ব্রেকিং নিউজ
Home / Uncategorized / মুসলিম নারীদের বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়েছে ভারতীয় অ্যাপে

মুসলিম নারীদের বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়েছে ভারতীয় অ্যাপে

 

ভারতে গত রবিবার হুট করেই বেশ কিছু মুসলিম নারী জানতে পারেন, একটি অ্যাপে নিলামে বিক্রির জন্য তাদের নাম তোলা হয়েছে। রীতিমতো ছবিসহ প্রোফাইল তৈরি করে তাদের নিলামে বিক্রির বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপ করা তাদের ছবি ও অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে। সেখানে তাদের বিশেষায়িত করা হয়েছে ‘ডিলস অব দ্য ডে’ হিসেবে।

সুল্লি ডিলস নামের ওই অ্যাপটিতে যেসব নারীকে নিলামে তোলা হয়েছে তাদের সবাই মুসলিম এবং তারা অধিকারের বিষয়ে সোচ্চার। পেশাগত জীবনে তাদের প্রায় সবাই সাংবাদিক, অধিকারকর্মী, শিল্পী কিংবা গবেষক। অ্যাপটিতে গত কয়েক সপ্তাহে অন্তত ৮৩ জন মুসলিম নারীর ছবি দিয়ে তাদের ‘বিক্রির আয়োজন’ করা করা হয়।

সম্ভ্রান্ত মুসলিম নারীদের নামও বাদ পড়েনি সেখানে। এদেরই একজন পেশায় বাণিজ্যিক বিমানচালক হানা খান। সম্প্রতি স্বজন ও বন্ধুদের কাছে বিব্রতকর প্রশ্নের মুখোমুখি হন তিনি। তার কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চায় তারা। অথচ এ সম্পর্কে তার ন্যুনতম কোনও ধারণাই নেই।

পাইলট হানা খান বিবিসিকে বলেন, এক বন্ধু তাকে এ সংক্রান্ত একটি টুইট পাঠালে তিনি বিষয়টি সম্পর্কে সজাগ হন। ওই টুইটের মাধ্যমে জানতে পারেন, সুল্লি ডিলস নামের অ্যাপটিতে তাকে ‘ডিলস অব দ্য ডে’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। পরে অ্যাপটিতে ঢুকে তিনি তার মতো আরও অনেক মুসলিম নারীর ছবি দেখতে পান। এমন ৮৩টি পর্যন্ত নাম তিনি গণনা করতে পেরেছেন। তবে এর প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে।

হানা খানের বিশ্বাস, শুধু ধর্ম বিশ্বাসের জন্যই তাদের এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার হতে হয়েছে। পরে পুলিশে অভিযোগের পাশাপাশি এ ঘটনা উল্লেখ করে টুইট করেন তিনি। আরেক ভিকটিম দিল্লির সাংবাদিক ফাতিমা খান ২০২০ সালে দিল্লি দাঙ্গার অনেক খবর প্রকাশ্যে এনেছিলেন। তার ধারণা সে কারণেই তিনি লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন।

ভারতে মুসলিম নারীদের প্রতি অবমাননাকর গালি হিসেবে এই সুল্লি শব্দটি ব্যবহার করে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। আর এই অ্যাপেও তাদের জঘন্যভাবেই তুলে ধরা হয়েছে। যদিও এটি কোনও বাস্তব নিলাম ছিল না; তবে মুসলিম নারীদের সম্মানহানি করাই ছিল এর মূল উদ্দেশ্য। ঘটনার শিকার এক নারী বিবিসিকে বলেন, আপনি যত শক্তিশালী হোন না কেন; আপনার ছবি ও ব্যক্তিগত তথ্য যখন প্রকাশিত হয়ে পড়ে সেটি আপনাকে ভীত করে তুলবে।

পুলিশ জানিয়েছে, গত ৪ জুলাই অ্যাপে ওই মুসলিম নারীদের ছবি আপলোড করা হয়। অ্যাপটি হোস্ট করেছে গিটহাব নামের একটি ইন্টারনেট হোস্টিং প্রোভাইডার প্রতিষ্ঠান। ছবি আপলোড করা হয়েছে এমন কয়েকজন বিষয়টি নিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় সোচ্চার হলে পুরো বিষয়টি সামনে আসে। সূত্র: বিবিসি, দ্য ওয়াল।