কথায় আছে, প্রেম মানে না কোনো বাঁধা। প্রেমের কাছে জাতি-ধর্ম-বর্ণ সবকিছুই যেন তুচ্ছ। কালে-কালে ভালোবাসার টানে রাজপ্রাসাদও পায়ে ঠেলেছেন অনেকে। এবার প্রেমের টানে বাড়ি ছেড়ে ধর্মান্তরিত হয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েও শেষরক্ষা হলো না রাউজানের এক প্রেমিক যুগল অভি দাস ও মেহেরুন্নেছার।
বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) ভোরে প্রেমিকার মা জেসমিন আক্তারের অভিযোগের ভিত্তিতে রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল হারুনের পরিকল্পনায় উপপরিদর্শক অনুপম দাসের নেতৃত্বে থানা পুলিশের একটি চৌকস দল কক্সবাজার জেলার মহেশখালী থানার মাতারবাড়ি শায়ের দিল নামক দুর্গম এলাকা থেকে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।
অভিযোগ ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রাউজান পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের জামতল এলাকায় আবু হেনার ১৬ বছর বয়সী মেয়ে ও বিনাজুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী মেহেরুন্নেছা প্রেমের টানে একই বিদ্যালয়ের সহপাঠী একই ওয়ার্ডের মোবারক খীল জলদাস পাড়ার মনোরঞ্জন দাসের পুত্র অভি দাসের সাথে পালিয়ে যান। এই ঘটনায় প্রেমিকার মা জেসমিন আক্তার প্রেমিক ও প্রেমিকের বাবার বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ এনে রাউজান থানায় মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নাং-(১৪)২২/০৬/২০২১ইং। এই মামলায় ইতোপূর্বে গ্রেফতার হয়ে জামিনে এসেছেন প্রেমিকের বাবা মনোরঞ্জন। বৃহস্পতিবার সকালে থানা পুলিশ মহেশখালী হতে এই প্রেমিক জুটিকে আটক করেন।
থানায় আটক প্রেমিক অভি দাস জানান, নবম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত অবস্থায় তাদের মধ্যে প্রেমের সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ আড়াই ধরে চলমান এই প্রেমের সম্পর্ককে পারিবারিক ও ধর্মীয় বাঁধা ডিঙিয়ে বিবাহে রূপ দিতে গত জুন মাসের ১৩ তারিখ উভয়ের স্বেচ্ছায় বাড়ি হতে পালিয়ে গিয়ে চন্দনাইশে অবস্থান নেন। সেখান হতে বান্দরবানে গিয়ে কলেমা পড়ে ধর্মীয় রীতিতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন অভি দাস। আদালতে এফিডেভিটের মাধ্যমে নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় আয়াত ইসলাম। নাম পরিবর্তনের পর ইসলাম ধর্মের রীতিতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সেখানে হতে পুনরায় চন্দনাইশে ফিরে এসে ভাড়া বাসায় একদিন অবস্থানের পর মহেশখালীতে বন্ধুর বাড়িতে পালিয়ে যায়। সেখান হতে পুলিশ আটক করে।
প্রেমিকা মেহেরুন্নেছা বলেন, আমি আয়াতকে (অভি দাস) মনেপ্রাণে ভালবাসি। বাড়িতে আমার বিয়ের কথাবার্তা চললে আমি তাকে পালিয়ে বিয়ে করা প্রস্তাব দেয়। সে প্রস্তাবে রাজি হলে আমি স্বেচ্ছায় তার সাথে পালিয়ে যাই। আমাকে কেউ অপহরণ করেনি। আমরা একে-অপরে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি।
এই ব্যাপারে রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল হারুন বলেন, গত ১৪ জুলাই থানায় দশম শ্রেণীর এক ছাত্রী অপহরণের অভিযোগ আসে। অভিযোগ পাওয়ার পর ভিকটিমকে উদ্ধার করতে আমরা নানান পরিকল্পনা গ্রহণ করি। এবং সম্ভাব্য স্থানগুলোতে অভিযান পরিচালনা করি। প্রযুক্তির মাধ্যমে তাদের স্থান নিশ্চিত করে উপপরিদর্শক অনুপম দাসের নেতৃত্ব পুলিশের একটি দলকে মহেশখালী প্রেরণ করি। সেখানকার দূর্গম এলাকা হতে ভিকটিম ও অপহরণকারীকে আটক করা হয়। অপহরণকারীর ধর্মান্তরিত হওয়া ও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কোন প্রমাণ তার দেখাতে সক্ষম হয়নি। শুক্রবার ভিকটিম মেহেরুন্নেসা এবং আসামি অভি দাস কে বিধি মোতাবেক বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হবে। মামলাটি তদন্তনাধীন আছে।
London Bangla A Force for the community…
