আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনির সাথে ৯ জুন বোট ক্লাবে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন ব্যবসায়ী নাছির ইউ মাহমুদ। বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) জামিন লাভের পর শনিবার (৩ জুলাই) গণমাধ্যমের সাথে
খোলামেলা কথা বলেছেন তিনি। নাছির ইউ মাহমুদ বলেন, একজন সেলেব্রিটিই শুধু একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হতে পারে না। অভিনেতারা নাকি চোখে গ্লিসারিন লাগিয়ে কাঁদতে পারে। একজন সেলেব্রিটির অভিনয়ের কারণে আজ আমি সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছি। তিনি বলেন, বোট ক্লাবের ঘটনার ৫ দিন পর এক ঘন্টার ব্যবধানে বহু ক্যামেরা নিয়ে তিনি (পরিমনি) ঘটা করে সংবাদ সম্মেলন করলেন। প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্পর্শকাতর চিঠি দিলেন। পরিমনি অভিযোগ করলেন কোনো থানায় তিনি রেসপন্স পাননি! অথচ তিনি বনানী থানায় যখন অভি’লযোগ করতে যান, তখন তিনি মাতাল অবস্থায় ছিলেন। যা আপনারা সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে বিভিন্ন টেলিভিশনে দেখেছেন।
থানা থেকে তাকে বলা হলো আপনি সুস্থ হয়ে আগামীকাল অ’ভিযোগ দায়ের করেন। আপনি আর গেলেন না। আপনিতো ঘটনার আশেপাশের থা’না রূ’পনগর বা সাভা’র থা’নায়ও যেতে পারতেন। কেন যাননি? ঘটনার পাঁচদিনেও কোনো থা’না’য় অ’ভিযো’গ কেনো জানালেন না? থা’নাতো ব’ন্ধ ছিলো না। তাহলে পরিমনি কি করে বললো কোনো থা’না তাকে রে’সপ’ন্স করেনি? নাছির মাহমুদ বলেন, পরিমনি অ’ভিযো’গ করেছেন, তাকে নাকি আমি চে’ষ্টা করেছি! একটি মান’সম্ম’ত ক্লা’বে কখনই কোনো অ’নৈ’তিক কাজের সুযোগ নেই। অ’ভি’যো’গ করেছেন, আমি নাকি তাকে হ’ত্যা’র চে’ষ্টা করেছি! আমিতো তাকে এ ঘটনার আগে চিনতামই না। পরিমনি নিজেও বলেছে সে আমাকে আগে চিনতো না।
তার সাথেতো আমা’র পূর্বের কোনো শ’ত্রু’তাও ছিলো না। তবে তাকে কেনো আমি হ’ত্যা করতে যাবো? তিনি বলেন, আমি রা’জনীতি করি, সামাজিক ক’র্মকা’ণ্ডে জ’ড়িত। বিভিন্ন ক্লা’বে ‘জড়িত। আমি একজন ব্যবসায়ী। আমা’র দুঃখ একটা, সে অ’ভিযো’গ করেছে একা। অথচ, সেই সময়ে উপ’স্থিত ক্লাবের কর্মক’র্তা ও’ নি’রাপত্তায় নিয়োজিতরা কি বলেছে? তা সঠিকভাবে ত’দ’ন্ত হচ্ছে না। সেদিন কি হয়েছিলো জানতে চাইলে অ’ভিযু’ক্ত এই ব্যবসায়ী বলেন, আমি বোট ক্লা’বের ডিসি’প্লি’নের দা’য়িত্বে ছিলাম। ৯ জুন রাত সাড়ে বারোটায় পরিমনি কয়েকজনকে নিয়ে আসে। এসে ম’দপা’ন করতে থাকেন।
এতেও কেউ বাঁ’ধা দে’ননি। কিন্তু তিনি নিজ হাত দিয়ে র্যা’ক থেকে তিন লিটারের ব্লুলে’ভেল হু’ই’স্কির নিতে গেলে ক্লাবের ষ্টা’ফরা বাঁ’ধা প্রদা’ন করেন। এতেই ক্ষি’প্ত হয়ে ওঠেন পরিমনি। যা কোনো স’ভ্য মানুষের দ্বারা সম্ভব নয়। এই হু’ইস্কির দাম দেড় লাখ টাকা। আর এটা সদস্য ছাড়া বিক্রয়যোগ্য নয়। কর্মচারীরা এতে বাঁ’ধা প্রদান করার পরই টেবিলে থাকা গ্লা’স, প্লে’ট ভাং’চুর করতে থাকে। ষ্টাফরা বিষয়টি আমাকে জানালে আমি পরিমনিকে এটা নিতে নি’ষে’ধ করি। সঙ্গে সঙ্গে আক’স্মি’ক ভাবে তার সামনে থাকা প্লেট ও গ্লা’স আমা’র দিকে ‘উড়িয়ে মা’রে। প্রথমটা আমা’র শ’রী’রে না লাগলেও পরেরটি আমা’র ঘা’ড়ে লাগে। তখন আমি তাদের ক্লা’ব থেকে বের হয়ে যেতে বলে পরিমনির সাথে আসা জিমি আমা’র ঘাড়ে একটি ঘু’সি মে’রে বসে।
তখন ক্লাবের আরেক সদস্য শাহ আলম জিমিকে আ’ট’ক করে। মা’রামা’রি বাঁ’ধে জিমি ও শাহ আলমের মাঝে। তখন অন্যান্য সিকিউরিটিরা তাদের আলাদা করেন। তিনি বলেন, পরিমনিরা যাওয়ার সময়ও দুই বো’ত’ল ও’য়া’ইন নিয়ে যায়। পরেরদিন এটার বিল ৮৫ হাজার টাকা পরি’শো’ধ করেন অমি। আমি চাই সত্য উ’ম্মো’চিত হোক। আইনের প্রতি আমা’র বি’শ্বা’স আছে। তারা অবশ্যই সত্য বের করবে। পরিমনির অ’ভি’যো’গ প্রসঙ্গে ব্যবসায়ী নাছির বলেন, সে বলেছে আমি এক বো’ত’ল ম’দ খেয়েছি, পরে এক বো’ত’ল নাছির আমাকে জো’র করে খা’ইয়েছেন। এক বোতলে ২০ প্যাক মদ থাকে। পুরো এক বোতল খেয়ে কেউ সুস্থ থাকতে পারে না। তিনি আরো অ’ভিযোগ করেছেন আমি নাকি তাকে কফি খাওয়ার অফার করেছিলাম।
অথচ, কফিশপ বন্ধ হয়ে যায় সন্ধ্যা ৬টায়। তাছাড়া বারে কফি সার্ভ হয় না। একজন সেলেব্রিটি এমন মিথ্যাচার করতে পারেন যা সত্যিই বিস্ময়কর। তিনি বলেন, একজন সেলেব্রিটিই শুধু একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হতে পারে না। অভিনেতারা নাকি চোখে গ্লিসারিন লাগিয়ে কাঁদতে পারে। একজন সেলেব্রিটির অ’ভিনয়ের কারণে আজ আমি সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছি। আমরাওতো ফেলে দেয়ার মত নয়। সমাজে আমাদেরও অবস্থান রয়েছে। আমরা ব্যবসায়ীরা রাষ্ট্রে নিয়মিত কর দিয়ে থাকি। আমি ঢাবির একটি হলের নির্বাচিত জিএস ছিলাম। উত্তরা ক্লাবের মত একটি দাবি ক্লাবে তিনবার নির্বাচিত সভাপতি ছিলাম। ছিলাম জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়ার। আমাকে আ’টক করার পরও কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আমার বিরুদ্ধে কোনো অ’ভিযোগ করেননি।
সারাজীবন সততার সাথে চলেছি। কারো প্রতি অবিচার করিনি। কারো টাকা আত্মসাৎ করিনি। ব্যবসা করতে গিয়েও কারো সাথে কোনদিন বিরোধ সৃ’ষ্টি হয়নি। ক্লাবের সিসি ক্যামেরা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পৃথিবীর উন্নত দেশসহ কোনো দেশেই বারে সিসি ক্যামেরা থাকে না। কারণ, সমাজের উচ্চবিত্ত মানুষ যখন এসব ক্লাবে আসে তখন তারা চায়, এগুলো যাতে প্রকাশিত না হয়। প্রসঙ্গত, ১৩ জুন রাতে পরিমনি তার বনানী বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে অ’ভিযোগ করেন, ৯ জুন রাত ১২টার পর পরিচিত জনদের নিয়ে তিনি বোট ক্লাবে যান। সেদিন চারজন মদ্যপ ব্যক্তি তাকে শারীরিকভাবে নির্যাত’ন করে। চড়-থাপ্পড় মারে, গায়ে আঘাত করে। এক পর্যায়ে একজন তাকে নেশাদ্রব্য খাইয়ে ধর্ষণের চে’ষ্টাও করে। তার অ’ভিযো’গ উত্তরা বোট ক্লাবে’র সদস্য ও উত্তরা ক্লাবে’র সাবেক সভাপতি ও ব্যবসা’য়ী নাছির ইউ’ মাহমুদ তাকে হ’ত্যা’র চে’ষ্টাও করেন।