ইন্দোনেশিয়ার পাপুয়া প্রদেশে এক ম্যানগ্রোভ বনে কেবল মেয়েরাই প্রবেশ করতে পারেন এবং তাদের সেখানে নগ্ন হতে হয়। অবশ্য পুরষরাও ঢুকতে পারবেন। কিন্তু আগে নিশ্চিত করতে হবে যে সেখানে কোনো নারীর উপস্থিতি আছে কিনা। যদি না থাকে তাহলেই কেবল পারবেন, অন্যথায় নয়।
আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বনটির নাম টোনোটিওয়াট বা ফিমেল ফরেস্ট বা নারীদের অরণ্য, অর্থ ‘ম্যানগ্রোভে স্বাগত’ও হতে পারে। অঞ্চলটির বাসিন্দারা সেখান থেকে ঝিনুক এবং নানারকম ফল সংগ্রহ করে থাকেন। এই কাজটি করেন নারীরা।
প্রদেশের রাজধানী জয়পুরার ক্যামপাং এনগ্রোসের মাঝামাঝি ওই ম্যানগ্রোভ বন প্রায় ৮ হেক্টর এলাকা জুড়ে অবস্থিত। যদি কোনো নারী না থাকে, তখনই কেবল পুরুষরা অরণ্যে কাঠ সংগ্রহের জন্য প্রবেশ করেন। এর ব্যতিক্রম ঘটলে ওই পুরুষকে উপজাতি আদালতে তুলে শাস্তির মুখোমুখি করা হয়। দিতে হয় জরিমানাও। যার পরিমাণ স্থানীয় মূদ্রায় ১০ লক্ষ রুপাইয়া।
বনে প্রবেশ করার ক্ষেত্রে নারীদের কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। এর মধ্যে অন্যতম হলো সম্পূর্ণ নিরাবরণ হওয়া। অর্থাৎ অরণ্যে প্রবেশের পরপরই নগ্ন হতে হয়। কেউ সেখানে একা ঘুরতে পারবে না, সবাইকে দলবেঁধে চলতে হবে। বনে ঢোকার পরপরই শপথ নিতে হবে যে কেউ কাউকে ছেড়ে যাবে না।
কবে থেকে নিয়ম চালু হয়েছে তা কেউ না জানলেও স্থানীয়রা বলছেন, মা-দাদিদের কাছ থেকেও তারা এই কাহিনী শুনে আসছেন। ১৮০৮ সাল থেকে অরণ্যের সঙ্গে তাদের সখ্যতা। অবশ্য তা প্রচলিত কাহিনীতে বলা আছে।
৪৫ বছর বয়সী স্থানীয় নারী আগস্টিনা আইও জানান, এখানে তারা চিৎকার করে নিজেদের মনের সুখ-দুঃখসহ সব কথা অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন। একে অপরের কাছে পরামর্শ ও ভালো থাকার উপায়ও বলেন।
ভাটার সময় ‘কোলে কোলে’ নামের কাঠের নৌকায় চেপে বেরিয়ে সারাদিন জঙ্গলেই কাঁটান নারীরা। সঙ্গে দুপুরের খাবার নিয়ে যান। ঝিনুক সংগ্রহ করে দিনশেষে বাড়ি ফেরেন তারা। অরণ্যে থাকাকালীন গলা ছেড়ে গান করেন, যেন পুরুষরা ভুলেও সেখানে না ঢুকে।