সংগীতশিল্পী মাইনুল আহসান নোবেলের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক ইথুন বাবু। নোবেলের বিরুদ্ধে গতকাল সোমবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে এ মামলা করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮–এর ২৫ (২) ২৯ ধারায় নোবেলের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়েছে।
ভারতের জি বাংলার সারেগামাপা দিয়ে আলোচনায় আসা তরুণ এই সংগীতশিল্পী ফেসবুকে নানা বিতর্কিত পোস্ট দিয়ে সমালোচিত হচ্ছিলেন। বিশেষ করে দেশের জ্যেষ্ঠ সংগীতশিল্পীদের নিয়ে নোবেল বাজে মন্তব্য করে বিতর্কের জন্ম দেন। ইথুন বাবুকে নিয়ে তিনি ফেসবুকে পোস্ট দেন। সেই সূত্র ধরে তাঁর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়।
ইথুন বাবু জানান, আগামী বৃহস্পতিবার এ মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। মামলা দায়েরের সপ্তাহখানেক আগে ইথুন বাবু ঢাকার হাতিরঝিল থানায় নোবেলের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। তখনই তিনি জানিয়েছিলেন, খুব শিগগির নোবেলের বিরুদ্ধে মামলা করবেন তিনি।
সম্প্রতি নিজের ফেসবুক পেজ ‘নোবেল ম্যান’ থেকে দেওয়া এক পোস্টে নোবেল ইথুন বাবুকে চোর বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি ওই পোস্টে লিখেছেন, ‘ইথুন বাবু একটা চোর। অন্যের গান নিজের নামে চালায় দিসে।’
এরপরই নোবেলের বিরুদ্ধে জিডি করেন ইথুন বাবু। ওই ফেসবুক পোস্টে নোবেল তাঁর মানহানি করেছেন বলেও জিডিতে উল্লেখ করেন বাবু। রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় দায়ের করা জিডি নম্বর ৮৯৯।
ইথুন বাবু বলেন, ‘সংগীতাঙ্গনে আমার দীর্ঘ জীবনের পথচলা। গুণীদের সঙ্গে যেমন কাজ করেছি, তেমনি তরুণদের সঙ্গেও কাজ করেছি। এই দীর্ঘ সময়ের সংগীতজীবনে কেউ কোনো দিন এমন কথা বলতে পারেনি। নোবেল আমাকে সে ধরনের কথা বলেছে! আমি নাকি চোর! আমার মেয়ে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ালেখা শেষ করেছে। ছেলে এমবিএ করছে। পরিবারের কাছে, আমার কর্মক্ষেত্রে এবং সর্বোপরি দেশের মানুষের কাছে এভাবে নোবেল আমার সম্মানহানি করবে, তা মেনে নিতে পারি না।’
ইথুন বাবু আরও বলেন, ‘শ্রোতা-ভক্তসহ সারা দেশে সংগীত এবং সংগীতের বাইরে আমার অসংখ্য বন্ধু-শুভাকাঙ্ক্ষী আছেন। নোবেলের পোস্টের কারণে সবার কাছে আমার সম্মানহানি হয়েছে। তাই আমি এর সুষ্ঠু বিচারের জন্য আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আমি জিডি করার সময় পুলিশ কর্মকর্তাদেরও অনুরোধ করেছি, এর পেছনে কোনো ষড়যন্ত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য। নিশ্চয়ই কারও উসকানি আছে। নয়তো এমন সাহস নোবেল কোথায় পেল!’
ইথুন বাবুর ভাষ্য, ‘শিল্প-সংস্কৃতি অঙ্গন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর জায়গা নয়। যখন যা খুশি করব, যাকে খুশি তাঁকে যা-তা বলে ফেলব! এটা হতে দেওয়া যায় না। বেয়াদবির জায়গা সংস্কৃতি অঙ্গন হতে পারে না। তাই আমি তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছি।’
জানা গেছে, গায়ক নোবেলের বিরুদ্ধে আরও একাধিক মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ইথুন বাবু।
এদিকে নোবেলকে নিয়ে বিনোদন সাংবাদিক আল কাছিরের তৈরি প্রতিবেদন সময় নিউজে প্রকাশিত হওয়ার পর ক্ষুব্ধ হয়ে ওই সাংবাদিককে বাসা থেকে তুলে নেওয়ার হুমকি দেন নোবেল। হুমকি দেওয়ার অভিযোগে ১৭ মে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। সেদিন বেলা সাড়ে তিনটায় সময় মিডিয়া লিমিটেডের প্রশাসন ও পরিচালন বিভাগের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী সৈয়দ আসাদুজ্জামান ঢাকার কলাবাগান থানায় নোবেলের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করেন। সেদিন সাধারণ ডায়েরি হওয়ার পর নোবেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘কিসের জিডি হইছে? ও জিডি-মিডি দেহে নেব নে।’