণ করে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব জামাতে অংশ নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। সবার মুখে মাস্কের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে এবং কোলাকুলি করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
এদিকে কোরবানির পশুর হাটগুলোতে শেষ মুহূর্তের বেচাকেনায় ব্যস্ত ক্রেতা-বিক্রেতারা। তবে দাম নিয়ে হতাশার সুর ক্রেতা-বিক্রেতা উভয় পক্ষেরই।
একদিকে বিক্রেতারা বলছেন- তারা শেষ সময়ে বিক্রির আশায় কম দামে পশু ছেড়ে দিচ্ছেন। আর বিক্রেতাদের বক্তব্য- শেষ সময়ে কিনতেই হবে এমন ভেবে বিক্রেতারা বেশি দাম হাঁকাচ্ছেন।
তবে বিপদে পড়েছেন রাজধানীর বিক্রেতারা। গরুর তুলনায় ক্রেতা কম। অনেকেই গরু বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন বলে খবর।